ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

জাওয়াদের বৃষ্টিতে পুড়েছে আলু চাষিদের কপাল!

মিঠুন মাহমুদ:
  • আপলোড টাইম : ০৩:৩৯:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৪৩ বার পড়া হয়েছে

দেশের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল হিসেবে খ্যাত চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার কৃষকদের চোখে এখন কষ্টের পানি। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলায় আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলায় ২ হাজার আলু চাষী এখন বিপদগ্রস্ত। টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। চাষিরা বলছেন গত ১০দিনের মধ্যে যারা আলুর বীজ রোপন করেছিলেন তারা বেশ ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন। ইতোমধ্যেই আলুর জমিতে পানি জমে থাকায় আলুর বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। আবার অনেক চাষির জমিতে আলুর চারা গজিয়ে গেছে সেগুলোতে পানি জমে থাকায় গাছ মারা যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জীবননগর উপজেলার বৈদ্যনাথপুর, বাকা, কাটাপোলসহ বেশ কিছু এলাকার মাঠে আলুর জমিতে পানি বেধে থাকায় সমস্ত গাছ মারা যাচ্ছে এবং আলুর বীজ মাটির নিচে পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা কৃষক পরিবারের সন্তান কৃষিই আমাদের মূল আয়ের উৎস্য। এবার ৫ বিঘা জমিতে আলু রোপন করেছিলাম কিন্তু টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকায় আমার সমস্থ আলুর চারা নষ্ট হয়ে গেছে। আমি সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি।’

একই আক্ষেপ কৃষক শাহিন কবিরের। তিনি বলেন, ‘আমি এবার এনজিও থেকে লোন নিয়ে ৭বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি, কিন্তু বৃষ্টির কারণে আমার ৫বিঘা জমির আলুর চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এবার লোন পরিশোধ দিবো কি করে? তা ভেবে পাচ্ছি না। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তাহলে আমরা একেবারে শেষ হয়ে যাব।’

জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার ১ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলু রোপন করা হয়েছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে প্রায় ৬শ হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হয়েছে। উপজেলার অনেক আলু চাষি বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে চাষাবাদ করছে। বৃষ্টির পানিতে আলুর চারা নষ্ট হওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এমনকি লোন শোধ দেওয়া নিয়ে চিন্তাই পড়ে গেছেন।’

জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, ‘অসময়ে বৃষ্টির কারণে জীবননগর উপজেলায় আলু চাষিদের ক্ষতি হয়েছে। যে সকল জমিতে আলুর গাছ বা লতাপাতা গজিয়েছে সেই জমিগুলোতে ক্ষতি হওয়ার পরিমাণ কম। আর যেসব জমিতে ১ সপ্তাহের মধ্যে বীজ লাগিয়েছে তাদের ক্ষতির পরিমান বেশি। এছাড়াও তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য আমাদের কৃষি অফিসের কর্মীরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জাওয়াদের বৃষ্টিতে পুড়েছে আলু চাষিদের কপাল!

আপলোড টাইম : ০৩:৩৯:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১

দেশের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল হিসেবে খ্যাত চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার কৃষকদের চোখে এখন কষ্টের পানি। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলায় আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলায় ২ হাজার আলু চাষী এখন বিপদগ্রস্ত। টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। চাষিরা বলছেন গত ১০দিনের মধ্যে যারা আলুর বীজ রোপন করেছিলেন তারা বেশ ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন। ইতোমধ্যেই আলুর জমিতে পানি জমে থাকায় আলুর বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। আবার অনেক চাষির জমিতে আলুর চারা গজিয়ে গেছে সেগুলোতে পানি জমে থাকায় গাছ মারা যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জীবননগর উপজেলার বৈদ্যনাথপুর, বাকা, কাটাপোলসহ বেশ কিছু এলাকার মাঠে আলুর জমিতে পানি বেধে থাকায় সমস্ত গাছ মারা যাচ্ছে এবং আলুর বীজ মাটির নিচে পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা কৃষক পরিবারের সন্তান কৃষিই আমাদের মূল আয়ের উৎস্য। এবার ৫ বিঘা জমিতে আলু রোপন করেছিলাম কিন্তু টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকায় আমার সমস্থ আলুর চারা নষ্ট হয়ে গেছে। আমি সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি।’

একই আক্ষেপ কৃষক শাহিন কবিরের। তিনি বলেন, ‘আমি এবার এনজিও থেকে লোন নিয়ে ৭বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি, কিন্তু বৃষ্টির কারণে আমার ৫বিঘা জমির আলুর চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এবার লোন পরিশোধ দিবো কি করে? তা ভেবে পাচ্ছি না। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তাহলে আমরা একেবারে শেষ হয়ে যাব।’

জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার ১ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলু রোপন করা হয়েছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে প্রায় ৬শ হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হয়েছে। উপজেলার অনেক আলু চাষি বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে চাষাবাদ করছে। বৃষ্টির পানিতে আলুর চারা নষ্ট হওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এমনকি লোন শোধ দেওয়া নিয়ে চিন্তাই পড়ে গেছেন।’

জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, ‘অসময়ে বৃষ্টির কারণে জীবননগর উপজেলায় আলু চাষিদের ক্ষতি হয়েছে। যে সকল জমিতে আলুর গাছ বা লতাপাতা গজিয়েছে সেই জমিগুলোতে ক্ষতি হওয়ার পরিমাণ কম। আর যেসব জমিতে ১ সপ্তাহের মধ্যে বীজ লাগিয়েছে তাদের ক্ষতির পরিমান বেশি। এছাড়াও তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য আমাদের কৃষি অফিসের কর্মীরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন।’