ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় ফলজ বৃক্ষরোপণ ও মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২
  • / ৩৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশন নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের দীননাথপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং প্রাঙ্গনে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও ছাত্রদের মধ্যে ফলজ বৃক্ষ প্রদান করা হয়। চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলিফ হোসেনের সভাপতিত্বে এ বৃক্ষরোপণ ও ফলজ বৃক্ষ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফ বলেন, কবি মোতাহের হোসেন চৌধুরী তার এক প্রবন্ধে বলেছেন বৃক্ষ আমাদের নীরব ভাষায় জীবনের সার্থকতার গান শোনায়, যা তার প্রাপ্তি তাই তার। আজকে একটা গাছ রোপণ করা হলো, তোমরা যেমন শিশু বয়সে জন্মগ্রহণ করো। তারপর আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠো। বড় হও, লেখাপড়া শেখো। বৃক্ষরোপণও করা হয়, তারপর সে বেড়ে ওঠে। তারপরে সে ফলে-ফুলে নিজেকে সমৃদ্ধ করে। নিজেকে বড় করে তোলে। আমরা সবাই ফুল ভালোবাসি। আমাদের একজন কবি বলেছেন, যদি দুটো পয়সা জোটে, একটা পয়সা দিয়ে খাবার কিনো, আরেকটা পয়সা দিয়ে ফুল কিনো। ফুল হলে গাছটি সৌরভ দেয়। ফল হলে খাবার দেয়। গাছটি বড় হওয়ায় তার সন্তান আসে। সেটাই ফল এবং ফুল। এখন ভেবে দেখো, আমার সন্তানকে কেউ কেড়ে নিতে চাই, আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইলে, আমি কি সেই সন্তান দেবো? আমার প্রাণের থেকেও সে প্রিয়। কিন্তু বৃক্ষ যখন বড় হচ্ছে সে নীরবে কোনো কথা না বলে, তার সন্তানটিকে আমাদের কাছে দিয়ে দিচ্ছে। জীবনকে শান্ত করতে হলে পরের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে। পরের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া মানে আমার জীবনের সবকিছু দান করে দেওয়া নয়। বৃক্ষের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ জীবনকে নদীর সাথে তুলনা করেছেন। মোতাহের হোসেন চৌধুরী বৃক্ষের সাথে তুলনা করেছেন। গঙ্গা নদী সেই মান সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে সাগরে যেয়ে মিশছে। আমাদের দেশের নদীগুলো বঙ্গোপসাগরের সাথে মিশছে। নদী অন্যের মধ্যে বিলিন হয়ে তার অস্তিত্বকে হারিয়ে ফেলেছে। সাগরে যেয়ে তার আর নিজের নাম থাকল না। কিন্তু বৃক্ষ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে। জীবনে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা হলো, ওই বৃক্ষের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া। শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগড়। আর বৃক্ষের মতো মাথা উঁচু করে শতভাগ সততার সাথে জীবনযাপন করতে হবে।

এসময় তিনি চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শহরের মানুষের কথা শোনার অনেক লোক আছে। প্রত্যান্ত অঞ্চলে মানুষের কথা শোনার লোক খুব কম। চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশন এখানে এসে এ রকম সুন্দর একটি ফলজ বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষ প্রদানের আয়োজন করছে। এটা বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়। তাদেরকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানায়।

চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মেহেরাব্বিন সানভীর পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীননাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ওমর ফারুক, দীননাথপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা শফিকুর রহমান, শিক্ষক মাওলানা আজগর আলী, মাওলানা মনিরুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হাদিয়ুজামান প্রান্ত, রমজান আলী, আশিক জোয়াদ্দার প্রমুখ। পরে মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে বিনামূল্যে ফলজ বৃক্ষ প্রদান করা হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় ফলজ বৃক্ষরোপণ ও মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ

আপলোড টাইম : ১১:০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশন নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের দীননাথপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং প্রাঙ্গনে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও ছাত্রদের মধ্যে ফলজ বৃক্ষ প্রদান করা হয়। চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলিফ হোসেনের সভাপতিত্বে এ বৃক্ষরোপণ ও ফলজ বৃক্ষ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফ বলেন, কবি মোতাহের হোসেন চৌধুরী তার এক প্রবন্ধে বলেছেন বৃক্ষ আমাদের নীরব ভাষায় জীবনের সার্থকতার গান শোনায়, যা তার প্রাপ্তি তাই তার। আজকে একটা গাছ রোপণ করা হলো, তোমরা যেমন শিশু বয়সে জন্মগ্রহণ করো। তারপর আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠো। বড় হও, লেখাপড়া শেখো। বৃক্ষরোপণও করা হয়, তারপর সে বেড়ে ওঠে। তারপরে সে ফলে-ফুলে নিজেকে সমৃদ্ধ করে। নিজেকে বড় করে তোলে। আমরা সবাই ফুল ভালোবাসি। আমাদের একজন কবি বলেছেন, যদি দুটো পয়সা জোটে, একটা পয়সা দিয়ে খাবার কিনো, আরেকটা পয়সা দিয়ে ফুল কিনো। ফুল হলে গাছটি সৌরভ দেয়। ফল হলে খাবার দেয়। গাছটি বড় হওয়ায় তার সন্তান আসে। সেটাই ফল এবং ফুল। এখন ভেবে দেখো, আমার সন্তানকে কেউ কেড়ে নিতে চাই, আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইলে, আমি কি সেই সন্তান দেবো? আমার প্রাণের থেকেও সে প্রিয়। কিন্তু বৃক্ষ যখন বড় হচ্ছে সে নীরবে কোনো কথা না বলে, তার সন্তানটিকে আমাদের কাছে দিয়ে দিচ্ছে। জীবনকে শান্ত করতে হলে পরের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে। পরের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া মানে আমার জীবনের সবকিছু দান করে দেওয়া নয়। বৃক্ষের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ জীবনকে নদীর সাথে তুলনা করেছেন। মোতাহের হোসেন চৌধুরী বৃক্ষের সাথে তুলনা করেছেন। গঙ্গা নদী সেই মান সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে সাগরে যেয়ে মিশছে। আমাদের দেশের নদীগুলো বঙ্গোপসাগরের সাথে মিশছে। নদী অন্যের মধ্যে বিলিন হয়ে তার অস্তিত্বকে হারিয়ে ফেলেছে। সাগরে যেয়ে তার আর নিজের নাম থাকল না। কিন্তু বৃক্ষ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে। জীবনে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা হলো, ওই বৃক্ষের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া। শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগড়। আর বৃক্ষের মতো মাথা উঁচু করে শতভাগ সততার সাথে জীবনযাপন করতে হবে।

এসময় তিনি চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শহরের মানুষের কথা শোনার অনেক লোক আছে। প্রত্যান্ত অঞ্চলে মানুষের কথা শোনার লোক খুব কম। চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশন এখানে এসে এ রকম সুন্দর একটি ফলজ বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষ প্রদানের আয়োজন করছে। এটা বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়। তাদেরকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানায়।

চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মেহেরাব্বিন সানভীর পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীননাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ওমর ফারুক, দীননাথপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা শফিকুর রহমান, শিক্ষক মাওলানা আজগর আলী, মাওলানা মনিরুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা ফাউন্ডেশনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হাদিয়ুজামান প্রান্ত, রমজান আলী, আশিক জোয়াদ্দার প্রমুখ। পরে মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে বিনামূল্যে ফলজ বৃক্ষ প্রদান করা হয়।