ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় চারজন ‘স্বপ্নজয়ী মা’ বিশেষ সম্মানে ভূষিত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:৫৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ মে ২০২২
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক মা দিবসে চুয়াডাঙ্গার চারজন ‘স্বপ্নজয়ী মা’ বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান জেলার চারজন গুণী মায়ের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। এসময় তিনি বলেন, জগতের সকল মা’ই স্বপ্নজয়ী। এদের মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় যে চারজন মাকে আজ সম্মানিত করা হচ্ছে, এ মায়েরা অবশ্যই অনূকরণীয়। অনুকরণীয় মাসহ সকল মাকেই মা দিবসে সশ্রদ্ধ সালাম। প্রাণঢালা ভালোবাসা।

চুয়াডাঙ্গার যে চারজন মাকে স্বপ্নজয়ী মা হিসেবে নির্বাচিত করে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে, এদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পুরাতন হাসপাতালপাড়ার সাহানারা বেগম। তিনি সুলতান আহম্মেদের স্ত্রী। এ দম্পতির ৩ কন্যার মধ্যে দুজন চিকিৎসক। একজন অডিট অফিসার। তিন জামাতার মধ্যে দুজন ডাক্তার। একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। স্বপ্নজয়ী মা চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গার মমতাজ বেগম। তিনি মো. আলতাফ হোসেনের স্ত্রী। এ দম্পতির ৮ সন্তানের মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত ৭ জন। এদের একজন অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৃত্তিপ্রাপ্ত, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক, একজন জনতা ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, একজন রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিকেলের চিফ ইনস্ট্রাক্টর, একজন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক, একজন দামুহুদা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও একজন কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। জীবননগর উপজেলার হাসপাতালপাড়ার নাজমা বেগমকে স্বপ্নজয়ী মা হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছে। তিনি নূরুল ইসলামের স্ত্রী। এ দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে। দুজনই সুপ্রতিষ্ঠিত। ছেলে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাসে পড়ে জার্মানীতে পিএসডি করছেন। মেয়ে ঢাকা বদরুন্নেছা কলেজে বাংলায় অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। অপরজন স্বপ্ন জয়ী মা ঝর্ণা রাণী বিশ^াস। তিনি আলমডাঙ্গা থানাপাড়ার কুমারেশ বিশ^াসের স্ত্রী। এ দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলার জেলা প্রশাসক। মেয়ে লাবনী বিশ^াস নাটোরে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক।

সম্মাননা গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন ঝর্ণা রাণী বিশ^াসের পক্ষে তাঁর মেয়ে লাবনী বিশ^াস। তিনি বলেন, চরম প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ করে আমাদের মা আমাদের দু ভাই-বোনকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছে। মায়ের যে সংগ্রাম ছিল, তা বর্ণনা করাও কঠিন। স্বপ্নজয়ী মায়েদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাহানারা বেগম ও মোছা. মমতাজ বেগম। দুজনই অভিন্ন ভাষায় বলেন, সন্তানদের বড় করে তুলতে হলে সত্যিই সংগ্রাম করতে হয়। ওদের সাথে সাথে নিজেদেরও অনেক কিছুই করতে হয়। পিতা অর্থের যোগান দিলেও মাকেই দিন-রাত সমানে সন্তানদের বড় করে তুলতে অবর্ণনীয় পরিশ্রম করতে হয়। সন্তানকেও হতে হয়, মায়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সচেষ্ট।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে মা দিবসের আলোচনা এ সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, সরকারি মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম ইস্রাফিল ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান। স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কর্মকর্তা। উপস্থাপন করেন প্রশিক্ষক। বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার কাকলী, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র রত্মা বেগম, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী মিলি প্রমুখ। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আছিয়া বেগম।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় চারজন ‘স্বপ্নজয়ী মা’ বিশেষ সম্মানে ভূষিত

আপলোড টাইম : ০২:৫৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ মে ২০২২

আন্তর্জাতিক মা দিবসে চুয়াডাঙ্গার চারজন ‘স্বপ্নজয়ী মা’ বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান জেলার চারজন গুণী মায়ের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। এসময় তিনি বলেন, জগতের সকল মা’ই স্বপ্নজয়ী। এদের মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় যে চারজন মাকে আজ সম্মানিত করা হচ্ছে, এ মায়েরা অবশ্যই অনূকরণীয়। অনুকরণীয় মাসহ সকল মাকেই মা দিবসে সশ্রদ্ধ সালাম। প্রাণঢালা ভালোবাসা।

চুয়াডাঙ্গার যে চারজন মাকে স্বপ্নজয়ী মা হিসেবে নির্বাচিত করে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে, এদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পুরাতন হাসপাতালপাড়ার সাহানারা বেগম। তিনি সুলতান আহম্মেদের স্ত্রী। এ দম্পতির ৩ কন্যার মধ্যে দুজন চিকিৎসক। একজন অডিট অফিসার। তিন জামাতার মধ্যে দুজন ডাক্তার। একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। স্বপ্নজয়ী মা চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গার মমতাজ বেগম। তিনি মো. আলতাফ হোসেনের স্ত্রী। এ দম্পতির ৮ সন্তানের মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত ৭ জন। এদের একজন অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৃত্তিপ্রাপ্ত, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক, একজন জনতা ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, একজন রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিকেলের চিফ ইনস্ট্রাক্টর, একজন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক, একজন দামুহুদা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও একজন কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। জীবননগর উপজেলার হাসপাতালপাড়ার নাজমা বেগমকে স্বপ্নজয়ী মা হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছে। তিনি নূরুল ইসলামের স্ত্রী। এ দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে। দুজনই সুপ্রতিষ্ঠিত। ছেলে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাসে পড়ে জার্মানীতে পিএসডি করছেন। মেয়ে ঢাকা বদরুন্নেছা কলেজে বাংলায় অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। অপরজন স্বপ্ন জয়ী মা ঝর্ণা রাণী বিশ^াস। তিনি আলমডাঙ্গা থানাপাড়ার কুমারেশ বিশ^াসের স্ত্রী। এ দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে প্রতাপ চন্দ্র বিশ^াস বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলার জেলা প্রশাসক। মেয়ে লাবনী বিশ^াস নাটোরে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক।

সম্মাননা গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন ঝর্ণা রাণী বিশ^াসের পক্ষে তাঁর মেয়ে লাবনী বিশ^াস। তিনি বলেন, চরম প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ করে আমাদের মা আমাদের দু ভাই-বোনকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছে। মায়ের যে সংগ্রাম ছিল, তা বর্ণনা করাও কঠিন। স্বপ্নজয়ী মায়েদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাহানারা বেগম ও মোছা. মমতাজ বেগম। দুজনই অভিন্ন ভাষায় বলেন, সন্তানদের বড় করে তুলতে হলে সত্যিই সংগ্রাম করতে হয়। ওদের সাথে সাথে নিজেদেরও অনেক কিছুই করতে হয়। পিতা অর্থের যোগান দিলেও মাকেই দিন-রাত সমানে সন্তানদের বড় করে তুলতে অবর্ণনীয় পরিশ্রম করতে হয়। সন্তানকেও হতে হয়, মায়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সচেষ্ট।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে মা দিবসের আলোচনা এ সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, সরকারি মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম ইস্রাফিল ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান। স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কর্মকর্তা। উপস্থাপন করেন প্রশিক্ষক। বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার কাকলী, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র রত্মা বেগম, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী মিলি প্রমুখ। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আছিয়া বেগম।