চুয়াডাঙ্গায় কর্মকর্তা ও সুধীজনের সাথে মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী
- আপলোড টাইম : ১০:৫৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ অক্টোবর ২০২২
- / ২১ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ প্রতিবেদন: চুয়াডাঙ্গা জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সুধীজনের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনৈতিকতা পরিহার করে দেশের অগ্রযাত্রা তরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, সোনার দেশ গড়তে হলে অবশ্যই প্রয়োজন সুনাগরিক। এ জন্য যেমন দরকার সুশিক্ষা, তেমনই দরকার সুচিকিৎসা, সুসম খাদ্যসহ সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার সুষ্ঠু পরিবেশ। সরকার এ লক্ষে কাজ করছে। আমরা সম্মিলিতভাবে স্বচ্ছ্বতার সাথে কর্তব্য পালন করলে লক্ষপূরণ সম্ভব।
চুয়াডাঙ্গার বহুমুখী উন্নয়ন সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশকে কাক্সিক্ষত লক্ষে নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে যা যা প্রয়োজন, তার সবই করছেন। আমরা যে যেখানে যে দায়িত্বে রয়েছি, তারা নিজেদের বদলে নিয়ে দেশের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারলে আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হবো। বিশ^ বাজার ব্যবস্থা অস্থির। আমাদের দেশে এখনও অতটা বিরূপ প্রভাব না পড়লেও আশঙ্কা অমূলক নয়। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ইতঃমধ্যেই বলেছেন, আবাদ বাড়াতে হবে। পতিত জমিও আবাদের আওতায় নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সাথে আবাদি জমি যাতে হ্রাস না পায়, সে লক্ষে পরিকল্পিতভাবে বহুতলা ভবন নির্মাণ করে বসবাস করার দিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সরকারিভাবে ভবন নির্মাণে সহযোগিতার বিষয়েও প্রস্তাবনা আকারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাবনা পেশ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গা গরু ও ছাগল পালনের জন্য খুবই উপযোগী এলাকা। এখানে ছোট-বড় খামার গড়ে তোলার লক্ষে বিশেষভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। মাছ উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। বিল-বাওড়ের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে মাছ উৎপাদন বাড়তে হবে। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে পারলে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় কমবে। ওই অর্থে আমরা দেশের বড় বড় উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে পারব। আমরা পারি। পদ্মাসেতু নির্মাণ তার দৃষ্টান্ত উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বিশ^কে দেখিয়েছি। পদ্মাসেতুর কারণে দক্ষিণবঙ্গের চিত্র দ্রুত বদলে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকার দূরুত্ব আরও কমানোর নকশা করে তা বাস্তবায়নে আমাদের সকলকে আন্তরিক হতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. আব্দল্লাহ আল মামুন। উপস্থিত থেকে অভিমত উপস্থাপন করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাত হোসেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের চুয়াডাঙ্গা নির্বাহী প্রকৌশলী, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের চুয়াডাঙ্গা উপ-পরিচালক বিভাষ চন্দ্র সাহা, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল করিম. বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার অরিন্দম সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম মালিক, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, প্রথম আলো প্রতিনিধি শাহ আলম সনি প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় চুয়াডাঙ্গায় চিত্ত বিনোদন কেন্দ্র, কৃষি বিশ^বিদ্যালয়, স্থানীয় প্রজাতির কালো ছাগল গবেষণা কেন্দ্র, মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বাইপাস সড়ক নির্মাণসহ বেশকিছু উন্নয়নমূলক কাজ করার প্রস্তাবনা উঠে আসে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে বড় ধরণের ক্ষয়-ক্ষতি না হওয়ায় শুকরিয়া আদায় করে বলেন, পূর্বাভাসের পর সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। এরপরও যে ক্ষতি হয়েছে, তা দ্রুত কাটিয়ে ওঠার লক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মতবিনিময় সভা শেষে সরকারি অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এ চেক প্রদান করেন।