ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় উদীচীর বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব অনুষ্ঠিত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৩৫:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাঁঠাল শুধু আমাদের জাতীয় ফলই নয়, খুবই পুষ্টিকর ও ভেষজগুণ সমৃদ্ধ, সুলভ ও উপকারী ফল। এর কাণ্ড, শাখা, পাতা, শেকড় কোনো কিছুই বাদ দেওয়ার মতো নয়। কিন্তু ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা কাঁঠাল খেতে আগ্রহী নয়, বরং তাদের মধ্যে বিরুপ মনোভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদা না থাকায় মূল্য হ্রাস পাচ্ছে ফলে কাঁঠাল গাছ উজাড় হচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঙালী সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের এই জাতীয় ফল কাঁঠাল। এবারে চতুর্থ বারের মতো ভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদ। উদীচী চুয়াডাঙ্গার আয়োজনে গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব-২০২২। এবারের আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল দৈনিক সময়ের সমীকরণ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা উদীচীর সভাপতি হাবিবি জহির রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর রেজাউল করিম, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, সরকারি শেখ হাসিনা কলেজের অধ্যাপক হাফিজ উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, এনএসআই-এর উপ-পরিচালক জিএম জামিল সিদ্দিক, সরকারি বিএম কলেজের সাবেক অধ্যাপক জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি কোরবান আলী মণ্ডল ও  জেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি।

জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব-২০২২ এর সদস্যসচিব সাংবাদিক মেহেরাব্বিন সানভীর প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আদিল হোসেন ও জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব-২০২২ এর আহ্বায়ক শেখ আসমা চুমকি। কাঁঠালের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজল মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে উদীচীর শিল্পীরা জাতীয় ফল কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তৈরি গান, কাঁঠাল কথন, কবিতা আবৃত্তি, লোকগান ও কাঁঠাল রঙ্গ পরিবেশন করেন। কাঁঠাল ভক্ষণ প্রতিযোগিতায় মাত্র ২ মিনিটে ৫৯টি কোয়া খেয়ে ১ম স্থান অধিকার করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের কর্মচারী বিলকিস খাতুন। একই সময়ে ৪৯টি কোয়া খেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন এনএসআই-এর ফিল্ড অফিসার মো. নয়ন ও ৪৬টি কোয়া খেয়ে ৩য় স্থান অধিকার করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্র আফিফ রহমান। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়াও, জেলার শ্রেষ্ঠ কাঁঠাল চাষী বোয়ালিয়া গ্রামের তোক্কেল আলীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

আলোচনা পর্বে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ বলেন, কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। কাঁঠাল পাকলে কোষ খাওয়া হয়। এ কোষ নিংড়ে রস বের করেও খাওয়া যায়। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে খাওয়ার ধরণ পরিবর্তন করা দরকার। থাইল্যান্ডে কাঁঠালের চিপস তৈরি করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে কাঁঠাল জনপ্রিয় করার বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুকিয়ে সংরক্ষণের পাশাপাশি স্যুপ, চিপস, রস (জুস), আইসক্রিম ইত্যাদি খাবার তৈরিতেও কাঁঠাল ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে না যায় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কাঁঠাল শুধু সুস্বাদু খাদ্য না, আমাদের সভ্যতা-সংস্কৃতির অংশ। যারা ব্যবসায়ী আছেন, তারা পশ্চিমা দেশগুলোর মতো কাঁঠাল নিয়ে নানা রকম ব্যবসা করতে পারেন। উদীচীর এ ধরণের আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, উদীচীর এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন মানুষের মধ্যে কাঁঠালের যে পুষ্টিগুণাগুণ আছে, তার সঠিক ধারণা দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান বলেন, কোলস্টেরলমুক্ত এ ফলে নেই কোনো ক্ষতিকারক চর্বি। রয়েছে প্রচুর ক্যালরিসহ ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস-আলসার, ক্যানসার, উচ্চরক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম। কাঁঠালে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও সর্দি-কাঁশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। বদহজম রোধ করে কাঁঠাল। উদীচীর এই আয়োজন নতুন প্রজন্মের মাঝে জাতীয় ফল কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতাকে তুলে ধরছে যা অবশ্যই প্রশংসনীয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, গ্রাম-বাংলা সংস্কৃতির সাথে জড়িত কাঁঠালের বহু মজার মজার কাহিনী আছে। রসিকতার ছলে হলেও কাঁঠাল নিয়ে রঙ্গ তামাসাগুলোও বেশ জনপ্রিয়। কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। এ ফলটি বহু প্রাকৃতিক গুণ আছে। আমাদেরকে কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে মানুষের মাঝে জানতে হবে। স্মরণ রাখতে, বহু কিছু বিবেচনা করেই কাঁঠাল এ দেশের জাতীয় ফল। কাঁঠালের সবকিছু কাজে লাগে। এমন যেন না হয় যে, আমাদের জাতীয় ফলকেই আমরা ভুলে যাচ্ছি। চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় ফল কাঁঠালের চাষ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। এভাবে হ্রাস পেতে থাকলে কাঁঠাল গাছ বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হ্রাসের ফলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইতঃমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাঁঠাল নিয়ে গবেষণার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে কৃষি বিভাগ কাঁঠাল নিয়ে গবেষণা করছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় উদীচীর বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব অনুষ্ঠিত

আপলোড টাইম : ০৭:৩৫:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাঁঠাল শুধু আমাদের জাতীয় ফলই নয়, খুবই পুষ্টিকর ও ভেষজগুণ সমৃদ্ধ, সুলভ ও উপকারী ফল। এর কাণ্ড, শাখা, পাতা, শেকড় কোনো কিছুই বাদ দেওয়ার মতো নয়। কিন্তু ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা কাঁঠাল খেতে আগ্রহী নয়, বরং তাদের মধ্যে বিরুপ মনোভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদা না থাকায় মূল্য হ্রাস পাচ্ছে ফলে কাঁঠাল গাছ উজাড় হচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঙালী সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের এই জাতীয় ফল কাঁঠাল। এবারে চতুর্থ বারের মতো ভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদ। উদীচী চুয়াডাঙ্গার আয়োজনে গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব-২০২২। এবারের আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল দৈনিক সময়ের সমীকরণ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা উদীচীর সভাপতি হাবিবি জহির রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর রেজাউল করিম, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, সরকারি শেখ হাসিনা কলেজের অধ্যাপক হাফিজ উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, এনএসআই-এর উপ-পরিচালক জিএম জামিল সিদ্দিক, সরকারি বিএম কলেজের সাবেক অধ্যাপক জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি কোরবান আলী মণ্ডল ও  জেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি।

জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব-২০২২ এর সদস্যসচিব সাংবাদিক মেহেরাব্বিন সানভীর প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আদিল হোসেন ও জাতীয় ফল কাঁঠাল উৎসব-২০২২ এর আহ্বায়ক শেখ আসমা চুমকি। কাঁঠালের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজল মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে উদীচীর শিল্পীরা জাতীয় ফল কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তৈরি গান, কাঁঠাল কথন, কবিতা আবৃত্তি, লোকগান ও কাঁঠাল রঙ্গ পরিবেশন করেন। কাঁঠাল ভক্ষণ প্রতিযোগিতায় মাত্র ২ মিনিটে ৫৯টি কোয়া খেয়ে ১ম স্থান অধিকার করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের কর্মচারী বিলকিস খাতুন। একই সময়ে ৪৯টি কোয়া খেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন এনএসআই-এর ফিল্ড অফিসার মো. নয়ন ও ৪৬টি কোয়া খেয়ে ৩য় স্থান অধিকার করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্র আফিফ রহমান। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়াও, জেলার শ্রেষ্ঠ কাঁঠাল চাষী বোয়ালিয়া গ্রামের তোক্কেল আলীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

আলোচনা পর্বে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ বলেন, কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। কাঁঠাল পাকলে কোষ খাওয়া হয়। এ কোষ নিংড়ে রস বের করেও খাওয়া যায়। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে খাওয়ার ধরণ পরিবর্তন করা দরকার। থাইল্যান্ডে কাঁঠালের চিপস তৈরি করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে কাঁঠাল জনপ্রিয় করার বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুকিয়ে সংরক্ষণের পাশাপাশি স্যুপ, চিপস, রস (জুস), আইসক্রিম ইত্যাদি খাবার তৈরিতেও কাঁঠাল ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে না যায় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কাঁঠাল শুধু সুস্বাদু খাদ্য না, আমাদের সভ্যতা-সংস্কৃতির অংশ। যারা ব্যবসায়ী আছেন, তারা পশ্চিমা দেশগুলোর মতো কাঁঠাল নিয়ে নানা রকম ব্যবসা করতে পারেন। উদীচীর এ ধরণের আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, উদীচীর এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন মানুষের মধ্যে কাঁঠালের যে পুষ্টিগুণাগুণ আছে, তার সঠিক ধারণা দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান বলেন, কোলস্টেরলমুক্ত এ ফলে নেই কোনো ক্ষতিকারক চর্বি। রয়েছে প্রচুর ক্যালরিসহ ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস-আলসার, ক্যানসার, উচ্চরক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম। কাঁঠালে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও সর্দি-কাঁশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। বদহজম রোধ করে কাঁঠাল। উদীচীর এই আয়োজন নতুন প্রজন্মের মাঝে জাতীয় ফল কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতাকে তুলে ধরছে যা অবশ্যই প্রশংসনীয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, গ্রাম-বাংলা সংস্কৃতির সাথে জড়িত কাঁঠালের বহু মজার মজার কাহিনী আছে। রসিকতার ছলে হলেও কাঁঠাল নিয়ে রঙ্গ তামাসাগুলোও বেশ জনপ্রিয়। কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। এ ফলটি বহু প্রাকৃতিক গুণ আছে। আমাদেরকে কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে মানুষের মাঝে জানতে হবে। স্মরণ রাখতে, বহু কিছু বিবেচনা করেই কাঁঠাল এ দেশের জাতীয় ফল। কাঁঠালের সবকিছু কাজে লাগে। এমন যেন না হয় যে, আমাদের জাতীয় ফলকেই আমরা ভুলে যাচ্ছি। চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় ফল কাঁঠালের চাষ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। এভাবে হ্রাস পেতে থাকলে কাঁঠাল গাছ বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হ্রাসের ফলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইতঃমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাঁঠাল নিয়ে গবেষণার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে কৃষি বিভাগ কাঁঠাল নিয়ে গবেষণা করছে।