ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গাসহ ১৭ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণে ধীরগতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১০:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০২২
  • / ৬২ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: নির্ধারিত মেয়াদে সমাপ্ত না হওয়াতে চুয়াডাঙ্গাসহ ১৭টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ধীরগতির রোগে ধরেছে। নির্মাণসামগ্রী বিশেষ করে রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য মালামালের দাম ঊর্ধমুখী হওয়ায় অনেক জায়গাতে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে টেন্ডার মূল্য বেশি জমা পড়েছে। দরপত্র প্রস্তাবের মূল্য বেশি হওয়াতে কার্যাদেশ প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে। আবার কিছু কাজ রোডম্যাপ অনুযায়ী হচ্ছে না। ফলে নির্ধারিত ব্যয়ে বাস্তবায়িত না হাওয়া এবং বর্ধিত ১২৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকাতেও প্রকল্প সমাপ্ত করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্প্রতি পর্যালোচনা থেকে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের প্রকল্প প্রস্তাবনা পর্যালোচনা থেকে জানা যায়, বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণকে নিকটতম সুবিধাজনক স্থান থেকে উন্নতমানের পাসপোর্ট সেবা দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়। প্রস্তাবিত ১৬টি গাজীপুরসহ মোট ১৭টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ এবং সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার যশোর ৪টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে সর্বমোট ২১টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপদ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সেবা দেয়ার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু কাজ সমাপ্ত না হওয়াতে সেখান থেকে ৪১ কোটি ৩৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা বেড়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১২৮ কোটি ৩৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে অর্থাৎ সাড়ে বছরে প্রকল্প সমাপ্ত করার কথা। চলতি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকাগুলো হলোবান্দরবান, খাগড়াছড়ি, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নাটোর, জয়পুরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারি, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, শেরপুর গাজীপুর। আর ঊধর্বমুখী সম্প্রসারণ করার কথা হলোসিলেট, মনসুরাবাদ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার যশোর। গাজীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার যশোর ছাড়া বাকিগুলোর প্রতিটি ভবনের আয়তন হলো হাজার ৮২৬ বর্গফুট।

আগস্ট মাসের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা সভার তথ্য বলছে, প্রকল্পের সব এলাকার রেডম্যাপ দাখিল করেছে গণপূর্ত বিভাগ। লালমনিরহাট, পিরোজপুরম খাগড়াছড়ি, ঝালকাঠি, শেরপুর, মেহেরপুর, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, নাটোর, নড়াইল, জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারি, ঠাকুরগাঁ মোট ১৫টির জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জমির অর্থমূল্যও পরিশোধ করা হয়েছে। কুড়িগ্রামে ভূমি খাতে এক কোটি টাকা বেশি লাগবে। গণপূর্তের তথ্য বলছে, প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পের মূল মেয়াদে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ৮টি স্থাপনার টেন্ডার সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম, খাগড়াছড়ি, গাইবান্ধা, শেরপুর, নড়াইল, ঝালকাঠি, চূয়াডাঙ্গা, পিরোজপুর জেলার মূল ভবনের ছাদ নির্মাণসহ কাঠামোগত কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। পিরোজপুর ছাড়া ৭টির নির্মাণকাজ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সমাপ্ত হবে বলে গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানায়। পিরোজপুরকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। তারা প্রায় দেড় বছর আগে কাজ শুরু করেও আশানুরূপ মাত্রায় অগ্রগতি হয়নি।

গাজীপুরের পাইলিং ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণ, দেয়াল নির্মাণসহ ভবনের কাজ চলমান আছে। আগইে প্রথম তলার ছাদ ঢালাই করা হবে। সিলেটের ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদার গণপূর্ত বিভাগকে তাগিদ দেয়া হয়েছে বলে প্রকল্প অফিস থেকে জানা গেছে। প্রায় আড়াই বছর ধরে কাজ শেষ হচ্ছে না। গাইবান্ধায় জমি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। তবে নির্মাণকাজ ৯০ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের জেলার মধ্যে নীলফামারি, বান্দরবান, লালমনিরহাট, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, মেহেরপুর, জয়পুরহাটের কাজ দ্রত চলমান। যশোরের টেন্ডার মূল্যায়ন শেষে মার্চে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে চলতি বছরের ১৯ এপিল টেন্ডার দেয়া হয়েছে। মে মাসে উন্মুক্ত করা হয়। কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। এখানে ছাদ ঢালাই শেষ। কক্সবাজারে টেন্ডার কাজ শেষে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। সাইটে মালামাল এনে কাজ শুরু করা হয়েছে। পঞ্চগড়ে রিট মামলা রয়েছে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে। নিষ্পত্তি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বেজ শর্ট কলাম ঢলাই শেষ। আর্থ ফিলিং গ্রেড বিমের কাজ চলমান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে প্রাক্কলিত ব্যয়ের তুলনায় দরপত্র প্রস্তাব মূল্য বেশি হচ্ছে। যার কারণে কার্যাদেশ দিতে বিলম্ব হচ্ছে। সিলেটের কাজ প্রায় তিন বছর আগে শুরু হলেও যাবৎ শেষ হয়নি। কক্সবাজারের কাজ শ্লথ রোডম্যাপ অনুযায়ী এগোচ্ছে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গাসহ ১৭ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণে ধীরগতি

আপলোড টাইম : ০৮:১০:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: নির্ধারিত মেয়াদে সমাপ্ত না হওয়াতে চুয়াডাঙ্গাসহ ১৭টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ধীরগতির রোগে ধরেছে। নির্মাণসামগ্রী বিশেষ করে রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য মালামালের দাম ঊর্ধমুখী হওয়ায় অনেক জায়গাতে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে টেন্ডার মূল্য বেশি জমা পড়েছে। দরপত্র প্রস্তাবের মূল্য বেশি হওয়াতে কার্যাদেশ প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে। আবার কিছু কাজ রোডম্যাপ অনুযায়ী হচ্ছে না। ফলে নির্ধারিত ব্যয়ে বাস্তবায়িত না হাওয়া এবং বর্ধিত ১২৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকাতেও প্রকল্প সমাপ্ত করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্প্রতি পর্যালোচনা থেকে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের প্রকল্প প্রস্তাবনা পর্যালোচনা থেকে জানা যায়, বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণকে নিকটতম সুবিধাজনক স্থান থেকে উন্নতমানের পাসপোর্ট সেবা দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়। প্রস্তাবিত ১৬টি গাজীপুরসহ মোট ১৭টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ এবং সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার যশোর ৪টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে সর্বমোট ২১টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপদ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সেবা দেয়ার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু কাজ সমাপ্ত না হওয়াতে সেখান থেকে ৪১ কোটি ৩৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা বেড়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১২৮ কোটি ৩৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে অর্থাৎ সাড়ে বছরে প্রকল্প সমাপ্ত করার কথা। চলতি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকাগুলো হলোবান্দরবান, খাগড়াছড়ি, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নাটোর, জয়পুরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারি, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, শেরপুর গাজীপুর। আর ঊধর্বমুখী সম্প্রসারণ করার কথা হলোসিলেট, মনসুরাবাদ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার যশোর। গাজীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার যশোর ছাড়া বাকিগুলোর প্রতিটি ভবনের আয়তন হলো হাজার ৮২৬ বর্গফুট।

আগস্ট মাসের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা সভার তথ্য বলছে, প্রকল্পের সব এলাকার রেডম্যাপ দাখিল করেছে গণপূর্ত বিভাগ। লালমনিরহাট, পিরোজপুরম খাগড়াছড়ি, ঝালকাঠি, শেরপুর, মেহেরপুর, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, নাটোর, নড়াইল, জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারি, ঠাকুরগাঁ মোট ১৫টির জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জমির অর্থমূল্যও পরিশোধ করা হয়েছে। কুড়িগ্রামে ভূমি খাতে এক কোটি টাকা বেশি লাগবে। গণপূর্তের তথ্য বলছে, প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পের মূল মেয়াদে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ৮টি স্থাপনার টেন্ডার সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম, খাগড়াছড়ি, গাইবান্ধা, শেরপুর, নড়াইল, ঝালকাঠি, চূয়াডাঙ্গা, পিরোজপুর জেলার মূল ভবনের ছাদ নির্মাণসহ কাঠামোগত কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। পিরোজপুর ছাড়া ৭টির নির্মাণকাজ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সমাপ্ত হবে বলে গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানায়। পিরোজপুরকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। তারা প্রায় দেড় বছর আগে কাজ শুরু করেও আশানুরূপ মাত্রায় অগ্রগতি হয়নি।

গাজীপুরের পাইলিং ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণ, দেয়াল নির্মাণসহ ভবনের কাজ চলমান আছে। আগইে প্রথম তলার ছাদ ঢালাই করা হবে। সিলেটের ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদার গণপূর্ত বিভাগকে তাগিদ দেয়া হয়েছে বলে প্রকল্প অফিস থেকে জানা গেছে। প্রায় আড়াই বছর ধরে কাজ শেষ হচ্ছে না। গাইবান্ধায় জমি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। তবে নির্মাণকাজ ৯০ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের জেলার মধ্যে নীলফামারি, বান্দরবান, লালমনিরহাট, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, মেহেরপুর, জয়পুরহাটের কাজ দ্রত চলমান। যশোরের টেন্ডার মূল্যায়ন শেষে মার্চে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে চলতি বছরের ১৯ এপিল টেন্ডার দেয়া হয়েছে। মে মাসে উন্মুক্ত করা হয়। কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। এখানে ছাদ ঢালাই শেষ। কক্সবাজারে টেন্ডার কাজ শেষে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। সাইটে মালামাল এনে কাজ শুরু করা হয়েছে। পঞ্চগড়ে রিট মামলা রয়েছে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে। নিষ্পত্তি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বেজ শর্ট কলাম ঢলাই শেষ। আর্থ ফিলিং গ্রেড বিমের কাজ চলমান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে প্রাক্কলিত ব্যয়ের তুলনায় দরপত্র প্রস্তাব মূল্য বেশি হচ্ছে। যার কারণে কার্যাদেশ দিতে বিলম্ব হচ্ছে। সিলেটের কাজ প্রায় তিন বছর আগে শুরু হলেও যাবৎ শেষ হয়নি। কক্সবাজারের কাজ শ্লথ রোডম্যাপ অনুযায়ী এগোচ্ছে না।