ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার বিসিক মেলায় চলছে নিয়ম-অনিয়মের খেলা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

ডিসি আমিনুল ইসলাম খান বললেন- মেলা মোটামুটি ঠিক আছে, আর বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মিঠু বললেন- বিসিক, প্রশাসন ও থার্ডপার্টির সমন্বয় নিয়মনীতি মেনে মেলা পরিচালনা করা হচ্ছে

 

সমীকরণ প্রতিবেদক: স্থানীয় উদ্যোক্তা ও তাদের তৈরি পণ্য দিয়েই সাজে বিসিক মেলা। কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় মাসব্যাপী শুরু হওয়া বিসিক পণ্য মেলায় দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র। নামে বিসিক পণ্য মেলা হলেও বিসিকের কোনো নিয়মই মানা হয়নি এই মেলায়। মেলায় প্রবেশ ফি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাইডসে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত মূল্য। এছাড়াও মধ্যরাত পর্যন্ত সার্কাসের নামে চলছে নৃত্য আর উচ্চস্বরে সঙ্গীত। এছাড়া এই মেলার কারণে কিশোর-তরুণদের খেলাখুলা আর পড়াশোনায় ঘটছে বিঘ্ন। নিয়ম রয়েছে, বিসিক মেলা করতে হলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সাথে নিয়েই করতে হবে মেলার আয়োজন। আর স্টলে থাকতে হবে স্থানীয়ভাবে তৈরি সব পণ্য। অথচ চুয়াডাঙ্গায় চলা মাসব্যাপী বিসিক মেলার স্টলে স্থান পাচ্ছে নিম্নমানের নানা পণ্য। অনিয়মকে নিয়ম করে চলা মেলায় প্রতিদিন হচ্ছে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য বলেও অভিযোগ মেলার শুরু থেকেই। স্থানীয় প্রশাসন আর সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে বিসিক মেলায় এ সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে এই বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইনি। তবে বিসিক কর্তৃপক্ষের দাবি সব নিয়মনীতি মেনেই নাকি তারা মেলা পরিচালনা করছেন। আর এ মেলা নিয়ে শুরু থেকেই চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ী মহলে রয়েছে অসন্তোষ। কারণ করোনার দুই বছর পর যখন ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়ানোর পালা, ঠিক সেসময় নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এই মেলায় সব নিম্নমানের পণ্যের বেচাবিক্রি চলছে। আর এতেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও তাদের তৈরি পণ্য দিয়ে বিসিক মেলা হোক। কিন্তু এতো বাণিজ্য মেলায় পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পোদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বিপণনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আদলে বড় পরিসরে মেলা আয়োজন করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ‘শতবার্ষিকী’ ও ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষে জেলায় জেলায় শুরু হয় এই বিসিক মেলা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ মে থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামের মাঠে উদ্বোধন করা হয় মাসব্যাপী বিসিক এই মেলার। অর্থাৎ চলতি মাসের ২০ জুন এই মেলার একমাস সময় পূরণ হবে। অর্থাৎ আগামীকাল এ মেলার শেষদিন। কিন্তু এরইমধ্যে মেলা আরো ১০দিন বাড়াতে বিসিক, চুয়াডাঙ্গার আবেদনের প্রেক্ষিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেতও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তারমানে এই মেলা আরো ১০দিন বাড়তে পারে। যেটা নতুন করে ভাবনায় ফেলেছে চুয়াডাঙ্গাবাসীকে। এছাড়া ঢাকা থেকে আগত কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি থার্ড পার্টি হিসেবে এই মেলার মাঠ পরিচালনা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তারা নাকি মোটা অংকের বিনিময়ে এই মেলার মাঠ চুক্তি নিয়েছে বিসিকের কাছ থেকে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়ে কেউ কোনো বক্তব্য দেয়নি। তাই সত্যতা নিশ্চত হওয়া যায়নি।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন বিকেল থেকে জমজমাট হয়ে ওঠে চুয়াডাঙ্গার পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে চলমান এই বিসিক মেলা। যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। নামে বিসিক মেলা হলেও বিসিকের কোনো নিয়মই মানা হয়নি এখানে। প্রবেশ ফি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাইডসে যেমন চড়া মূল্যে দাম হাঁকানো হচ্ছে, তেমনি মধ্যরাত পর্যন্ত সার্কাসের নামে চলছে নৃত্য-সঙ্গীত। রুপালি পর্দার নায়ক-নায়িকাদের আকর্ষন রেখে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে এসব নৃত্য।

মেলার স্টল ঘুরে দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গার মাত্র একজন উদ্যোক্তা শুধুমাত্র একটি স্টল নিয়ে বসে আছেন। বাকি সব দোকান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ব্যবসায়ীদের দখলে। সার্কাস রাইডসের সাথে জামা-কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল, প্রসাধনী, ঘরের সাজসজ্জ্বার পণ্য সবকিছুই আছে এ মেলায়। যার একটিও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের হাতে গড়া নয়।

একটি দোকানে চোখে পড়লে সেখানে দেখা যায় নিজ হাতে নারিকেলের মালা দিয়ে তৈরি নানা ধরনের তৈজসপত্র। যার সাথে কথা বললে স্থানীয় এই উদ্যোক্তা খালিদ বিন ওয়ালিদ বলেন, ‘মেলায় অন্তত ৫০টির মতো স্টল রয়েছে। যার মধ্যে আমার একটি স্টলই শুধু চুয়াডাঙ্গার। আমি নারিকেলের মালায় দিয়ে তৈনি নানা ধরনের শখের পণ্যের পসরা বসিয়েছি। আর মেলার বাকি সব স্টল বাইরের জেলার মানুষের। বিসিক মেলার নামে চুয়াডাঙ্গার উদ্যোক্তাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। তাছাড়াও নিম্ন মানের স্বল্প মূল্যের পণ্যে এনে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।’

তিনি আরো বলেন, ‘যাদের জন্য বিসিক মেলার আয়োজন, সেই স্থানীয় উদ্যোক্তারাই হয়েছেন বঞ্চিত। কেউ নিতে পারেনি কোনো স্টল।’ এমনকি তাদেরকে জানানোও হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় এক উদ্যোক্তা সঙ্গী খাতুন জানান, তিনি বিসিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী উদ্যোক্তা। অথচ মেলা শুরুর আগে তিনি কিছুই জানতেন না। তাকে বিসিক থেকেও জানানো হয়নি। অথচ মেলা শুরুর আগে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সাথে নিয়ে মিটিং করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি বলে জেনেছি।

লাবনী নাসিরন নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, আমাদের ‘কম’ (চুয়াডাঙ্গা অনলাইন মার্কেট) উদ্যোক্তা গ্রুপে অন্তত ৮০জন উদ্যোক্তা রয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে চুয়াডাঙ্গাতেই রয়েছে দেড় শতাধিক উদ্যোক্তা। তাদের কেউই জানেন না যে বিসিক মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগে থেকে জানলে হয়তো চুয়াডাঙ্গার অনেক উদ্যোক্তাই স্টল নিতে পারতো।
স্থানীয়ভাবে খাবার নিয়ে কাজ করা তাসিব মেঘ নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, মেলার মাঠে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান আছে। যাদের সবাই ঢাকা অঞ্চলের লোকজন। আমি সুযোগ পেলে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় খাবারের জন্য একটি স্টল নিতে পারতাম। নিয়মের লেশমাত্র মানা হচ্ছে না এ মেলায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘মেলা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মেলায় ৫০টি স্টল রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার এক উদ্যোক্তার শুধুমাত্র একটি। স্থানীয়ভাবে হাতে তৈরি পণ্যের উপস্থিতি না থাকলেও মেলার স্টলগুলো জামা-জুতা আর নিম্নমানের প্রসাধনীতে ঠাঁসা। যাদের জন্য বিসিক মেলার আয়োজন, সেই স্থানীয় উদ্যোক্তারাই হয়েছেন বঞ্চিত। কেউ নিতে পারেনি কোনো স্টল। এমনকি তাদেরকে জানানোও হয়নি।’

বিসিক মেলা নিয়ে অভিযোগ ও আপত্তি রয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও। ব্যবসায়ী নেতা মাহফুজুর রহমান জোয়ার্দ্দার মিজাইল ও সুমন পারভেজ খান বলেন, ‘নামে বিসিক মেলা। কিন্তু সেখানে আসলে বিসিকের কোনো শর্তই মানা হচ্ছে না। নিম্নমানের স্বল্পমূল্যের পণ্যে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। বিসিক মেলার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে আর জেলা প্রশাসনকে কৌশলে ভুল বুঝিয়ে প্রতিদিনই হচ্ছে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য। যার প্রভাব পড়েছে চুয়াডাঙ্গা শহরের মার্কেটগুলোতে। মার্কেটগুলো এখন ফাঁকা।’ এই ব্যবসায়ী নেতারা জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার ডিসি স্যার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে, একটা ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি

এদিকে, কয়েকজন সচেতন নাগরিকের সাথে কথা হলে তাঁরা বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে মেলা হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে বয়স ভিত্তিক নানা খেলোয়াড়দের অনুশীলন করার একমাত্র মাঠ এটি। এবিষয়ে এখনই জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভুমিকা নেওয়া প্রয়োজন। কিন্ত তারা কেন নীরব বুঝতে পারছি না। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কল্যাণে সরকারি এই উদ্যোগকে ব্যর্থ করেছে বিসিক, চুয়াডাঙ্গা। এছাড়া করোনার দুই পর বিদ্যালয় খুলেছে। আর একণ এই মেলার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। যেটা আসলেই খুব হতাশার।’

এবিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। চুয়াডাঙ্গা বিসিক-এর উপ-ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান মিঠু জানান, ‘সকল অনুমতি নিয়েই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য সার্কাস ও রাইডসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর সার্কাস রাইডসে চড়ামূল্য রাখা হয়নি। জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া এই মেলায় সরকারিভাবে কোনো বাজেট নাই। তাই আয় থেকে ব্যয়ের ব্যাপারে নির্দেশনা আছে। বিসিক, প্রশাসন ও থার্ডপার্টির সমন্বয় করে সার্বিক নিয়মনীতি মেনে মেলা পরিচালনা করা হচ্ছে। আর আমরা যখন জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোদন নিই, তখন জেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমতিও নিয়েছি।’

মেলায় স্থানীয় উদ্যোক্তাদের নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিক-এর উপ-ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘মেলা শুরুর আগে আমরা আমাদের বিসিেিকর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও নিবন্ধিত উদ্যোক্তাদের নিয়ে বসেছি। এবং তাদের বলেছি। তবে কী কারণে মেলায় তাদরে অংশগ্রহণ কম বলতে পারবো না। তবে কয়েকটি স্টল স্থানীয় উদ্যোক্তাদের। আর অনেকগুলো স্টল ফাঁকা আছে সেগুলো স্থানীয় উদ্যোক্তাদের দেওয়া হবে।’

মেলা আরো ১০দিন বাড়ছে জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা বিসিক-এর উপ-ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান মিঠু আরো বলেন, ‘এখানে কোনো নৃত্য-সঙ্গীত হচ্ছে না। শুধু সার্কাসে শারীরিক কলাকৌশল প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদের সহযোগিতা করছেন।’

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘অভিযোগ পেয়ে আমি মেলা পরিদর্শন করেছি। আমার মনে হয়েছে মেলায় সব নিয়মনীতি মানা হচ্ছে।’

মেলার সময় বাড়ানো হচ্ছে বিষয়ে অনুমতি দেবেন কিনা এমন প্রশ্নে ডিসি বলেন, ‘বিসিকি কর্তৃপক্ষের গত ১৫ জুন থেকে মেলা শুরু করার কথা ছিলো, কিন্তু তারা ২০ জুনের পরেই সম্ভবত মেলা শুরু করেছে। তাই সময় কিছুদিন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।’

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মধ্যে পড়ছে বলে তারা অভিযোগ তুলছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি বলেন, ‘মেলা হলে সাধারণ মানুষ মেলায় যাবে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনবে, এটাই স্বাভাবিক।’

মেলায় নৃত্য-সঙ্গীত হচ্ছে গভীর রাত পর্যন্ত এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি বলেন, ‘মেলায় আমি গিয়েছি, দেখেছি কোনো অশ্লীল নৃত্য-সঙ্গীত দেখেনি। তবে একটা সার্কাস আছে। সেটা মোটামুটি ঠিকই আছে। আর বিসিক র‌্যাফেল ড্র-এর জন্য আবেদন করেছিল, সেটা আমরা একসেপ্ট করিনি।’

স্থানীয় উদ্যোক্তা ও তাদের তৈরি পণ্য সংকট রয়েছে। একইসাথে মেলার শুরুর আগে বিসিক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিষয়টি জানায়নি এবং তাদের নিয়ে মিটিং বা আলোচনা করেনি এমন অভিযোগ উঠছে? এমন প্রশ্নে উত্তরে ডিসি বলেন, এমন অভিযোগ হয়তো ঠিক না। কারণ অনেক আগে থেকে ব্যানার-মাইকিংসহ অনেক ভাবে জানানো এবং প্রচার-প্রচারণা ছিলো। তারা যোগাযোগ করলে অবশ্যই স্টল পেতো। আর স্থানীয় উদ্যোক্তারা কেন মেলায় ওইভাবে অংশগ্রহণ নেই, সেটা আমার জানা নেই। যদি স্থানীয় উদ্যোক্তারা আমার কাছে আসতো কিংবা অভিযোগ করতো তাহলে ভালো হতো। তবে যথেষ্ট প্রচার-প্রচারণা ছিল, কিন্তু তারা মেলায় অংশগ্রহণে আগ্রহী না হলে তো জোর করা যায় না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গার বিসিক মেলায় চলছে নিয়ম-অনিয়মের খেলা!

আপলোড টাইম : ০৫:০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২

ডিসি আমিনুল ইসলাম খান বললেন- মেলা মোটামুটি ঠিক আছে, আর বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মিঠু বললেন- বিসিক, প্রশাসন ও থার্ডপার্টির সমন্বয় নিয়মনীতি মেনে মেলা পরিচালনা করা হচ্ছে

 

সমীকরণ প্রতিবেদক: স্থানীয় উদ্যোক্তা ও তাদের তৈরি পণ্য দিয়েই সাজে বিসিক মেলা। কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় মাসব্যাপী শুরু হওয়া বিসিক পণ্য মেলায় দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র। নামে বিসিক পণ্য মেলা হলেও বিসিকের কোনো নিয়মই মানা হয়নি এই মেলায়। মেলায় প্রবেশ ফি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাইডসে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত মূল্য। এছাড়াও মধ্যরাত পর্যন্ত সার্কাসের নামে চলছে নৃত্য আর উচ্চস্বরে সঙ্গীত। এছাড়া এই মেলার কারণে কিশোর-তরুণদের খেলাখুলা আর পড়াশোনায় ঘটছে বিঘ্ন। নিয়ম রয়েছে, বিসিক মেলা করতে হলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সাথে নিয়েই করতে হবে মেলার আয়োজন। আর স্টলে থাকতে হবে স্থানীয়ভাবে তৈরি সব পণ্য। অথচ চুয়াডাঙ্গায় চলা মাসব্যাপী বিসিক মেলার স্টলে স্থান পাচ্ছে নিম্নমানের নানা পণ্য। অনিয়মকে নিয়ম করে চলা মেলায় প্রতিদিন হচ্ছে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য বলেও অভিযোগ মেলার শুরু থেকেই। স্থানীয় প্রশাসন আর সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে বিসিক মেলায় এ সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে এই বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইনি। তবে বিসিক কর্তৃপক্ষের দাবি সব নিয়মনীতি মেনেই নাকি তারা মেলা পরিচালনা করছেন। আর এ মেলা নিয়ে শুরু থেকেই চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ী মহলে রয়েছে অসন্তোষ। কারণ করোনার দুই বছর পর যখন ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়ানোর পালা, ঠিক সেসময় নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এই মেলায় সব নিম্নমানের পণ্যের বেচাবিক্রি চলছে। আর এতেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও তাদের তৈরি পণ্য দিয়ে বিসিক মেলা হোক। কিন্তু এতো বাণিজ্য মেলায় পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পোদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বিপণনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আদলে বড় পরিসরে মেলা আয়োজন করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ‘শতবার্ষিকী’ ও ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষে জেলায় জেলায় শুরু হয় এই বিসিক মেলা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ মে থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামের মাঠে উদ্বোধন করা হয় মাসব্যাপী বিসিক এই মেলার। অর্থাৎ চলতি মাসের ২০ জুন এই মেলার একমাস সময় পূরণ হবে। অর্থাৎ আগামীকাল এ মেলার শেষদিন। কিন্তু এরইমধ্যে মেলা আরো ১০দিন বাড়াতে বিসিক, চুয়াডাঙ্গার আবেদনের প্রেক্ষিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেতও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তারমানে এই মেলা আরো ১০দিন বাড়তে পারে। যেটা নতুন করে ভাবনায় ফেলেছে চুয়াডাঙ্গাবাসীকে। এছাড়া ঢাকা থেকে আগত কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি থার্ড পার্টি হিসেবে এই মেলার মাঠ পরিচালনা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তারা নাকি মোটা অংকের বিনিময়ে এই মেলার মাঠ চুক্তি নিয়েছে বিসিকের কাছ থেকে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়ে কেউ কোনো বক্তব্য দেয়নি। তাই সত্যতা নিশ্চত হওয়া যায়নি।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন বিকেল থেকে জমজমাট হয়ে ওঠে চুয়াডাঙ্গার পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে চলমান এই বিসিক মেলা। যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। নামে বিসিক মেলা হলেও বিসিকের কোনো নিয়মই মানা হয়নি এখানে। প্রবেশ ফি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাইডসে যেমন চড়া মূল্যে দাম হাঁকানো হচ্ছে, তেমনি মধ্যরাত পর্যন্ত সার্কাসের নামে চলছে নৃত্য-সঙ্গীত। রুপালি পর্দার নায়ক-নায়িকাদের আকর্ষন রেখে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে এসব নৃত্য।

মেলার স্টল ঘুরে দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গার মাত্র একজন উদ্যোক্তা শুধুমাত্র একটি স্টল নিয়ে বসে আছেন। বাকি সব দোকান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ব্যবসায়ীদের দখলে। সার্কাস রাইডসের সাথে জামা-কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল, প্রসাধনী, ঘরের সাজসজ্জ্বার পণ্য সবকিছুই আছে এ মেলায়। যার একটিও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের হাতে গড়া নয়।

একটি দোকানে চোখে পড়লে সেখানে দেখা যায় নিজ হাতে নারিকেলের মালা দিয়ে তৈরি নানা ধরনের তৈজসপত্র। যার সাথে কথা বললে স্থানীয় এই উদ্যোক্তা খালিদ বিন ওয়ালিদ বলেন, ‘মেলায় অন্তত ৫০টির মতো স্টল রয়েছে। যার মধ্যে আমার একটি স্টলই শুধু চুয়াডাঙ্গার। আমি নারিকেলের মালায় দিয়ে তৈনি নানা ধরনের শখের পণ্যের পসরা বসিয়েছি। আর মেলার বাকি সব স্টল বাইরের জেলার মানুষের। বিসিক মেলার নামে চুয়াডাঙ্গার উদ্যোক্তাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। তাছাড়াও নিম্ন মানের স্বল্প মূল্যের পণ্যে এনে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।’

তিনি আরো বলেন, ‘যাদের জন্য বিসিক মেলার আয়োজন, সেই স্থানীয় উদ্যোক্তারাই হয়েছেন বঞ্চিত। কেউ নিতে পারেনি কোনো স্টল।’ এমনকি তাদেরকে জানানোও হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় এক উদ্যোক্তা সঙ্গী খাতুন জানান, তিনি বিসিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী উদ্যোক্তা। অথচ মেলা শুরুর আগে তিনি কিছুই জানতেন না। তাকে বিসিক থেকেও জানানো হয়নি। অথচ মেলা শুরুর আগে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সাথে নিয়ে মিটিং করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি বলে জেনেছি।

লাবনী নাসিরন নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, আমাদের ‘কম’ (চুয়াডাঙ্গা অনলাইন মার্কেট) উদ্যোক্তা গ্রুপে অন্তত ৮০জন উদ্যোক্তা রয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে চুয়াডাঙ্গাতেই রয়েছে দেড় শতাধিক উদ্যোক্তা। তাদের কেউই জানেন না যে বিসিক মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগে থেকে জানলে হয়তো চুয়াডাঙ্গার অনেক উদ্যোক্তাই স্টল নিতে পারতো।
স্থানীয়ভাবে খাবার নিয়ে কাজ করা তাসিব মেঘ নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, মেলার মাঠে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান আছে। যাদের সবাই ঢাকা অঞ্চলের লোকজন। আমি সুযোগ পেলে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় খাবারের জন্য একটি স্টল নিতে পারতাম। নিয়মের লেশমাত্র মানা হচ্ছে না এ মেলায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘মেলা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মেলায় ৫০টি স্টল রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার এক উদ্যোক্তার শুধুমাত্র একটি। স্থানীয়ভাবে হাতে তৈরি পণ্যের উপস্থিতি না থাকলেও মেলার স্টলগুলো জামা-জুতা আর নিম্নমানের প্রসাধনীতে ঠাঁসা। যাদের জন্য বিসিক মেলার আয়োজন, সেই স্থানীয় উদ্যোক্তারাই হয়েছেন বঞ্চিত। কেউ নিতে পারেনি কোনো স্টল। এমনকি তাদেরকে জানানোও হয়নি।’

বিসিক মেলা নিয়ে অভিযোগ ও আপত্তি রয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও। ব্যবসায়ী নেতা মাহফুজুর রহমান জোয়ার্দ্দার মিজাইল ও সুমন পারভেজ খান বলেন, ‘নামে বিসিক মেলা। কিন্তু সেখানে আসলে বিসিকের কোনো শর্তই মানা হচ্ছে না। নিম্নমানের স্বল্পমূল্যের পণ্যে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। বিসিক মেলার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে আর জেলা প্রশাসনকে কৌশলে ভুল বুঝিয়ে প্রতিদিনই হচ্ছে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য। যার প্রভাব পড়েছে চুয়াডাঙ্গা শহরের মার্কেটগুলোতে। মার্কেটগুলো এখন ফাঁকা।’ এই ব্যবসায়ী নেতারা জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার ডিসি স্যার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে, একটা ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি

এদিকে, কয়েকজন সচেতন নাগরিকের সাথে কথা হলে তাঁরা বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে মেলা হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে বয়স ভিত্তিক নানা খেলোয়াড়দের অনুশীলন করার একমাত্র মাঠ এটি। এবিষয়ে এখনই জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভুমিকা নেওয়া প্রয়োজন। কিন্ত তারা কেন নীরব বুঝতে পারছি না। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কল্যাণে সরকারি এই উদ্যোগকে ব্যর্থ করেছে বিসিক, চুয়াডাঙ্গা। এছাড়া করোনার দুই পর বিদ্যালয় খুলেছে। আর একণ এই মেলার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। যেটা আসলেই খুব হতাশার।’

এবিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। চুয়াডাঙ্গা বিসিক-এর উপ-ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান মিঠু জানান, ‘সকল অনুমতি নিয়েই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য সার্কাস ও রাইডসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর সার্কাস রাইডসে চড়ামূল্য রাখা হয়নি। জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া এই মেলায় সরকারিভাবে কোনো বাজেট নাই। তাই আয় থেকে ব্যয়ের ব্যাপারে নির্দেশনা আছে। বিসিক, প্রশাসন ও থার্ডপার্টির সমন্বয় করে সার্বিক নিয়মনীতি মেনে মেলা পরিচালনা করা হচ্ছে। আর আমরা যখন জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোদন নিই, তখন জেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমতিও নিয়েছি।’

মেলায় স্থানীয় উদ্যোক্তাদের নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিক-এর উপ-ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘মেলা শুরুর আগে আমরা আমাদের বিসিেিকর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও নিবন্ধিত উদ্যোক্তাদের নিয়ে বসেছি। এবং তাদের বলেছি। তবে কী কারণে মেলায় তাদরে অংশগ্রহণ কম বলতে পারবো না। তবে কয়েকটি স্টল স্থানীয় উদ্যোক্তাদের। আর অনেকগুলো স্টল ফাঁকা আছে সেগুলো স্থানীয় উদ্যোক্তাদের দেওয়া হবে।’

মেলা আরো ১০দিন বাড়ছে জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা বিসিক-এর উপ-ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান মিঠু আরো বলেন, ‘এখানে কোনো নৃত্য-সঙ্গীত হচ্ছে না। শুধু সার্কাসে শারীরিক কলাকৌশল প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদের সহযোগিতা করছেন।’

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘অভিযোগ পেয়ে আমি মেলা পরিদর্শন করেছি। আমার মনে হয়েছে মেলায় সব নিয়মনীতি মানা হচ্ছে।’

মেলার সময় বাড়ানো হচ্ছে বিষয়ে অনুমতি দেবেন কিনা এমন প্রশ্নে ডিসি বলেন, ‘বিসিকি কর্তৃপক্ষের গত ১৫ জুন থেকে মেলা শুরু করার কথা ছিলো, কিন্তু তারা ২০ জুনের পরেই সম্ভবত মেলা শুরু করেছে। তাই সময় কিছুদিন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।’

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মধ্যে পড়ছে বলে তারা অভিযোগ তুলছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি বলেন, ‘মেলা হলে সাধারণ মানুষ মেলায় যাবে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনবে, এটাই স্বাভাবিক।’

মেলায় নৃত্য-সঙ্গীত হচ্ছে গভীর রাত পর্যন্ত এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি বলেন, ‘মেলায় আমি গিয়েছি, দেখেছি কোনো অশ্লীল নৃত্য-সঙ্গীত দেখেনি। তবে একটা সার্কাস আছে। সেটা মোটামুটি ঠিকই আছে। আর বিসিক র‌্যাফেল ড্র-এর জন্য আবেদন করেছিল, সেটা আমরা একসেপ্ট করিনি।’

স্থানীয় উদ্যোক্তা ও তাদের তৈরি পণ্য সংকট রয়েছে। একইসাথে মেলার শুরুর আগে বিসিক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিষয়টি জানায়নি এবং তাদের নিয়ে মিটিং বা আলোচনা করেনি এমন অভিযোগ উঠছে? এমন প্রশ্নে উত্তরে ডিসি বলেন, এমন অভিযোগ হয়তো ঠিক না। কারণ অনেক আগে থেকে ব্যানার-মাইকিংসহ অনেক ভাবে জানানো এবং প্রচার-প্রচারণা ছিলো। তারা যোগাযোগ করলে অবশ্যই স্টল পেতো। আর স্থানীয় উদ্যোক্তারা কেন মেলায় ওইভাবে অংশগ্রহণ নেই, সেটা আমার জানা নেই। যদি স্থানীয় উদ্যোক্তারা আমার কাছে আসতো কিংবা অভিযোগ করতো তাহলে ভালো হতো। তবে যথেষ্ট প্রচার-প্রচারণা ছিল, কিন্তু তারা মেলায় অংশগ্রহণে আগ্রহী না হলে তো জোর করা যায় না।