ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে ডিসি-এসপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা

‘প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে’

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৪:৪৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত দুর্গোৎসবের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম খান, জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলাসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পূজা উদ্যাপন পরিষদের নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং মণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন।

এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এখানে প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। আমাদের উচিৎ সব ধর্মের মানুষ ও তাদের আচার-অনুষ্ঠানের প্রতি সম্মান করা। এখানে কেউ যদি সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, আমরা কঠোরভাবে তা দমন করব।’

পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, ‘আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩২টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ, আনছার ভিডিপির সদস্যবৃন্দ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। ছোট যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনাও যেন না ঘটে, সে জন্য আমরা সর্বদা মনিটরিং করছি।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করুন। কোনো সমস্যা দেখা দিলে, অথবা আভাস পেলে আমাদেরকে জানান। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যাস্থা নিতে প্রস্তুত আছি।’

এর আগে আলমডাঙ্গা পৌর শহরের স্টেশনপাড়া ও বাবুপাড়া দুর্গা মন্দিরে বেশ কিছুক্ষণ সময় পার করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। পূজা উদ্যাপন কমিটির নের্তৃবৃন্দের থেকে মন্দিরের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলাম, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু তালেব, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গণি মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল হামিদ রেজা। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং সার্বিক খোঁজখবর নেন। উপজেলার চিৎলা শ্রী শ্রী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে নাজমুল হামিদ রেজা বলেন, ‘আমরা সবাই বাঙ্গালি,  বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে এটাই আমাদের বড় পরিচয়। সাম্প্রদায়িক চেতনায় নয় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমরা বাংলাদেশ গড়ব। শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই-বোনদের সবচেয়ে বড় উৎসব এবং এটা বাঙালি সংস্কৃতির একটা অংশ। সে জন্য সকলে মিলে আমরা এই উৎসব পালন করব যেখানে কোন ভেদাভেদ থাকবে না।’

এসময় উপস্থিত থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মমতাজ মহল বলেন, ‘এই উপজেলায় ২০টি পূজামণ্ডপে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পূজা উদ্যাপন করা হচ্ছে। পূজা উদ্যাপন নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা কাজ করে চলেছে। এবার শারদীয় দুর্গোৎসবে উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপে যেভাবে হিন্দু-মুসলিম ভাইসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করছে, এটা দেখে আমি সত্যিই অভিভূত হয়েছি।’

বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে.এইচ তাসফিকুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার আব্দুর রহমান, সহকারী কমিশনার আসফাকুর রহমান, সরকারি কমিশনার সামিউল আজম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জল হক, এনজিও ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক মানিক রুগা, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন্স) হিমেল রানা, চিৎলা শ্রী শ্রী সার্বজনীণ দূর্গা মন্দিরের সভাপতি মদন কুমার হালদার, সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু কুমার হালদার ও দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে ডিসি-এসপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা

‘প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে’

আপলোড টাইম : ০৪:৪৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত দুর্গোৎসবের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম খান, জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলাসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পূজা উদ্যাপন পরিষদের নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং মণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন।

এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এখানে প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। আমাদের উচিৎ সব ধর্মের মানুষ ও তাদের আচার-অনুষ্ঠানের প্রতি সম্মান করা। এখানে কেউ যদি সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, আমরা কঠোরভাবে তা দমন করব।’

পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, ‘আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩২টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ, আনছার ভিডিপির সদস্যবৃন্দ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। ছোট যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনাও যেন না ঘটে, সে জন্য আমরা সর্বদা মনিটরিং করছি।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করুন। কোনো সমস্যা দেখা দিলে, অথবা আভাস পেলে আমাদেরকে জানান। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যাস্থা নিতে প্রস্তুত আছি।’

এর আগে আলমডাঙ্গা পৌর শহরের স্টেশনপাড়া ও বাবুপাড়া দুর্গা মন্দিরে বেশ কিছুক্ষণ সময় পার করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। পূজা উদ্যাপন কমিটির নের্তৃবৃন্দের থেকে মন্দিরের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলাম, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু তালেব, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গণি মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল হামিদ রেজা। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং সার্বিক খোঁজখবর নেন। উপজেলার চিৎলা শ্রী শ্রী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে নাজমুল হামিদ রেজা বলেন, ‘আমরা সবাই বাঙ্গালি,  বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে এটাই আমাদের বড় পরিচয়। সাম্প্রদায়িক চেতনায় নয় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমরা বাংলাদেশ গড়ব। শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই-বোনদের সবচেয়ে বড় উৎসব এবং এটা বাঙালি সংস্কৃতির একটা অংশ। সে জন্য সকলে মিলে আমরা এই উৎসব পালন করব যেখানে কোন ভেদাভেদ থাকবে না।’

এসময় উপস্থিত থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মমতাজ মহল বলেন, ‘এই উপজেলায় ২০টি পূজামণ্ডপে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পূজা উদ্যাপন করা হচ্ছে। পূজা উদ্যাপন নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা কাজ করে চলেছে। এবার শারদীয় দুর্গোৎসবে উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপে যেভাবে হিন্দু-মুসলিম ভাইসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করছে, এটা দেখে আমি সত্যিই অভিভূত হয়েছি।’

বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে.এইচ তাসফিকুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার আব্দুর রহমান, সহকারী কমিশনার আসফাকুর রহমান, সরকারি কমিশনার সামিউল আজম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জল হক, এনজিও ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক মানিক রুগা, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন্স) হিমেল রানা, চিৎলা শ্রী শ্রী সার্বজনীণ দূর্গা মন্দিরের সভাপতি মদন কুমার হালদার, সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু কুমার হালদার ও দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।