ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় সড়কে ঝরল দুই বন্ধুসহ তিনজনের প্রাণ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩১:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩৫ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাতটার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর কাঠালতলার অদূরে মোটরসাইকেল ও আলমসাধুর মুখোমুখী সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু নিহত হন। অপর দিকে, একই দিন বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গার হাটকালুগঞ্জে পৃথক একটি সড়ক দুর্ঘটনায় অপর এক নারীর মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের কায়েস আলীর ছেলে রিফাত হোসেন (১৮), দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার আমডাঙ্গা গ্রামের ইমান আলীর ছেলে লাল্টু মিয়া (২২) ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাটকালুগঞ্জপাড়ার সালাম হোসেনের স্ত্রী তাসমিনা বেগম (৪০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাতটার দিকে দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেলযোগে তিন বন্ধু চুয়াডাঙ্গার অভিমুখে আসছিল। পথের মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর কাঠালতলা গ্রামের কাঁনাপুকুর এলাকায় পৌঁছালে সামনে থেকে আসা আরএফএল কোম্পানির একটি অবৈধ আলমসাধুর সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক লাল্টুর মৃত্যু হয়। খবর পয়ে দর্শনা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোটরসাইকলের অপর দুই আরোহী রিফাত হোসেন (১৮) ও মানিককে (২০) রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা চিৎলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। এসময় চিৎলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিফাত হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন ও মানিককে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখেন।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, রাত আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুজনতে জরুরি বিভাগে নেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত নামের এক যুবকের মুত্যু হয়। অপর যুবক সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় জরুরি বিভাগ থেকে তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দামুড়হুদা থানাধীন জয়রামপুর কাঁঠালতলা গ্রামের কাঁনাপুকুর এলাকায় আলমসাধু ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। একই দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের অপর এক আরোহী আহত হয়েছে। আহত যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তবে আলমসাধুটি হেফাজতে নিলেও চালককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাটকালুগঞ্জ নতুন মসজিদের সামনে বাস ও আলমসাধুর ধাক্কায় তাসমিনা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত তাসমিনা বেগম হাটকালুগঞ্জপাড়ার সালাম হোসেনের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে তাসমিনা বেগম হাটকালুগঞ্জ তেঁতুলতলা মোড়ের নতুন মসজিদের সামনে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় দর্শনা থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস একটি আলমসাধুকে ধাক্কা দেয়। এসময় আলমসাধুটি তাসমিনা বেগমকে ধাক্কা দিলে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহানা আহমেদ বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ব্যক্তিরা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় এক নারীকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নেয়। তাঁর মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘সদর থানাধীন হাটকালুগঞ্জ মোড়ে শাপলা পরিবহনের একটি বাস আলমসাধুকে ধাক্কা দেয়। পরে ওই আলমসাধুর ধাক্কায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক বাস ও চালককে আটক করেছি। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় সড়কে ঝরল দুই বন্ধুসহ তিনজনের প্রাণ

আপলোড টাইম : ০৯:৩১:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাতটার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর কাঠালতলার অদূরে মোটরসাইকেল ও আলমসাধুর মুখোমুখী সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু নিহত হন। অপর দিকে, একই দিন বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গার হাটকালুগঞ্জে পৃথক একটি সড়ক দুর্ঘটনায় অপর এক নারীর মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের কায়েস আলীর ছেলে রিফাত হোসেন (১৮), দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার আমডাঙ্গা গ্রামের ইমান আলীর ছেলে লাল্টু মিয়া (২২) ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাটকালুগঞ্জপাড়ার সালাম হোসেনের স্ত্রী তাসমিনা বেগম (৪০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাতটার দিকে দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেলযোগে তিন বন্ধু চুয়াডাঙ্গার অভিমুখে আসছিল। পথের মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর কাঠালতলা গ্রামের কাঁনাপুকুর এলাকায় পৌঁছালে সামনে থেকে আসা আরএফএল কোম্পানির একটি অবৈধ আলমসাধুর সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক লাল্টুর মৃত্যু হয়। খবর পয়ে দর্শনা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোটরসাইকলের অপর দুই আরোহী রিফাত হোসেন (১৮) ও মানিককে (২০) রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা চিৎলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। এসময় চিৎলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিফাত হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন ও মানিককে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখেন।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, রাত আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুজনতে জরুরি বিভাগে নেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত নামের এক যুবকের মুত্যু হয়। অপর যুবক সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় জরুরি বিভাগ থেকে তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দামুড়হুদা থানাধীন জয়রামপুর কাঁঠালতলা গ্রামের কাঁনাপুকুর এলাকায় আলমসাধু ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। একই দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের অপর এক আরোহী আহত হয়েছে। আহত যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তবে আলমসাধুটি হেফাজতে নিলেও চালককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাটকালুগঞ্জ নতুন মসজিদের সামনে বাস ও আলমসাধুর ধাক্কায় তাসমিনা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত তাসমিনা বেগম হাটকালুগঞ্জপাড়ার সালাম হোসেনের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে তাসমিনা বেগম হাটকালুগঞ্জ তেঁতুলতলা মোড়ের নতুন মসজিদের সামনে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় দর্শনা থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস একটি আলমসাধুকে ধাক্কা দেয়। এসময় আলমসাধুটি তাসমিনা বেগমকে ধাক্কা দিলে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহানা আহমেদ বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ব্যক্তিরা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় এক নারীকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নেয়। তাঁর মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘সদর থানাধীন হাটকালুগঞ্জ মোড়ে শাপলা পরিবহনের একটি বাস আলমসাধুকে ধাক্কা দেয়। পরে ওই আলমসাধুর ধাক্কায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক বাস ও চালককে আটক করেছি। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’