ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে বসতবাড়ি ভাঙচুর ও প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৫২:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলতদিয়াড়ে জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্যদের মারধর ও বসতবাড়ী ভাঙচুরসহ তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দৌলতদিয়াড় দক্ষিণ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিবন্ধী যুবকের বোন ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য দৌলতদিয়ার দক্ষিণ পাড়ার কালু মিয়ার মেয়ে পিংকি খাতুন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বসত ভিটার জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পিছনের এলাকার ওসমান মিয়ার ছেলে মারুফ হোসেনের। এরই জের ধরে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দৌলতদিয়াড় দক্ষিণ পাড়ার মৃত আলিম উদ্দীনের ছেলে মুকুল, বকুল ও টুটুল হোসেনসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জন মারুফের নেতৃত্বে ভাঙচুর করে। এসময় ঠেকাতে গেলে কালু মিয়ার স্ত্রী ফজিলা খাতুন, কালু মিয়ার মেয়ে পিংকিসহ পরিবারের সকলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে ভাঙচুর ঠেকাতে কালু মিয়ার ছেলে প্রতিবন্ধী সাহেব আলী (২৩) এগিয়ে যায়। এসময় সাহেবকে বেলচা (বালু তোলার কাজে ব্যবহৃত) দিয়ে আঘাত করে। এসময় সাহেবের কানে লেগে গুরুতর জখম হয়। পরে পরিবারের সহযোগিতায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। কালু মিয়ার বসতবাড়ির দুইটি ঘর ও ছাদ মারুফের নেতৃত্বে ভাঙচুর করে তারা। একই সাথে কালু মিয়ার ভাইয়ের অংশের ঘরও ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। মোট তিনটি রুমের পলেস্তোরা এবং অংশ বড় হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। এতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ভুক্তভোগী ফজিলা খাতুন বলেন, সকাল বেলা মারুফের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন লোক আমাদের বাড়িতে আসে। কিছু না বলেই তারা বাড়ির ছাদে উঠে হাত ভাঙ্গা শুরু করে এবং রুম ভাঙ্গা শুরু করে। এ সময় আমি ঠেকাতে গেলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, ধাক্কা দেয়, আমাকে মারার জন্য এগিয়ে আসে। এ সময় আমার প্রতিবন্ধী ছেলে এগিয়ে গেলে তাকে বেলচা দিয়ে মেরে আহত করে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পিছনের এলাকার ওসমান মিয়ার ছেলে মারুফ হোসেনে বলেন, আমি গত এক বছর আগে জমিটি কিনেছি। এটা তিন জন শরিকের জমি। তারা আমাকে এক বছর ধরে ঘোরাচ্ছে। তাদেরকে আমি ডোনেশন দেবো বলেছি, পাশে ঘর করে দেবো বলেছি। এ বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকবার চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসির কাছেও বসা হয়েছে। এমপির কাছে গেছে ৩-৪ বার। ইউ এন এর কাছে গেছে এছাড়া বিভিন্ন দপ্তরে গেছে তারা। সব জায়গাতেই রায় আমাদের দিকেই ছিল। আজকের সকালে আমি ওখানে গিয়ে ভেঙ্গে আমার জায়গাটুকু আমি ঠিক করে নেব ভেবেছি। আমরা বেশ কয়েকজন ওখানে গেছিলাম। আমরা যাওয়ার পর আমাদের দিকে প্রায় ৪০-৫০ টা ইটের টুকরা ছুড়ে মেরেছে। তখন আমরা প্রতিরোধ করার জন্য সামনের দিকে এগিয়েছি। আমার কাছে আমার জমি সমস্ত কাগজপত্র দলিল আছে। তাদের কোন কাগজপত্র নেই। আমি আমার জায়গা ভাঙতে গিয়েছি অন্য কারোর না।

চুয়াডাঙ্গার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য পিংকি বাদী হয়ে একটা অভিযোগ করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে বসতবাড়ি ভাঙচুর ও প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৩:৫২:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলতদিয়াড়ে জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্যদের মারধর ও বসতবাড়ী ভাঙচুরসহ তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দৌলতদিয়াড় দক্ষিণ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিবন্ধী যুবকের বোন ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য দৌলতদিয়ার দক্ষিণ পাড়ার কালু মিয়ার মেয়ে পিংকি খাতুন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বসত ভিটার জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পিছনের এলাকার ওসমান মিয়ার ছেলে মারুফ হোসেনের। এরই জের ধরে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দৌলতদিয়াড় দক্ষিণ পাড়ার মৃত আলিম উদ্দীনের ছেলে মুকুল, বকুল ও টুটুল হোসেনসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জন মারুফের নেতৃত্বে ভাঙচুর করে। এসময় ঠেকাতে গেলে কালু মিয়ার স্ত্রী ফজিলা খাতুন, কালু মিয়ার মেয়ে পিংকিসহ পরিবারের সকলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে ভাঙচুর ঠেকাতে কালু মিয়ার ছেলে প্রতিবন্ধী সাহেব আলী (২৩) এগিয়ে যায়। এসময় সাহেবকে বেলচা (বালু তোলার কাজে ব্যবহৃত) দিয়ে আঘাত করে। এসময় সাহেবের কানে লেগে গুরুতর জখম হয়। পরে পরিবারের সহযোগিতায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। কালু মিয়ার বসতবাড়ির দুইটি ঘর ও ছাদ মারুফের নেতৃত্বে ভাঙচুর করে তারা। একই সাথে কালু মিয়ার ভাইয়ের অংশের ঘরও ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। মোট তিনটি রুমের পলেস্তোরা এবং অংশ বড় হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। এতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ভুক্তভোগী ফজিলা খাতুন বলেন, সকাল বেলা মারুফের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন লোক আমাদের বাড়িতে আসে। কিছু না বলেই তারা বাড়ির ছাদে উঠে হাত ভাঙ্গা শুরু করে এবং রুম ভাঙ্গা শুরু করে। এ সময় আমি ঠেকাতে গেলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, ধাক্কা দেয়, আমাকে মারার জন্য এগিয়ে আসে। এ সময় আমার প্রতিবন্ধী ছেলে এগিয়ে গেলে তাকে বেলচা দিয়ে মেরে আহত করে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পিছনের এলাকার ওসমান মিয়ার ছেলে মারুফ হোসেনে বলেন, আমি গত এক বছর আগে জমিটি কিনেছি। এটা তিন জন শরিকের জমি। তারা আমাকে এক বছর ধরে ঘোরাচ্ছে। তাদেরকে আমি ডোনেশন দেবো বলেছি, পাশে ঘর করে দেবো বলেছি। এ বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকবার চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসির কাছেও বসা হয়েছে। এমপির কাছে গেছে ৩-৪ বার। ইউ এন এর কাছে গেছে এছাড়া বিভিন্ন দপ্তরে গেছে তারা। সব জায়গাতেই রায় আমাদের দিকেই ছিল। আজকের সকালে আমি ওখানে গিয়ে ভেঙ্গে আমার জায়গাটুকু আমি ঠিক করে নেব ভেবেছি। আমরা বেশ কয়েকজন ওখানে গেছিলাম। আমরা যাওয়ার পর আমাদের দিকে প্রায় ৪০-৫০ টা ইটের টুকরা ছুড়ে মেরেছে। তখন আমরা প্রতিরোধ করার জন্য সামনের দিকে এগিয়েছি। আমার কাছে আমার জমি সমস্ত কাগজপত্র দলিল আছে। তাদের কোন কাগজপত্র নেই। আমি আমার জায়গা ভাঙতে গিয়েছি অন্য কারোর না।

চুয়াডাঙ্গার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য পিংকি বাদী হয়ে একটা অভিযোগ করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।