ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

খেলার সময় ফাঁস লেগে শিশুর মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় খেলার সময় অসাবধানতায় গলায় ফাঁস লেগে সাইদুল ইসলাম সামিউল (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে, বেলা একটার পরেও হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক শিশু সাইদুল ইসলাম সামিউলের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করে পরিবারের সদস্যদের জানায়নি বলে অভিযোগ তাদের। নিহত শিশু সাইদুল ইসলাম সামিউল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোহাম্মদজুমা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে সিন্দুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবু সাইদ সদর হাসপাতালে আসেন নিহত সামিউলের পরিবারের সদস্যদের  ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সামিউলকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করেন। সেখানে নেওয়ার আধাঘণ্টা পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সামিউলের প্রেসক্রিপশনে তার লাশ পোস্টমর্টের জন্য মর্গে প্রেরণ বিষয়টি থানা পুলিশকে জাননোর বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা দেন। এদিকে, ঘটনার পর দেড় ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সামিউলের শরীরে স্যালাইন নল খোলা হয়নি। পরবর্তীতে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওয়ার্ডে এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সামিউলের চাচাত ভাই তারিক খন্দকার করে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাঠের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে মানুষের চিৎকার চেচামেচি শুনতে পাই। এসময় জানতে পারি সামিউল তাদের নতুন বাড়িতে খেলার সময় অসাবধানতায় তার গলায় ফাঁস লেগে যায়। এসময় প্রতিবেশীরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে দ্রুত নিচে নামায়। পরে মোটরসাইকেলযোগে তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।তিনি আরও অভিযোগ করেন, বেলা ১১টায় জরুরি বিভাগে পৌঁছালে চিকিৎসক সামিউলকে একটি স্যালাইন একটি ইনজেকশন দিয়ে ভর্তি করে দেয়। এরপর থেকে দুপুর পর্যন্ত আর কোনো চিকিৎসক তাকে দেখতে আসেনি। সামিউলের নিথর দেহ নিয়ে দেড়টা পর্যন্ত ডাক্তারের অপেক্ষায় সেখানেই বসে থেকেছি। পরে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ডাক্তার এসে সামিউল মারা গেছে বলে জানায়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদিয়া মা আরিজ বলেন, শিশুটির চিকিৎসা মৃত্যুর বিষয়টি ডকুমেন্ট প্রেসক্রিপশনে যাবতীয় লেখা আছে। এর বাইরে যা কিছু জানার তা হাসপাতালের আরএমও বা তত্ত্বাবধায়কের নিকট থেকে জানতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘রোগীটির অবস্থা ভালো ছিল না। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জরুরি বিভাগ থেকেই রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদের রোগীর অবস্থার বিষয়ে জানিয়েছে, এবং রোগিটির যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে সেটাও জানানো হয়। পরে রোগীকে ওয়ার্ডে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে ওয়ার্ডের নার্সদের কল দিয়ে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পোস্টমর্টেম পুলিশকে জানানোর জন্য প্রেসক্রিপশনে লিখিতভাবে ওয়ার্ডবয়কে বলেছি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, সদর থানাধীন মোহাম্মদজুমা গ্রামে খেলার সময় অসাবধানতায় গলায় ফাঁস লেগে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়ে নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

খেলার সময় ফাঁস লেগে শিশুর মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৮:৪৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় খেলার সময় অসাবধানতায় গলায় ফাঁস লেগে সাইদুল ইসলাম সামিউল (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে, বেলা একটার পরেও হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক শিশু সাইদুল ইসলাম সামিউলের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করে পরিবারের সদস্যদের জানায়নি বলে অভিযোগ তাদের। নিহত শিশু সাইদুল ইসলাম সামিউল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোহাম্মদজুমা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে সিন্দুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবু সাইদ সদর হাসপাতালে আসেন নিহত সামিউলের পরিবারের সদস্যদের  ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সামিউলকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করেন। সেখানে নেওয়ার আধাঘণ্টা পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সামিউলের প্রেসক্রিপশনে তার লাশ পোস্টমর্টের জন্য মর্গে প্রেরণ বিষয়টি থানা পুলিশকে জাননোর বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা দেন। এদিকে, ঘটনার পর দেড় ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সামিউলের শরীরে স্যালাইন নল খোলা হয়নি। পরবর্তীতে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওয়ার্ডে এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সামিউলের চাচাত ভাই তারিক খন্দকার করে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাঠের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে মানুষের চিৎকার চেচামেচি শুনতে পাই। এসময় জানতে পারি সামিউল তাদের নতুন বাড়িতে খেলার সময় অসাবধানতায় তার গলায় ফাঁস লেগে যায়। এসময় প্রতিবেশীরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে দ্রুত নিচে নামায়। পরে মোটরসাইকেলযোগে তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।তিনি আরও অভিযোগ করেন, বেলা ১১টায় জরুরি বিভাগে পৌঁছালে চিকিৎসক সামিউলকে একটি স্যালাইন একটি ইনজেকশন দিয়ে ভর্তি করে দেয়। এরপর থেকে দুপুর পর্যন্ত আর কোনো চিকিৎসক তাকে দেখতে আসেনি। সামিউলের নিথর দেহ নিয়ে দেড়টা পর্যন্ত ডাক্তারের অপেক্ষায় সেখানেই বসে থেকেছি। পরে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ডাক্তার এসে সামিউল মারা গেছে বলে জানায়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদিয়া মা আরিজ বলেন, শিশুটির চিকিৎসা মৃত্যুর বিষয়টি ডকুমেন্ট প্রেসক্রিপশনে যাবতীয় লেখা আছে। এর বাইরে যা কিছু জানার তা হাসপাতালের আরএমও বা তত্ত্বাবধায়কের নিকট থেকে জানতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘রোগীটির অবস্থা ভালো ছিল না। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জরুরি বিভাগ থেকেই রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদের রোগীর অবস্থার বিষয়ে জানিয়েছে, এবং রোগিটির যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে সেটাও জানানো হয়। পরে রোগীকে ওয়ার্ডে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে ওয়ার্ডের নার্সদের কল দিয়ে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পোস্টমর্টেম পুলিশকে জানানোর জন্য প্রেসক্রিপশনে লিখিতভাবে ওয়ার্ডবয়কে বলেছি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, সদর থানাধীন মোহাম্মদজুমা গ্রামে খেলার সময় অসাবধানতায় গলায় ফাঁস লেগে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়ে নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।