ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

কেরুজ আঙিনায় সাজ সাজ রব, উদ্বোধন করবেন শিল্প ও ব্যাণিজ্যমন্ত্রী

ওয়াসিম রয়েল:
  • আপলোড টাইম : ১০:১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৩৬ বার পড়া হয়েছে

২০২১-২২ আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। এবছর মাড়াই মৌসুম সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় সরকারের শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত থেকে চিনিকলের কেইন কেরিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করবেন।

এসময় আরও উপস্থিত থাকবেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহহমান অপু প্রমুখ।

এদিকে, মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনের লক্ষে মহাব্যস্ততায় সময় কাটাচ্ছেন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সকলেই। কোনো আয়োজনেরই কমতি রাখা হচ্ছে না। যেমন নতুন সাজে সাজানো হচ্ছে কেরুজ আঙিনা, তেমনিভাবে বর্ণাঢ্য অভ্যার্থনায় নেওয়া হচ্ছে প্রস্তুতি। কেরুজ আঙিনায় অতিথিদের আগমন উপলক্ষে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। বেশ কয়েকদিন ধরেই কেরুজ চিনিকলের মিল হাউজ, কারখানাসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ট্রাইল দেওয়ার পাশাপাশি এলাকায় শুরু হয়েছে ধোয়ামুছা ও ঘষামাঝার কাজ। আর মন্ত্রীসহ অতিথিদের আগমন উপলক্ষে করা হচ্ছে চুনকাম, রাস্তার খানাখন্দ মেরামত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছতার কাজ।

১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈব সার কারখানা ও ওষুধ কারাখানার সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সের চিনি কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান গনে আসছিল। সরকারিভাবে চিনির মূল্য বৃদ্ধির কারণে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে চিনিকারখানাটি। তবে চিনির মূল্য বাড়লেও আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। আখের মূল্য বাড়ানোর দাবি চাষিদের। আখের মূল্য প্রতি মণ ১৪০ টাকা (মিলস গেটে)। চাষিদের দাবি প্রতি মণ আখের মূল্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। চিনিকলের শ্রমিকরা জানান, এ বছর মিলস হাউজের ফিটিংয়ের কাজ ভালো হয়েছে। মিল ভালোই চলবে। ফলে বেশি চিনি উৎপাদন সম্ভব হবে।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মোশারফ হোসেন. জানালেন, মাড়াই মৌসুম শুরু করতে চিনিকলের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে চিনিকল এলাকায় আখের চাষ কম হয়েছে। এজন্য এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে এসেছে। মিল চালু হলে চলতি বছর চিনিকল এলাকায় আখ চাষের পরিমাণ বেশি হবে।

চলতি মৌসুমে কেরু মিল জোনে দণ্ডায়মান আখ রয়েছে ৪ হাজার ৬২৭ একর জমিতে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া চিনিকলের ৪ হাজার মেট্টিক টন আখ কেরু চিনিকলে মাড়াই করা হবে। এ মৌসুমে ৩০ থেকে ৪০ মাড়াই দিবসে প্রতিদিন গড়ে ১১৫০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করবে চিনিকলটি। ৫৫ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে শতকরা ৬ ভাগ চিনি আহরণের মাধ্যমে ৩ হাজার ৬ শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে মোটা অঙ্কের লোকসান কমিয়ে এ বছর লাভের মুখ দেখবে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি এমনটিই আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীন দেশের ১৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের মধ্যে অব্যাহত লোকসানের কারণে সরকার গত বছর ৬টি চিনিকল বন্ধ করে দেয়। চালু রাখে ৯টি। এগুলো হচ্ছে- দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি, ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল, ফরিদপুর চিনিকল, রাজশাহী চিনিকল, নাটোরের নর্থ বেঙ্গল চিনিকল, ঠাকুরগাঁও চিনিকল, জয়পুরহাট চিনিকল ও জামালপুরের জিলবাংলা চিনিকল। বন্ধ ৬টি হলো- কুষ্টিয়া চিনিকল, পাবনা চিনিকল, পঞ্চগড় চিনিকল, রংপুর জেলার শ্যামপুর চিনিকল, গাইবান্ধা জেলার রংপুর চিনিকল ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কেরুজ আঙিনায় সাজ সাজ রব, উদ্বোধন করবেন শিল্প ও ব্যাণিজ্যমন্ত্রী

আপলোড টাইম : ১০:১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১

২০২১-২২ আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। এবছর মাড়াই মৌসুম সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় সরকারের শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত থেকে চিনিকলের কেইন কেরিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করবেন।

এসময় আরও উপস্থিত থাকবেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহহমান অপু প্রমুখ।

এদিকে, মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনের লক্ষে মহাব্যস্ততায় সময় কাটাচ্ছেন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সকলেই। কোনো আয়োজনেরই কমতি রাখা হচ্ছে না। যেমন নতুন সাজে সাজানো হচ্ছে কেরুজ আঙিনা, তেমনিভাবে বর্ণাঢ্য অভ্যার্থনায় নেওয়া হচ্ছে প্রস্তুতি। কেরুজ আঙিনায় অতিথিদের আগমন উপলক্ষে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। বেশ কয়েকদিন ধরেই কেরুজ চিনিকলের মিল হাউজ, কারখানাসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ট্রাইল দেওয়ার পাশাপাশি এলাকায় শুরু হয়েছে ধোয়ামুছা ও ঘষামাঝার কাজ। আর মন্ত্রীসহ অতিথিদের আগমন উপলক্ষে করা হচ্ছে চুনকাম, রাস্তার খানাখন্দ মেরামত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছতার কাজ।

১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈব সার কারখানা ও ওষুধ কারাখানার সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সের চিনি কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান গনে আসছিল। সরকারিভাবে চিনির মূল্য বৃদ্ধির কারণে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে চিনিকারখানাটি। তবে চিনির মূল্য বাড়লেও আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। আখের মূল্য বাড়ানোর দাবি চাষিদের। আখের মূল্য প্রতি মণ ১৪০ টাকা (মিলস গেটে)। চাষিদের দাবি প্রতি মণ আখের মূল্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। চিনিকলের শ্রমিকরা জানান, এ বছর মিলস হাউজের ফিটিংয়ের কাজ ভালো হয়েছে। মিল ভালোই চলবে। ফলে বেশি চিনি উৎপাদন সম্ভব হবে।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মোশারফ হোসেন. জানালেন, মাড়াই মৌসুম শুরু করতে চিনিকলের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে চিনিকল এলাকায় আখের চাষ কম হয়েছে। এজন্য এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে এসেছে। মিল চালু হলে চলতি বছর চিনিকল এলাকায় আখ চাষের পরিমাণ বেশি হবে।

চলতি মৌসুমে কেরু মিল জোনে দণ্ডায়মান আখ রয়েছে ৪ হাজার ৬২৭ একর জমিতে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া চিনিকলের ৪ হাজার মেট্টিক টন আখ কেরু চিনিকলে মাড়াই করা হবে। এ মৌসুমে ৩০ থেকে ৪০ মাড়াই দিবসে প্রতিদিন গড়ে ১১৫০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করবে চিনিকলটি। ৫৫ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে শতকরা ৬ ভাগ চিনি আহরণের মাধ্যমে ৩ হাজার ৬ শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে মোটা অঙ্কের লোকসান কমিয়ে এ বছর লাভের মুখ দেখবে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি এমনটিই আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীন দেশের ১৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের মধ্যে অব্যাহত লোকসানের কারণে সরকার গত বছর ৬টি চিনিকল বন্ধ করে দেয়। চালু রাখে ৯টি। এগুলো হচ্ছে- দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি, ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল, ফরিদপুর চিনিকল, রাজশাহী চিনিকল, নাটোরের নর্থ বেঙ্গল চিনিকল, ঠাকুরগাঁও চিনিকল, জয়পুরহাট চিনিকল ও জামালপুরের জিলবাংলা চিনিকল। বন্ধ ৬টি হলো- কুষ্টিয়া চিনিকল, পাবনা চিনিকল, পঞ্চগড় চিনিকল, রংপুর জেলার শ্যামপুর চিনিকল, গাইবান্ধা জেলার রংপুর চিনিকল ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল।