ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

কুকুর-বিড়ালের সঙ্গে রোগীর বসবাস!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ অগাস্ট ২০২২
  • / ৩৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে বসবাস শুরু করেছে কুকুর ও বিড়াল। রোগীরা হাসপাতালের অস্থায়ী বাসিন্দা হলেও কুকুর-বিড়ালগুলো যেন স্থায়ীভাবেই বসবাস করছে। হাসপাতালের করিডোর এবং বারান্দাগুলোতে অবাধেই ঘোরাফেরা এদের। সিঁড়ির কোনায়, বারান্দা ও করিডোরের ময়লা ফেলার ডাস্টবিনের আশেপাশে পড়ে থাকা রোগীদের খাবারের বর্জ্য খেতে দেখা যায় এই কুকুর-বিড়ালদের।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরাতন ভবনের নীচতলায় আবাসিক চিকিৎসকের অফিস, বর্হিবিভাগ, মেডিসিন ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডসহ স্পর্শকাতর সেবা কেন্দ্র হাসপাতালের করিডোরে স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে অসুস্থ ও বিভিন্ন রোগে আত্রান্ত কুকুরগুলো। এসব কেন্দ্রের সামনে রোগী ওয়ার্ডের যাতায়াতের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে কুকুরগুলো ঘুমিয়েও রয়েছে। বিড়ালগুলো ওয়ার্ডের এপাশ থেকে ওপাশ দৌঁড়াচ্ছে, ওয়ার্ডের রোগীদের খাবারে মুখ দিচ্ছে। এদিকে, হাসপাতালের ওয়ার্ডের বারান্দায় কুকুর ও বিড়ালের অবাধ বিচরণের ফলে রোগী এবং তাদের স্বজনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীন ভূমিকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা রয়েছেন চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। শুধুমাত্র হাসপাতালের নীচতলায় নয়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দাতেও কয়েকটি কুকুরকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা যায়।

হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন বলেন, হাসপাতালে সাধারণ রোগীরা আসেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু হাসপাতালের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা হলে রোগীরা এক রোগ থেকে নিরাময় পেতে এসে অন্য রোগেও আক্রান্ত হবে। কারণ কুকুর জলাতঙ্ক রোগ বহন করে। সেই কুকুরগুলো হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। হাসপাতালটি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। হাসপাতালের ভেতরে অনেকগুলো অসুস্থ কুকুর ঘোরাফেরা করছে, রোগীদের আশেপাশে এসে শুয়ে পড়ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক রোগীকে দেখতে আসা আমিরুল ইসলাম নামের এক যুবক বলেন, কুকুরগুলো দেখে মনে হচ্ছে হাসপাতালের বর্জ্য থেকে খাবার খাওয়ার ফলে এরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বেশিরভাগ কুকুরের গায়ের চুল উঠে গেছে। হাসপাতালের মতো জায়গাতে কুকুরের অবাধ চলাচল কখনোই কাম্য নয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এদিকে নজর দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সচেতন হবে বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘শুধু আজকেই নয়, কয়েক মাস ধরে হাসপাতালের ভেতরে কুকুর ঢুকে পড়ছে। দিনের বেলায় হাসপাতালের কর্মীরা সেগুলোকে তাড়িয়ে দিলেও তারা আবার চলে আসছে। আর হাসপাতালের পরিবেশ যথাউপযুক্ত রাখা যাচ্ছে না, ডাস্টবিন থাকা সত্ত্বেও রোগী ও তাদের স্বজনেরা যেখানে সেখানে খাবার ফেলছে। এই খাবারের জন্য কুকুর ও বিড়াল হাসপাতালের ভেতরে চলে আসছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকসহ পৌরসভাকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কুকুর-বিড়ালের সঙ্গে রোগীর বসবাস!

আপলোড টাইম : ০৮:১৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে বসবাস শুরু করেছে কুকুর ও বিড়াল। রোগীরা হাসপাতালের অস্থায়ী বাসিন্দা হলেও কুকুর-বিড়ালগুলো যেন স্থায়ীভাবেই বসবাস করছে। হাসপাতালের করিডোর এবং বারান্দাগুলোতে অবাধেই ঘোরাফেরা এদের। সিঁড়ির কোনায়, বারান্দা ও করিডোরের ময়লা ফেলার ডাস্টবিনের আশেপাশে পড়ে থাকা রোগীদের খাবারের বর্জ্য খেতে দেখা যায় এই কুকুর-বিড়ালদের।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরাতন ভবনের নীচতলায় আবাসিক চিকিৎসকের অফিস, বর্হিবিভাগ, মেডিসিন ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডসহ স্পর্শকাতর সেবা কেন্দ্র হাসপাতালের করিডোরে স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে অসুস্থ ও বিভিন্ন রোগে আত্রান্ত কুকুরগুলো। এসব কেন্দ্রের সামনে রোগী ওয়ার্ডের যাতায়াতের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে কুকুরগুলো ঘুমিয়েও রয়েছে। বিড়ালগুলো ওয়ার্ডের এপাশ থেকে ওপাশ দৌঁড়াচ্ছে, ওয়ার্ডের রোগীদের খাবারে মুখ দিচ্ছে। এদিকে, হাসপাতালের ওয়ার্ডের বারান্দায় কুকুর ও বিড়ালের অবাধ বিচরণের ফলে রোগী এবং তাদের স্বজনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীন ভূমিকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা রয়েছেন চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। শুধুমাত্র হাসপাতালের নীচতলায় নয়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দাতেও কয়েকটি কুকুরকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা যায়।

হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন বলেন, হাসপাতালে সাধারণ রোগীরা আসেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু হাসপাতালের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা হলে রোগীরা এক রোগ থেকে নিরাময় পেতে এসে অন্য রোগেও আক্রান্ত হবে। কারণ কুকুর জলাতঙ্ক রোগ বহন করে। সেই কুকুরগুলো হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। হাসপাতালটি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। হাসপাতালের ভেতরে অনেকগুলো অসুস্থ কুকুর ঘোরাফেরা করছে, রোগীদের আশেপাশে এসে শুয়ে পড়ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক রোগীকে দেখতে আসা আমিরুল ইসলাম নামের এক যুবক বলেন, কুকুরগুলো দেখে মনে হচ্ছে হাসপাতালের বর্জ্য থেকে খাবার খাওয়ার ফলে এরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বেশিরভাগ কুকুরের গায়ের চুল উঠে গেছে। হাসপাতালের মতো জায়গাতে কুকুরের অবাধ চলাচল কখনোই কাম্য নয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এদিকে নজর দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সচেতন হবে বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘শুধু আজকেই নয়, কয়েক মাস ধরে হাসপাতালের ভেতরে কুকুর ঢুকে পড়ছে। দিনের বেলায় হাসপাতালের কর্মীরা সেগুলোকে তাড়িয়ে দিলেও তারা আবার চলে আসছে। আর হাসপাতালের পরিবেশ যথাউপযুক্ত রাখা যাচ্ছে না, ডাস্টবিন থাকা সত্ত্বেও রোগী ও তাদের স্বজনেরা যেখানে সেখানে খাবার ফেলছে। এই খাবারের জন্য কুকুর ও বিড়াল হাসপাতালের ভেতরে চলে আসছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকসহ পৌরসভাকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না।’