ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

এখানে সব ধর্মের মানুষেরই সমাগম অসাম্প্রদায়িক চেতনার ম্যাসেজ দেয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে অনুষ্ঠানটি সার্থক করে তোলার জন্য সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ : বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাঁশির সুরে আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে চুয়াডাঙ্গার পান্না সিনেমার হল চত্বরে চলছে শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞ ও অষ্টকালীন লীলা কীর্তন। বাবু দিলীপ কুমারসহ চুয়াডাঙ্গার আগরওয়ালা পরিবারের আয়োজনে ১১তম বার্ষিকী ২৪ প্রহরব্যাপী অখণ্ড মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানে উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে ফুটে উঠেছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও উৎসবের আমেজ। একদিকে যেমন চলছে হরেনাম হরেনাম হরেমৈব কেবলম সুরে মহানামযজ্ঞ, ঠিক তেমনি অপরদিকে হরদম চলছে আপ্যায়ন। চুয়াডাঙ্গা পান্না সিনেমাহল প্রাঙ্গণের খোলামেলা পরিবেশে প্রতিদিনই সৃষ্টি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এক মহামিলন মেলা। যা চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।

আয়োজকরা বলেছেন, অশান্ত পৃথিবীর অশনি সংকেত শঙ্কিত করে তুলেছে সবাইকে, হিংসা-বিদ্বেষ আর সংঘাতের প্রতিচ্ছবি সর্বত্রই। অধর্ম আর কুসংস্কারের অনিশ্চিত অন্ধকারে নিমজ্জিত আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত। তাই যন্ত্রণাক্লিষ্ট ও ত্রিতাপদদ্ধ এ অসহায় মানুষের উদ্ধারকল্পে মুক্তির দূতরূপে আর্বিভূত হয়ে মহাবতারী শ্রী শ্রী গৌর সুন্দর লীলাচ্ছলে বিলিয়ে ছিলেন বিশ্ব শান্তি ও মুক্তির মহামন্ত্র শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানাম সংকীর্তন।

এদিকে, দেশ মাতৃকা ও বিশ্ব জননীর সকল সন্তানের মঙ্গল কামনায় চুয়াডাঙ্গায় পান্না সিনেমাহল প্রাঙ্গণে ১১তম বার্ষিকী ২৪ প্রহরব্যাপী অখণ্ড শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানের তৃতীয় দিনে ভক্ত-অনুরাগী ও দশনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে পা ফেলার জায়গা ছিল না।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান ও লীলা কীর্তন পরিদর্শন করেন। এসময় পুলিশ সুপারসহ আগত অতিথিদের স্বাগত জানান বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।

এসময় পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নামযজ্ঞ হলো স্রষ্টাকে ডাকা বা আহ্বান করা। আর সৃষ্টিকর্তাকে সবসময় আহ্বান করা হয়, মনে ধারণ করা হয়, অন্তরে ধারণ করা হয়। আমাদের প্রতিটি ধর্মেই এরকম উদ্যাপন থাকে। স্রষ্টাকে খুশি করতে আমরা বিশেষভাবে সমর্পিত হয়ে তার প্রতি প্রার্থনা করি নিজের ও এই পৃথিবীর সকল মানুষের কল্যাণের জন্য। আমরা মুসলিম ধর্মে যেমন একসাথে ইবাদত করি, ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে সমাজকে সচেতন করেন আমাদের আলেম-উলামারা। ঠিক তেমনি দিলীপ দাদার আয়োজনে হিন্দু ধর্মের এই যজ্ঞ অনুষ্ঠান সমাজ সচেতনসহ অসাম্প্রায়িক চেতনার বাণী ছড়িয়ে দিচ্ছে। এখানে এসে সব ধর্মের মানুষেরই সমাগম দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র সত্যিই সারা দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনার ম্যাসেজ দেয়। এখানে এসে দেখলাম হিন্দু-মুসলিম সবাই একসঙ্গে বসে খাচ্ছেন, হাত হাত লাগিয়ে যজ্ঞের কাজ সম্পাদন করছেন। আর এতেই যেমন ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে উঠছে। তেমনি দেশীয় কৃষ্টি-কালচারেরও চর্চা হচ্ছে।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা যে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে আছি, এই মাটির পিছনে যার কথা না বললেই নই। তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী ও মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর আহ্বান ছিল দলমত নির্বিশেষে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষতা। বঙ্গবন্ধুর সেই চেতনা তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সবার মাঝে তুলে ধরেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই চেতনা আমাদের চুয়াডাঙ্গাতে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা দাদা সবার মাঝে তুলে ধরছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আর এরকম আয়োজন বর্তমানে সমাজে সত্যিই একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ম্যাসেজ দেয় এবং গড়ে ওঠে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। দিলীপ কুমার আগরওয়ালা দাদা বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে যেভাবে লালন করে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদেরও উচিৎ এই চেতনাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মতর প্রবাহ রাখা।’

মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজক ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান পরিচালক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে অনুষ্ঠানটি সার্থক করে তোলার জন্য পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও চুয়াডাঙ্গার সকল স্তরের মানুষের কাছে আমি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছিলাম। ভগবানের কৃপায় সবাই আমাকে সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের প্রতি আমি কৃজ্ঞত। তিনি পুলিশের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এই যজ্ঞস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য পাঠিয়েছেন। অসাম্প্রাদায়িক চেতনা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তুলতে আমি ও আমার ১১ বছর যাবত এই যজ্ঞের আয়োজন করছি এবং এই যজ্ঞ প্রতিবছর অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব তো সবার’ তাই তো দলমত-ধর্ম-নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ এই যজ্ঞে আসছেন। যেটা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়। আমি যেমন চুয়াডাঙ্গাকে ভালোবাসি, ঠিক তেমনি চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসী আমার সকল সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করে চলেছে। আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র একজন কর্মী হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গার গণমানুষের অনুরোধে এ জেলার উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। আর যতদিন বেঁচে থাকব, চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গাসহ এ জেলার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে তাদের কল্যাণেই কাজ করে যাবো।’

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এফবিসিসিআই-এর সাবেক সহসভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও তাঁর পরিবারবর্গ প্রতিবছর এই মহানামযজ্ঞের আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত রোববার রাত সাড়ে ১১টায় মঙ্গলঘট স্থাপন ও সংকল্পযাত্রা করে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে ঘটে জল নিয়ে শুভ অধিবাসের মধ্যদিয়ে এই যজ্ঞ শুরু হয়। স্বর্গীয় দোয়ারকা দাস আগরওয়ালা ও স্বর্গীয় পান্না দেবী এবং স্বর্গীয় তারা দেবীর স্মরণে শুরু হওয়া এই মহানামযজ্ঞ চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। শেষ দিনে ভোগ আরতি ও প্রসাদ বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এই যজ্ঞানুষ্ঠান।

চুয়াডাঙ্গার আগরওয়ালা পরিবারগুলোর পক্ষে মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করছেন পিণ্টু কুমার আগরওয়ালা, পবিত্র কুমার আগরওয়ালা ও নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালা। এই মহানামযজ্ঞে সিআইপি দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বাবা অমিয় প্রসাদ আগরওয়ালাসহ আগরওয়ালা পরিবারের সকলে দেশ মাতৃকা ও বিশ্ব জননীর সকল সন্তানের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা মত্ত আছেন।
উল্লেখ্য, ২৪ প্রহরব্যাপী অখন্ড শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানটি সফল করতে ও যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও দিলীপ কুমার আগরওয়ালার স্পেশাল ফোর্স যজ্ঞস্থলে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে যাচ্ছে। এছাড়া সকল ভক্তবৃন্দ যেন সুষ্ঠুভাবে প্রসাদ গ্রহণ করতে পারে, সেই জন্য সকল স্বেচ্ছাসেবকদেরকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে সচেতন করে দেয়া হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

এখানে সব ধর্মের মানুষেরই সমাগম অসাম্প্রদায়িক চেতনার ম্যাসেজ দেয়

আপলোড টাইম : ০৮:১৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২

দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে অনুষ্ঠানটি সার্থক করে তোলার জন্য সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ : বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাঁশির সুরে আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে চুয়াডাঙ্গার পান্না সিনেমার হল চত্বরে চলছে শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞ ও অষ্টকালীন লীলা কীর্তন। বাবু দিলীপ কুমারসহ চুয়াডাঙ্গার আগরওয়ালা পরিবারের আয়োজনে ১১তম বার্ষিকী ২৪ প্রহরব্যাপী অখণ্ড মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানে উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে ফুটে উঠেছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও উৎসবের আমেজ। একদিকে যেমন চলছে হরেনাম হরেনাম হরেমৈব কেবলম সুরে মহানামযজ্ঞ, ঠিক তেমনি অপরদিকে হরদম চলছে আপ্যায়ন। চুয়াডাঙ্গা পান্না সিনেমাহল প্রাঙ্গণের খোলামেলা পরিবেশে প্রতিদিনই সৃষ্টি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এক মহামিলন মেলা। যা চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।

আয়োজকরা বলেছেন, অশান্ত পৃথিবীর অশনি সংকেত শঙ্কিত করে তুলেছে সবাইকে, হিংসা-বিদ্বেষ আর সংঘাতের প্রতিচ্ছবি সর্বত্রই। অধর্ম আর কুসংস্কারের অনিশ্চিত অন্ধকারে নিমজ্জিত আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত। তাই যন্ত্রণাক্লিষ্ট ও ত্রিতাপদদ্ধ এ অসহায় মানুষের উদ্ধারকল্পে মুক্তির দূতরূপে আর্বিভূত হয়ে মহাবতারী শ্রী শ্রী গৌর সুন্দর লীলাচ্ছলে বিলিয়ে ছিলেন বিশ্ব শান্তি ও মুক্তির মহামন্ত্র শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানাম সংকীর্তন।

এদিকে, দেশ মাতৃকা ও বিশ্ব জননীর সকল সন্তানের মঙ্গল কামনায় চুয়াডাঙ্গায় পান্না সিনেমাহল প্রাঙ্গণে ১১তম বার্ষিকী ২৪ প্রহরব্যাপী অখণ্ড শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানের তৃতীয় দিনে ভক্ত-অনুরাগী ও দশনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে পা ফেলার জায়গা ছিল না।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান ও লীলা কীর্তন পরিদর্শন করেন। এসময় পুলিশ সুপারসহ আগত অতিথিদের স্বাগত জানান বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।

এসময় পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নামযজ্ঞ হলো স্রষ্টাকে ডাকা বা আহ্বান করা। আর সৃষ্টিকর্তাকে সবসময় আহ্বান করা হয়, মনে ধারণ করা হয়, অন্তরে ধারণ করা হয়। আমাদের প্রতিটি ধর্মেই এরকম উদ্যাপন থাকে। স্রষ্টাকে খুশি করতে আমরা বিশেষভাবে সমর্পিত হয়ে তার প্রতি প্রার্থনা করি নিজের ও এই পৃথিবীর সকল মানুষের কল্যাণের জন্য। আমরা মুসলিম ধর্মে যেমন একসাথে ইবাদত করি, ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে সমাজকে সচেতন করেন আমাদের আলেম-উলামারা। ঠিক তেমনি দিলীপ দাদার আয়োজনে হিন্দু ধর্মের এই যজ্ঞ অনুষ্ঠান সমাজ সচেতনসহ অসাম্প্রায়িক চেতনার বাণী ছড়িয়ে দিচ্ছে। এখানে এসে সব ধর্মের মানুষেরই সমাগম দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র সত্যিই সারা দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনার ম্যাসেজ দেয়। এখানে এসে দেখলাম হিন্দু-মুসলিম সবাই একসঙ্গে বসে খাচ্ছেন, হাত হাত লাগিয়ে যজ্ঞের কাজ সম্পাদন করছেন। আর এতেই যেমন ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে উঠছে। তেমনি দেশীয় কৃষ্টি-কালচারেরও চর্চা হচ্ছে।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা যে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে আছি, এই মাটির পিছনে যার কথা না বললেই নই। তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী ও মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর আহ্বান ছিল দলমত নির্বিশেষে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষতা। বঙ্গবন্ধুর সেই চেতনা তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সবার মাঝে তুলে ধরেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই চেতনা আমাদের চুয়াডাঙ্গাতে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা দাদা সবার মাঝে তুলে ধরছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আর এরকম আয়োজন বর্তমানে সমাজে সত্যিই একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ম্যাসেজ দেয় এবং গড়ে ওঠে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। দিলীপ কুমার আগরওয়ালা দাদা বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে যেভাবে লালন করে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদেরও উচিৎ এই চেতনাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মতর প্রবাহ রাখা।’

মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজক ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান পরিচালক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে অনুষ্ঠানটি সার্থক করে তোলার জন্য পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও চুয়াডাঙ্গার সকল স্তরের মানুষের কাছে আমি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছিলাম। ভগবানের কৃপায় সবাই আমাকে সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের প্রতি আমি কৃজ্ঞত। তিনি পুলিশের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এই যজ্ঞস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য পাঠিয়েছেন। অসাম্প্রাদায়িক চেতনা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তুলতে আমি ও আমার ১১ বছর যাবত এই যজ্ঞের আয়োজন করছি এবং এই যজ্ঞ প্রতিবছর অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব তো সবার’ তাই তো দলমত-ধর্ম-নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ এই যজ্ঞে আসছেন। যেটা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়। আমি যেমন চুয়াডাঙ্গাকে ভালোবাসি, ঠিক তেমনি চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসী আমার সকল সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করে চলেছে। আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র একজন কর্মী হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গার গণমানুষের অনুরোধে এ জেলার উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। আর যতদিন বেঁচে থাকব, চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গাসহ এ জেলার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে তাদের কল্যাণেই কাজ করে যাবো।’

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এফবিসিসিআই-এর সাবেক সহসভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও তাঁর পরিবারবর্গ প্রতিবছর এই মহানামযজ্ঞের আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত রোববার রাত সাড়ে ১১টায় মঙ্গলঘট স্থাপন ও সংকল্পযাত্রা করে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে ঘটে জল নিয়ে শুভ অধিবাসের মধ্যদিয়ে এই যজ্ঞ শুরু হয়। স্বর্গীয় দোয়ারকা দাস আগরওয়ালা ও স্বর্গীয় পান্না দেবী এবং স্বর্গীয় তারা দেবীর স্মরণে শুরু হওয়া এই মহানামযজ্ঞ চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। শেষ দিনে ভোগ আরতি ও প্রসাদ বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এই যজ্ঞানুষ্ঠান।

চুয়াডাঙ্গার আগরওয়ালা পরিবারগুলোর পক্ষে মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করছেন পিণ্টু কুমার আগরওয়ালা, পবিত্র কুমার আগরওয়ালা ও নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালা। এই মহানামযজ্ঞে সিআইপি দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বাবা অমিয় প্রসাদ আগরওয়ালাসহ আগরওয়ালা পরিবারের সকলে দেশ মাতৃকা ও বিশ্ব জননীর সকল সন্তানের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা মত্ত আছেন।
উল্লেখ্য, ২৪ প্রহরব্যাপী অখন্ড শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানটি সফল করতে ও যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও দিলীপ কুমার আগরওয়ালার স্পেশাল ফোর্স যজ্ঞস্থলে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে যাচ্ছে। এছাড়া সকল ভক্তবৃন্দ যেন সুষ্ঠুভাবে প্রসাদ গ্রহণ করতে পারে, সেই জন্য সকল স্বেচ্ছাসেবকদেরকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে সচেতন করে দেয়া হয়েছে।