ইপেপার । আজ বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

ইউয়লো কিং জাতের মাল্টা বাগান পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত ডিআইজি হাসানুজ্জামান

জীবননগরের বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাল্টা চাষ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩২:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

মিঠুন মাহমুদ:
ফলের মধ্যে মাল্টা অন্যতম সুস্বাদু। আবহাওয়া অনুকূল ও উপযোগী মাটির কারণে জীবননগরের বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাল্টা চাষ। বছরের বিভিন্ন সময় এসব মাল্টা বাগানে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। জীবননগর উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা সজল আহম্মেদের মাল্টা বাগান পরিদর্শন করেছেন খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) মো. হাসানুজ্জামান।

জীবননগর উপজেলার মানিকপুর গ্রামের সফল কৃষি উদ্যোক্তা সজল আহমেদ ২০১৮ সালে বাণিজ্যিকভাবে ইউয়লো জাতের মাল্টা চাষ শুরু করেন। ভারতের বিপুল মজুমদার নামের এক ব্যক্তির নিকট থেকে তিনি এ জাতের মাল্টার ৫৭টি ডাল সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে ডালগুলো অন্য গাছের সাথে কলম পদ্ধতির মাধ্যমে ২৫০টি চারা তৈরি করেন। বাগানে লাগানোর পর ৬৯টি চারা মারা গেলেও ১৮০টির মতো গাছে মাল্টার ফলন হচ্ছে। রোপণের এক বছর পর থেকেই এসব গাছে অল্প পরিমাণে ফুল আসে। প্রত্যেকটি গাছে কিছু ফলও ধরে। গাছগুলো পরিণত হতে থাকলে ফুল ও ফল বেশি ধরতে থাকে।

সজল আহম্মেদ বলেন, মার্চ মাসে গাছে ফুল আসলেও ফল বাজারে বিক্রির উপযুক্ত হয় নভেম্বর মাস থেকে। মাল্টার গায়ের রঙ কাঁচায় গাঢ়সবুজ ও পাঁকলে বাইরের ও ভিতরের রঙ গাঢ় হলুদ। মাল্টা মিষ্টি, সুস্বাদু ও রসালো। এ জাতের মাল্টা চাষে খরচ তুলনামূলক কম। নিয়মিত পরিচর্যা, সার, কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় অল্প পরিমাণে। এ মৌসুমে প্রতিটি বড় গাছ থেকে প্রায় ২০০ কেজি ও ছোট গাছ থেকে ১০ কেজি করে মাল্টা সংগ্রহ করা যাবে। প্রতি কেজি মাল্টার পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে। ঢাকা, সাভার গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই মাল্টা বাগান তাঁকে স্বাবলম্বী করেছে।

এদিকে, বাগান পরিদর্শন শেষে খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেশের মাটিতে মাল্টা চাষ হবে, এটা আমরা কখনও ভাবতে পারিনি। সজল আহম্মেদের মাল্টা বাগানের গাছে মাল্টা ফলে ভরে গেছে। এ ধরনের বাগান আমি কোথাও দেখিনি। সজল আহম্মেদের মতো দেশে যে সমস্থ তরুণরা আছে, তারা যদি উদ্যোগ নিয়ে এ ধরনের ফলের বাগান তৈরি করে, তাহলে আমাদের দেশ আরও উন্নত হবে।’

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে মাল্টা চাষ করে সফলতা পাওয়া সম্ভব, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন জীবননগর উপজেলার তরুণ কৃষক সজল আহম্মেদ। এ অঞ্চলের উৎপাদিত মাল্টার বাজারে চাহিদা রয়েছে। আমরা চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিকভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ মৌসুমে প্রায় ২ হাজার ১০০টি গাছ থেকে প্রায় ৫৫ হাজার কেজি মাল্টা উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ইউয়লো কিং জাতের মাল্টা বাগান পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত ডিআইজি হাসানুজ্জামান

জীবননগরের বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাল্টা চাষ

আপলোড টাইম : ১১:৩২:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

মিঠুন মাহমুদ:
ফলের মধ্যে মাল্টা অন্যতম সুস্বাদু। আবহাওয়া অনুকূল ও উপযোগী মাটির কারণে জীবননগরের বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাল্টা চাষ। বছরের বিভিন্ন সময় এসব মাল্টা বাগানে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। জীবননগর উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা সজল আহম্মেদের মাল্টা বাগান পরিদর্শন করেছেন খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) মো. হাসানুজ্জামান।

জীবননগর উপজেলার মানিকপুর গ্রামের সফল কৃষি উদ্যোক্তা সজল আহমেদ ২০১৮ সালে বাণিজ্যিকভাবে ইউয়লো জাতের মাল্টা চাষ শুরু করেন। ভারতের বিপুল মজুমদার নামের এক ব্যক্তির নিকট থেকে তিনি এ জাতের মাল্টার ৫৭টি ডাল সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে ডালগুলো অন্য গাছের সাথে কলম পদ্ধতির মাধ্যমে ২৫০টি চারা তৈরি করেন। বাগানে লাগানোর পর ৬৯টি চারা মারা গেলেও ১৮০টির মতো গাছে মাল্টার ফলন হচ্ছে। রোপণের এক বছর পর থেকেই এসব গাছে অল্প পরিমাণে ফুল আসে। প্রত্যেকটি গাছে কিছু ফলও ধরে। গাছগুলো পরিণত হতে থাকলে ফুল ও ফল বেশি ধরতে থাকে।

সজল আহম্মেদ বলেন, মার্চ মাসে গাছে ফুল আসলেও ফল বাজারে বিক্রির উপযুক্ত হয় নভেম্বর মাস থেকে। মাল্টার গায়ের রঙ কাঁচায় গাঢ়সবুজ ও পাঁকলে বাইরের ও ভিতরের রঙ গাঢ় হলুদ। মাল্টা মিষ্টি, সুস্বাদু ও রসালো। এ জাতের মাল্টা চাষে খরচ তুলনামূলক কম। নিয়মিত পরিচর্যা, সার, কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় অল্প পরিমাণে। এ মৌসুমে প্রতিটি বড় গাছ থেকে প্রায় ২০০ কেজি ও ছোট গাছ থেকে ১০ কেজি করে মাল্টা সংগ্রহ করা যাবে। প্রতি কেজি মাল্টার পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে। ঢাকা, সাভার গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই মাল্টা বাগান তাঁকে স্বাবলম্বী করেছে।

এদিকে, বাগান পরিদর্শন শেষে খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেশের মাটিতে মাল্টা চাষ হবে, এটা আমরা কখনও ভাবতে পারিনি। সজল আহম্মেদের মাল্টা বাগানের গাছে মাল্টা ফলে ভরে গেছে। এ ধরনের বাগান আমি কোথাও দেখিনি। সজল আহম্মেদের মতো দেশে যে সমস্থ তরুণরা আছে, তারা যদি উদ্যোগ নিয়ে এ ধরনের ফলের বাগান তৈরি করে, তাহলে আমাদের দেশ আরও উন্নত হবে।’

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে মাল্টা চাষ করে সফলতা পাওয়া সম্ভব, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন জীবননগর উপজেলার তরুণ কৃষক সজল আহম্মেদ। এ অঞ্চলের উৎপাদিত মাল্টার বাজারে চাহিদা রয়েছে। আমরা চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিকভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ মৌসুমে প্রায় ২ হাজার ১০০টি গাছ থেকে প্রায় ৫৫ হাজার কেজি মাল্টা উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।