ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল মাদ্রাসাছাত্রী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামে রাতের আধারে ঘটা করে বাল্যবিবাহের আয়োজন ভেস্তে দিল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসন। বিয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও ঠিক কবুলের আগ মুুহূর্তে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিদের্শে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত বন্ধ করলেন বিয়ে। গ্রাম পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভৌ-দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে গেল বরসহ যাত্রী ও তিতুদহ ইউনিয়নের আলোজিত কাজি আবু বক্কর। এদিকে, বাল্যবিবাহ বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের তড়িৎ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের ফার্মপাড়ার খোরশেদ আলমের মেয়ে দর্শনার একটি মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে আবুল হোসেনের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিয়ে উপলক্ষে কনের বাড়িতে সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। মাইক্রো গাড়ি সাজিয়ে বরযাত্রীসহ বিয়ে করতে আসে বর। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুুহূর্তে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হন তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৫-৬ জন গ্রাম পুলিশ। গ্রাম পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে বরসহ যাত্রী ও কাজি আবু বক্কর ভৌ-দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে যান। এসময় গ্রামবাসী বিয়ে বাড়ির গেট, প্যান্ডেলসহ অন্যান্য আয়োজন ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে কনের পিতা তাঁর মেয়েকে ১৮ বছর পূর্ণ না হলে বিয়ে দিবেন না মর্মে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেন।

এ বিষয়ে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জিয়াউর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের সদস্যরা বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বিয়ের সকল আয়োজন প- করে দেয় এবং গ্রাম পুলিশ দেখে বরযাত্রীরা পালিয়ে যায়। কনের পিতা মৌখিকভাবে মেয়েকে আর বিয়ে দিবেন না মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হলে স্যারের নিদের্শে বিয়ে বাড়িতে গ্রাম পুলিশ পাহারা রাখা হয়েছে। যাতে রাতের আধারে পুনরায় চুরি করে বিয়ে দিতে না পারে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভুঁইয়া বলেন, তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামে বাল্যবিবাহ হচ্ছে, এমন সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হযেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলাতে কোনো বাল্যবিবাহ হতে দেওয়া হবে না। রাষ্ট্রের আইন সবাইকে মানতে হবে। সরকার মেয়েদের সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। তিনি অভিভাবকের উদ্দেশে বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে না দিয়ে স্কুলে পাঠান। লেখাপড়ার খরচ সরকার বহন করবে। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল মাদ্রাসাছাত্রী

আপলোড টাইম : ১০:০৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২

প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামে রাতের আধারে ঘটা করে বাল্যবিবাহের আয়োজন ভেস্তে দিল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসন। বিয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও ঠিক কবুলের আগ মুুহূর্তে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিদের্শে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত বন্ধ করলেন বিয়ে। গ্রাম পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভৌ-দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে গেল বরসহ যাত্রী ও তিতুদহ ইউনিয়নের আলোজিত কাজি আবু বক্কর। এদিকে, বাল্যবিবাহ বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের তড়িৎ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের ফার্মপাড়ার খোরশেদ আলমের মেয়ে দর্শনার একটি মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে আবুল হোসেনের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিয়ে উপলক্ষে কনের বাড়িতে সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। মাইক্রো গাড়ি সাজিয়ে বরযাত্রীসহ বিয়ে করতে আসে বর। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুুহূর্তে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হন তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৫-৬ জন গ্রাম পুলিশ। গ্রাম পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে বরসহ যাত্রী ও কাজি আবু বক্কর ভৌ-দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে যান। এসময় গ্রামবাসী বিয়ে বাড়ির গেট, প্যান্ডেলসহ অন্যান্য আয়োজন ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে কনের পিতা তাঁর মেয়েকে ১৮ বছর পূর্ণ না হলে বিয়ে দিবেন না মর্মে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেন।

এ বিষয়ে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জিয়াউর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের সদস্যরা বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বিয়ের সকল আয়োজন প- করে দেয় এবং গ্রাম পুলিশ দেখে বরযাত্রীরা পালিয়ে যায়। কনের পিতা মৌখিকভাবে মেয়েকে আর বিয়ে দিবেন না মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হলে স্যারের নিদের্শে বিয়ে বাড়িতে গ্রাম পুলিশ পাহারা রাখা হয়েছে। যাতে রাতের আধারে পুনরায় চুরি করে বিয়ে দিতে না পারে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভুঁইয়া বলেন, তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামে বাল্যবিবাহ হচ্ছে, এমন সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হযেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলাতে কোনো বাল্যবিবাহ হতে দেওয়া হবে না। রাষ্ট্রের আইন সবাইকে মানতে হবে। সরকার মেয়েদের সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। তিনি অভিভাবকের উদ্দেশে বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে না দিয়ে স্কুলে পাঠান। লেখাপড়ার খরচ সরকার বহন করবে। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।