ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

আবারো ভৈরব নদীতে নির্মাণ করা হলো বাঁশের সাঁকো

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২৬:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২
  • / ২১ বার পড়া হয়েছে

সালিকিন মিয়া সাগর: দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামে প্রবেশের একটি ব্রিজের অভাবে কয়েক যুগ ধরে ভৈরব নদীতে বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে পাঁচ গ্রামের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। সেতুটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুনরায় বাঁশ কাঠ দিয়ে নতুন করে নির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ওই স্থানে গড়ে ওঠেনি গ্রামবাসীর কাক্সিক্ষত একটি সেতু।

জানা গেছে, পাটাচোরা গ্রামটিতে রয়েছে একটি মাধ্যমিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গ্রামের তিন দিক দিয়ে মাথাভাঙ্গা ভৈরব নদী বয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে পাটাচোরা গ্রামবাসীর উদ্যোগে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় ভৈরব নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। গ্রামটির তিন দিক দিয়ে মাথাভাঙ্গা ভৈরব নদী বয়ে যাওয়ায় ওই গ্রামের যেতে হলে দামুড়হুদা সদর অথবা কার্পাসডাঙ্গা ১০ কিলোমিটার ঘুরে পাটাচোরা গ্রামে যেতে হতো। উপজেলার রঘুনাথপুর, সুবলপুর, বাস্তপুর, আমডাঙ্গা, কাঞ্চনতলা কেসমতপুর গ্রামগুলো ভৈরব মাথাভাঙ্গা নদীর তীরবর্তী কিলোমিটারের মধ্যে হওয়ায় উক্ত গ্রামগুলোর ছাত্রছাত্রীরা পাটাচোরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে থাকে।

বিদ্যালয়টিতে প্রায় সাড়ে ৫০০ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ ছাত্রছাত্রী মাথাভাঙ্গাভৈরব নদের অপর পাড়ের। ২০১০ সালে ওই এলাকার স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে গ্রামের মৃত গোলাম রহমান উদ্যোগ নিয়ে প্রায় লাখ টাকা ব্যয় করে গ্রামবাসী বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে। সেতুটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবুর পরামর্শে সম্প্রতি দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের অর্থায়নে ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী প্রায় লাখ টাকা ব্যয়ে নতুনভাবে বাঁশ কাঠ দিয়ে পুনরায় সাঁকোটি নির্মাণ করে দেন। এর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।

গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজাহান আলী জানান, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর অর্ধেকের বেশি ভৈরব মাথাভাঙ্গা নদীর অপর পাড়ের। আগে নৌকায় পারাপার হতো তাতে প্রায় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটতো। দুর্ঘটনা এড়াতে গ্রামের মরহুম গোলাম রহমানের উদ্যোগে গ্রামবাসী প্রায় লাখ টাকা ব্যয় করে বাশের সাঁকো নির্মাণ করে। এবং নদীর অপর পাড়ে বিদ্যালয়ের অর্থে সড়কের জন্য কাঠা জমি ক্রয় করা হয়। চুয়াডাঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগরের নিকট স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানানো হলে তিনি আশ্বাস দিলেও কোনো কাজ হয়নি। দীর্ঘ প্রায় একযুগ পেরিয়ে গেলেও ওই বাঁশের সেতু দিয়ে চলাচল করছে। সাঁকোটি না হলে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী অর্ধেকে নেমে আসতো।

দামুড়হুদা সদর ইউপি সাবেক মেম্বার ওই গ্রামের কুতুব উদ্দীন মোশারফ হোসেন মুসা জানান, প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে পাঁচ গ্রামের সহস্রাধিক লোক যাতায়াত করে থাকে। বর্তমান সরকারের আমলে আমাদের গ্রামের মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শুধুমাত্র ভৈরব নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা হলে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আমরা স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা আসনের সংসদ আলী আজগার টগরের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি।

দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে সাঁকোটি নির্মাণ করায় তারা অল্প সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারবে। তাদের আর অনেক রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হবে না। এতে গ্রামে যাতায়াতকারীদের অনেক সময় বেঁচে যাবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আবারো ভৈরব নদীতে নির্মাণ করা হলো বাঁশের সাঁকো

আপলোড টাইম : ০৮:২৬:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২

সালিকিন মিয়া সাগর: দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামে প্রবেশের একটি ব্রিজের অভাবে কয়েক যুগ ধরে ভৈরব নদীতে বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে পাঁচ গ্রামের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। সেতুটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুনরায় বাঁশ কাঠ দিয়ে নতুন করে নির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ওই স্থানে গড়ে ওঠেনি গ্রামবাসীর কাক্সিক্ষত একটি সেতু।

জানা গেছে, পাটাচোরা গ্রামটিতে রয়েছে একটি মাধ্যমিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গ্রামের তিন দিক দিয়ে মাথাভাঙ্গা ভৈরব নদী বয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে পাটাচোরা গ্রামবাসীর উদ্যোগে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় ভৈরব নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। গ্রামটির তিন দিক দিয়ে মাথাভাঙ্গা ভৈরব নদী বয়ে যাওয়ায় ওই গ্রামের যেতে হলে দামুড়হুদা সদর অথবা কার্পাসডাঙ্গা ১০ কিলোমিটার ঘুরে পাটাচোরা গ্রামে যেতে হতো। উপজেলার রঘুনাথপুর, সুবলপুর, বাস্তপুর, আমডাঙ্গা, কাঞ্চনতলা কেসমতপুর গ্রামগুলো ভৈরব মাথাভাঙ্গা নদীর তীরবর্তী কিলোমিটারের মধ্যে হওয়ায় উক্ত গ্রামগুলোর ছাত্রছাত্রীরা পাটাচোরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে থাকে।

বিদ্যালয়টিতে প্রায় সাড়ে ৫০০ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ ছাত্রছাত্রী মাথাভাঙ্গাভৈরব নদের অপর পাড়ের। ২০১০ সালে ওই এলাকার স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে গ্রামের মৃত গোলাম রহমান উদ্যোগ নিয়ে প্রায় লাখ টাকা ব্যয় করে গ্রামবাসী বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে। সেতুটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবুর পরামর্শে সম্প্রতি দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের অর্থায়নে ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী প্রায় লাখ টাকা ব্যয়ে নতুনভাবে বাঁশ কাঠ দিয়ে পুনরায় সাঁকোটি নির্মাণ করে দেন। এর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।

গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজাহান আলী জানান, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর অর্ধেকের বেশি ভৈরব মাথাভাঙ্গা নদীর অপর পাড়ের। আগে নৌকায় পারাপার হতো তাতে প্রায় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটতো। দুর্ঘটনা এড়াতে গ্রামের মরহুম গোলাম রহমানের উদ্যোগে গ্রামবাসী প্রায় লাখ টাকা ব্যয় করে বাশের সাঁকো নির্মাণ করে। এবং নদীর অপর পাড়ে বিদ্যালয়ের অর্থে সড়কের জন্য কাঠা জমি ক্রয় করা হয়। চুয়াডাঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগরের নিকট স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানানো হলে তিনি আশ্বাস দিলেও কোনো কাজ হয়নি। দীর্ঘ প্রায় একযুগ পেরিয়ে গেলেও ওই বাঁশের সেতু দিয়ে চলাচল করছে। সাঁকোটি না হলে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী অর্ধেকে নেমে আসতো।

দামুড়হুদা সদর ইউপি সাবেক মেম্বার ওই গ্রামের কুতুব উদ্দীন মোশারফ হোসেন মুসা জানান, প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে পাঁচ গ্রামের সহস্রাধিক লোক যাতায়াত করে থাকে। বর্তমান সরকারের আমলে আমাদের গ্রামের মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শুধুমাত্র ভৈরব নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা হলে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আমরা স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা আসনের সংসদ আলী আজগার টগরের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি।

দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে সাঁকোটি নির্মাণ করায় তারা অল্প সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারবে। তাদের আর অনেক রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হবে না। এতে গ্রামে যাতায়াতকারীদের অনেক সময় বেঁচে যাবে।