ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় এক দফা দাবিতে নার্সদের দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি

হাসপাতালে সেবা না পেয়ে দুর্ভোগ, সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১৮ বার পড়া হয়েছে

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে সব ক্যাডার প্রত্যাহার করে অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়নের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় নার্সরা দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি পালন করেছেন। গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যস্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স, চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইন্সট্রাক্টর ও শিক্ষার্থীরা। কর্মবিরতি চলা এই পাঁচ ঘণ্টায় হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পুনরায় ব্যহত হয়। রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হন। এতে নার্সদের কর্মবিরতি কর্মসূচি রোগী, তাদের স্বজন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচিত হয়।
কর্মবিরতির কারণে বিভিন্ন ওয়ার্ডের স্বাভাবিক সেবা বন্ধ ছিল, যদিও জরুরি বিভাগ খোলা রাখা হয়েছিল। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন বিশ্বজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন ‘ আগের দিন সকালে মেয়েকে ভর্তির পর ৩ ঘণ্টা পার হলেও ওয়ার্ডে কোনো সেবা দেয়া হয়নি। আজ (গতকাল) দ্বিতীয় দিনেও সকাল থেকে মেয়েকে কোনো সেবা দেয়া হয়নি। নার্সদের অনুপস্থিতির কারণে আমরা খুব কষ্টে আছি।’


হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসার্ধীন ছিলেন আনারুল ইসলাম নামের এক রোগী। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চার দিন ভর্তি রয়েছেন। এরমধ্যে পরপর দুদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোনো নার্স আসেনি। ওয়ার্ডে নার্সরা না থাকায় ওই সময়ের মধ্যে নতুন ভর্তি হওয়া রোগীরা সবথেকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন। কারণ চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাদের দুপুর পর্যস্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদের চুয়াডাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক রেহেনা বেগম বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। আজকের কর্মসূচিতে আমরা পাঁচ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছি। তবে জরুরি প্রয়োজনে আমাদের একটি পৃথক টিম প্রস্তুত রয়েছে।’ তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তিন দিন আমাদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে। দাবি আদায় না হলে রোববার থেকে নতুন কর্মসূচি নিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’


এদিকে, রোগী ও তাঁদের স্বজনরা এ কর্মবিরতির ফলে হাসপাতালের সেবার অবনতির জন্য নার্সদের সমালোচনা করেছেন। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর এক স্বজন মন্তব্য করেছেন, ‘এভাবে যদি কাজ বন্ধ করে রাখা হয়, তাহলে এই শিশুদের কী হবে? রোগীদের চিকিৎসা বঞ্চিত করে কোনো আন্দোলন হতে পারে না।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন জানান, ‘নার্সদের দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতির কারণে রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়েছে। তবে জরুরি রোগীদের জন্য সেবার একটি বিকল্প টিম ছিল, তবুও চিকিৎসার চাপ সামলাতে আমাদের কষ্ট হয়েছে।’ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ জানিয়েছে, দাবি পূরণ না হলে তিন দিন তাদের কর্মসূচি স্থগিত রাখা হলেও পরবর্তীতে তারা আবারো আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় এক দফা দাবিতে নার্সদের দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি

হাসপাতালে সেবা না পেয়ে দুর্ভোগ, সমালোচনা

আপলোড টাইম : ০৯:৩২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে সব ক্যাডার প্রত্যাহার করে অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়নের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় নার্সরা দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি পালন করেছেন। গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যস্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স, চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইন্সট্রাক্টর ও শিক্ষার্থীরা। কর্মবিরতি চলা এই পাঁচ ঘণ্টায় হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পুনরায় ব্যহত হয়। রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হন। এতে নার্সদের কর্মবিরতি কর্মসূচি রোগী, তাদের স্বজন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচিত হয়।
কর্মবিরতির কারণে বিভিন্ন ওয়ার্ডের স্বাভাবিক সেবা বন্ধ ছিল, যদিও জরুরি বিভাগ খোলা রাখা হয়েছিল। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন বিশ্বজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন ‘ আগের দিন সকালে মেয়েকে ভর্তির পর ৩ ঘণ্টা পার হলেও ওয়ার্ডে কোনো সেবা দেয়া হয়নি। আজ (গতকাল) দ্বিতীয় দিনেও সকাল থেকে মেয়েকে কোনো সেবা দেয়া হয়নি। নার্সদের অনুপস্থিতির কারণে আমরা খুব কষ্টে আছি।’


হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসার্ধীন ছিলেন আনারুল ইসলাম নামের এক রোগী। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চার দিন ভর্তি রয়েছেন। এরমধ্যে পরপর দুদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোনো নার্স আসেনি। ওয়ার্ডে নার্সরা না থাকায় ওই সময়ের মধ্যে নতুন ভর্তি হওয়া রোগীরা সবথেকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন। কারণ চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাদের দুপুর পর্যস্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদের চুয়াডাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক রেহেনা বেগম বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। আজকের কর্মসূচিতে আমরা পাঁচ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছি। তবে জরুরি প্রয়োজনে আমাদের একটি পৃথক টিম প্রস্তুত রয়েছে।’ তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তিন দিন আমাদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে। দাবি আদায় না হলে রোববার থেকে নতুন কর্মসূচি নিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’


এদিকে, রোগী ও তাঁদের স্বজনরা এ কর্মবিরতির ফলে হাসপাতালের সেবার অবনতির জন্য নার্সদের সমালোচনা করেছেন। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর এক স্বজন মন্তব্য করেছেন, ‘এভাবে যদি কাজ বন্ধ করে রাখা হয়, তাহলে এই শিশুদের কী হবে? রোগীদের চিকিৎসা বঞ্চিত করে কোনো আন্দোলন হতে পারে না।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন জানান, ‘নার্সদের দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতির কারণে রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়েছে। তবে জরুরি রোগীদের জন্য সেবার একটি বিকল্প টিম ছিল, তবুও চিকিৎসার চাপ সামলাতে আমাদের কষ্ট হয়েছে।’ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ জানিয়েছে, দাবি পূরণ না হলে তিন দিন তাদের কর্মসূচি স্থগিত রাখা হলেও পরবর্তীতে তারা আবারো আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।