ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

স্বাভাবিক হয়েছে নগদের কার্যক্রম, তবে রিফান্ড পাননি অনেক এজেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে

সিআইডির অভিযানে আটক দুজন এখনো বাড়ি ফেরেনি, রহস্যের জট!

চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলেও অনেকে এখনো রিফান্ড পাননি বলে জানা গেছে। এছাড়া নগদের ডিস্ট্রিবিউটর স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসানের অর্ন্তগত নগদ এজেন্টদের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে যে দুজনকে সিআইডি নিয়ে গেছে, তারা এখনো বাড়ি ফেরেননি বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ঢাকা থেকে সিআইডির একটি টিম এসে যে দুজনকে নিয়ে গেছে, তারা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের স্কুলপাড়ার মোতালেব মোল্লার ছেলে আরমান (২৪) ও জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারের লাল্টু বিশ্বাসের ছেলে সেতু কসমেটিক্সের প্রোপাইটার আহাম্মেদ নাদিম।

এদিকে, আরমান ও নাদিম এখনো বাড়ি না ফেরায় চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রামের চায়ের দোকানের আড্ডায় ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা করতে দেখা গেছে। এই এই আলোচনা-সমালোচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, চুয়াডাঙ্গার সন্তান স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসান রিপনের নামও বাদ যাচ্ছেনা। পত্রিকায় খবর পড়ে অনেকেই বলছেন, ‘অবৈধ স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত আছে বলেই আরমান ও নাদিমকে ছাড়া হচ্ছে না।’ আবার অনেকে বলছেন, অনলাইনে ক্রিকেট বেটিং এর নামে যে জুয়া চলে, তার কারণেও নগদের অর্ন্তগত কয়েকজন এজেন্টের অ্যাকাউন্টে এই অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে বলেও সিআইডির এই অভিযান। আবার অনেকে এই ঘটনায় মাদক কারবারিদের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে বলছেন, বড় বড় মাদক কারবারিরাও এই অস্বাভাবিক লেনদেন করতে পারে। তবে সবকিছুই তাদের আন্দাজের ওপর, কেউ কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারছেন না। এ ঘটনায় আরও একটি সূত্রে জানায়, নগদে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গাসহ এ এলাকা থেকে সর্বমোট পাঁচজনকে নিয়ে গেছে ঢাকা থেকে আসা সিআইডির টীমটি। তবে এ ব্যাপারে সিআইডির কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাই পাঁচজনের আটকসহ সব ব্যাপারেই নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এবিষয়ে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে সিআইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল ডিআইজি জাহাঙ্গীর আলম মাতব্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় সিআইডি যে অভিযান চালিয়েছে, সে বিষয়ে হেড অফিসের যে অর্গানাইজ ক্রাইম ইউনিট আছে, তারা বলতে পারবেন। আপনারা তাদের সাথে কথা বলেন।’
তবে গত পরশু সিআইডির একটি টিম ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গায় এসে অভিযান চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন পিপিএম (বার)।

এছাড়া অস্বাভাবিক লেনদেন ও সিআইডির অভিযানের বিষয়ে নগদের ডিস্ট্রিবিউটর, চুয়াডাঙ্গা শহর সংলগ্ন আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড়ের সর্দারপাড়ার আব্দুল হান্নানের ছেলে ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসান রিপনের সাথে গত মঙ্গলবার দৈনিক সময়ের সমীকরণের কথা হয়। সেসময় তিনি জানিয়েছিলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর দুই জেলা মিলিয়ে আমার ২২শ এজেন্ট রয়েছে। এতো এজেন্টের ভিড়ে গ্রাহকেরা কে কোন কাজে টাকা লেনদেন করছে, তা জানা সম্ভব নয়। একটি সংস্থা তথ্য নিয়ে নানা খোঁজখবর নিচ্ছে। আমার কাছেও বিভিন্ন বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছে। আমি তাদের তদন্তে সব ধরণের সহযোগিতা করছি। তাছাড়া আমি তো বৈধ কাগজপত্র নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করছি।’

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের ডিস্ট্রিবিউটর স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসানের অর্ন্তগত নগদ এজেন্টদের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে গত সোমবার রাতে সিআইডির একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে ও দুজনকে আটক করে নিয়ে যায়। ওইদিনই রাতেই ঢাকা থেকে আসা সিআইডির ওই টিমটি নগদের ডিস্ট্রিবিউটর স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসানের বাড়িতেও অভিযান চালায়। সেসময় স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনের ছোট ভাই রোকনুল হাসান রোকন ও চাচাতো ভাই কানন আহমেদ কানন কৌশলে বাড়ির পার্শবর্তী মাথাভাঙ্গা নদীতে নেমে সাঁতার কেটে পালিয়ে যায় বলেও জানা যায়। পরেরদিন অর্থাৎ গত মঙ্গলবার সকালে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

স্বাভাবিক হয়েছে নগদের কার্যক্রম, তবে রিফান্ড পাননি অনেক এজেন্ট

আপলোড টাইম : ০৮:০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১

সিআইডির অভিযানে আটক দুজন এখনো বাড়ি ফেরেনি, রহস্যের জট!

চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলেও অনেকে এখনো রিফান্ড পাননি বলে জানা গেছে। এছাড়া নগদের ডিস্ট্রিবিউটর স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসানের অর্ন্তগত নগদ এজেন্টদের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে যে দুজনকে সিআইডি নিয়ে গেছে, তারা এখনো বাড়ি ফেরেননি বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ঢাকা থেকে সিআইডির একটি টিম এসে যে দুজনকে নিয়ে গেছে, তারা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের স্কুলপাড়ার মোতালেব মোল্লার ছেলে আরমান (২৪) ও জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারের লাল্টু বিশ্বাসের ছেলে সেতু কসমেটিক্সের প্রোপাইটার আহাম্মেদ নাদিম।

এদিকে, আরমান ও নাদিম এখনো বাড়ি না ফেরায় চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রামের চায়ের দোকানের আড্ডায় ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা করতে দেখা গেছে। এই এই আলোচনা-সমালোচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, চুয়াডাঙ্গার সন্তান স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসান রিপনের নামও বাদ যাচ্ছেনা। পত্রিকায় খবর পড়ে অনেকেই বলছেন, ‘অবৈধ স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত আছে বলেই আরমান ও নাদিমকে ছাড়া হচ্ছে না।’ আবার অনেকে বলছেন, অনলাইনে ক্রিকেট বেটিং এর নামে যে জুয়া চলে, তার কারণেও নগদের অর্ন্তগত কয়েকজন এজেন্টের অ্যাকাউন্টে এই অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে বলেও সিআইডির এই অভিযান। আবার অনেকে এই ঘটনায় মাদক কারবারিদের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে বলছেন, বড় বড় মাদক কারবারিরাও এই অস্বাভাবিক লেনদেন করতে পারে। তবে সবকিছুই তাদের আন্দাজের ওপর, কেউ কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারছেন না। এ ঘটনায় আরও একটি সূত্রে জানায়, নগদে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গাসহ এ এলাকা থেকে সর্বমোট পাঁচজনকে নিয়ে গেছে ঢাকা থেকে আসা সিআইডির টীমটি। তবে এ ব্যাপারে সিআইডির কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাই পাঁচজনের আটকসহ সব ব্যাপারেই নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এবিষয়ে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে সিআইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল ডিআইজি জাহাঙ্গীর আলম মাতব্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় সিআইডি যে অভিযান চালিয়েছে, সে বিষয়ে হেড অফিসের যে অর্গানাইজ ক্রাইম ইউনিট আছে, তারা বলতে পারবেন। আপনারা তাদের সাথে কথা বলেন।’
তবে গত পরশু সিআইডির একটি টিম ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গায় এসে অভিযান চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন পিপিএম (বার)।

এছাড়া অস্বাভাবিক লেনদেন ও সিআইডির অভিযানের বিষয়ে নগদের ডিস্ট্রিবিউটর, চুয়াডাঙ্গা শহর সংলগ্ন আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড়ের সর্দারপাড়ার আব্দুল হান্নানের ছেলে ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসান রিপনের সাথে গত মঙ্গলবার দৈনিক সময়ের সমীকরণের কথা হয়। সেসময় তিনি জানিয়েছিলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর দুই জেলা মিলিয়ে আমার ২২শ এজেন্ট রয়েছে। এতো এজেন্টের ভিড়ে গ্রাহকেরা কে কোন কাজে টাকা লেনদেন করছে, তা জানা সম্ভব নয়। একটি সংস্থা তথ্য নিয়ে নানা খোঁজখবর নিচ্ছে। আমার কাছেও বিভিন্ন বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছে। আমি তাদের তদন্তে সব ধরণের সহযোগিতা করছি। তাছাড়া আমি তো বৈধ কাগজপত্র নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করছি।’

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের ডিস্ট্রিবিউটর স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসানের অর্ন্তগত নগদ এজেন্টদের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে গত সোমবার রাতে সিআইডির একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে ও দুজনকে আটক করে নিয়ে যায়। ওইদিনই রাতেই ঢাকা থেকে আসা সিআইডির ওই টিমটি নগদের ডিস্ট্রিবিউটর স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনুল হাসানের বাড়িতেও অভিযান চালায়। সেসময় স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপনের ছোট ভাই রোকনুল হাসান রোকন ও চাচাতো ভাই কানন আহমেদ কানন কৌশলে বাড়ির পার্শবর্তী মাথাভাঙ্গা নদীতে নেমে সাঁতার কেটে পালিয়ে যায় বলেও জানা যায়। পরেরদিন অর্থাৎ গত মঙ্গলবার সকালে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়।