ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপকর্ম

সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্যাং লিডার আকাশ গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৯:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় হত্যা, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপকর্মের হোতা গ্যাং লিডার ইমদাদুল হক আকাশকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল সোমবার দুপুরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশের দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি এজাহারনামীয় আসামি। ওই মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ইমদাদুল হক আকাশ চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শান্তিপাড়ার ইউছুপ আলীর ছেলে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকের ক্যাডার বাহিনীর প্রধান ছিলেন এই আকাশ। হত্যা করে সাবেক সংসদ সদস্য ছেলুন জোয়ার্দ্দারের বাড়িতে আশ্রয়ে থাকার রেকর্ডের কারণে আকাশ কুখ্যাত সন্ত্রাসী হিসেবেই চুয়াডাঙ্গায় পরিচিত।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার ভোরে শহরের শান্তিপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনীর একটি টিম। ওই সময় আকাশকে আটকের পর দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি টিম চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার ইমদাদুল হক আকাশ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর শহরের গুলশান পাড়ার আল হেলাল মাধ্যমিক ইসলামিক একাডেমিতে এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান তন্ময় ওরফে তপু হত্যা, কেদারগঞ্জ বাজার এলাকার ব্যবসায়ী গোলাম হোসেন হত্যা, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলাসহ পূর্বের মোট ৬টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধ।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, হত্যা-চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হোতা এই আকাশ। তার বিরুদ্ধে আগের ৬টি মামলা রয়েছে। বর্তমানেও বেশ কয়েকটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটানায় একটি মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এবং একই সাথে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। রিমান্ডের শুনানি হবে।
গ্যাং লিডার ইমদাদুল হক আকাশকে গ্রেপ্তারের পর থানায় হস্তান্তরের খবর ছড়িয়ে পড়লে নির্যাতনের শিকার ছাত্র-ছাত্রীরাসহ উৎসুক জনতা ভিড় করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ফটকে। এসময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, জমি দখল, নির্মাণাধীন বিল্ডিংসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদাবাজিই ছিল এদের মূল কাজ। চাঁদা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিসহ চলতো অমানসিক নির্যাতন। আর এসব কিছুই হতো সাবেক এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার ও তার ভাস্তে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকের নেতৃত্বে।
এছাড়াও আকাশের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আকাশের নির্যাতনের শিকার চুয়াডাঙ্গার বেশকিছু শিক্ষার্থী থানায় চলে আসেন। এসময় এক ছাত্রী সেনাবাহিনীকে বলেন, স্যার ওর মুখের মাস্কটা একটু খুলতে বলেন, ও আমাকে বেধড়ক মারধর করেছিল। আজ হ্যান্ডক্যাপ পরা অবস্থায় আমি ওকে দেখতে চাই।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপকর্ম

সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্যাং লিডার আকাশ গ্রেপ্তার

আপলোড টাইম : ০৯:১৯:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় হত্যা, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপকর্মের হোতা গ্যাং লিডার ইমদাদুল হক আকাশকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল সোমবার দুপুরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশের দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি এজাহারনামীয় আসামি। ওই মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ইমদাদুল হক আকাশ চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শান্তিপাড়ার ইউছুপ আলীর ছেলে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকের ক্যাডার বাহিনীর প্রধান ছিলেন এই আকাশ। হত্যা করে সাবেক সংসদ সদস্য ছেলুন জোয়ার্দ্দারের বাড়িতে আশ্রয়ে থাকার রেকর্ডের কারণে আকাশ কুখ্যাত সন্ত্রাসী হিসেবেই চুয়াডাঙ্গায় পরিচিত।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার ভোরে শহরের শান্তিপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনীর একটি টিম। ওই সময় আকাশকে আটকের পর দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি টিম চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার ইমদাদুল হক আকাশ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর শহরের গুলশান পাড়ার আল হেলাল মাধ্যমিক ইসলামিক একাডেমিতে এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান তন্ময় ওরফে তপু হত্যা, কেদারগঞ্জ বাজার এলাকার ব্যবসায়ী গোলাম হোসেন হত্যা, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলাসহ পূর্বের মোট ৬টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধ।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, হত্যা-চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হোতা এই আকাশ। তার বিরুদ্ধে আগের ৬টি মামলা রয়েছে। বর্তমানেও বেশ কয়েকটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটানায় একটি মামলায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এবং একই সাথে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। রিমান্ডের শুনানি হবে।
গ্যাং লিডার ইমদাদুল হক আকাশকে গ্রেপ্তারের পর থানায় হস্তান্তরের খবর ছড়িয়ে পড়লে নির্যাতনের শিকার ছাত্র-ছাত্রীরাসহ উৎসুক জনতা ভিড় করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ফটকে। এসময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, জমি দখল, নির্মাণাধীন বিল্ডিংসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদাবাজিই ছিল এদের মূল কাজ। চাঁদা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিসহ চলতো অমানসিক নির্যাতন। আর এসব কিছুই হতো সাবেক এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার ও তার ভাস্তে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকের নেতৃত্বে।
এছাড়াও আকাশের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আকাশের নির্যাতনের শিকার চুয়াডাঙ্গার বেশকিছু শিক্ষার্থী থানায় চলে আসেন। এসময় এক ছাত্রী সেনাবাহিনীকে বলেন, স্যার ওর মুখের মাস্কটা একটু খুলতে বলেন, ও আমাকে বেধড়ক মারধর করেছিল। আজ হ্যান্ডক্যাপ পরা অবস্থায় আমি ওকে দেখতে চাই।’