ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

লাল শাকে স্বচ্ছল কৃষক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১১:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

হেলাল উদ্দীন, জয়রামপুর: লাল শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সবাই জানে। তাইতো কবি লিখেছিলেন, ডাল আর ভাত খেতে খুব ভালো লাগে, লাল শাক পাতে তুলে দাও তার আগে। এই লাল শাক চাষ করে নিজেদের ভাগ্য ফেরাচ্ছেন দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষক। অল্প খরচ এবং জমি থেকে দ্রুত উত্তোলন করা যায় এই লাল শাক। তাই জয়রামপুর গ্রামের মাঠের অধিকাংশ জমি যেন সেজেছে রক্তিম লাল শাকে।

লাল শাক চাষী মো. মমিন (২৬) বলেন, ‘আমি বিঘাখানিক লালশাক চাষ করেছি। আমার খরচ হচ্ছে ৮ হাজার টাকার মতো। বাজারে দামও ভালো, এক দফা লালশাক বিক্রি করেছি প্রায় ১৩ হাজার টাকার মতো। এখন দ্বিতীয় দফা লাল শাক চাষ করছি। এতে আরও ১০ হাজার টাকা লাভের আশা করছি।’ জয়রামপুর চায়ের দোকান মাঠের আরেক লাল শাক চাষী ছাব্বির (২৮) জানান, লাল শাক একটি খাটো আবাদ। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যায় এবং দাম যদি ভালো থাকে, ৪ থেকে ৫ টাকা আঁটি পাইকারি বিক্রি করা যায়। তাতে করে খরচের তুলনায় লাভ থাকে ভালো। লাল শাক ৪ দফা পর্যন্ত জমি থেকে সংগ্রহ করা যায়। এই লালশাক চাষে লোকসানের সম্ভাবনা খুবই কম।

জয়রামপুর আমতলা মাঠের চাষী মনিরুজ্জামান জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি অন্যান্য চাষের সাথে যৌথ লাল শাক চাষ করি, তাতে আমার উভয় ফসল ভালো হয়। এক সাথে চাষ করায় সার-পানি একই লাগে, কিন্তু অধিক লাভবান হয়। যার কারণে আমার পারিবারিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। এভাবে চাষ করে পরিবারের অধিকাংশ চাহিদা আমি মিটাতে পারছি।’

এদিকে লাল শাক চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শুধু লাল শাকই নয়, গ্রামে পড়ে থাকা অনাবাদি জমিতে পুষ্টিবাগান করার লক্ষ্যে সরকারের প্রকল্প অনুযায়ী আমি কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামের এই অনাবাদি জমি যেন গ্রামের মানুষ ফেলে না রাখে, সেই লক্ষ্যে কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন সবজির বীজ সরবরাহসহ কীভাবে অনাবাদি জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করবে, সে বিষয়ে কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। যেন গ্রামের মানুষ পুষ্টিসমৃদ্ধ শাক-সবজি চাষ আবাদ করে তারা নিজেরা নিজেদের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করে অর্থনৈতিকভাবে যেন স্বচ্ছল হতে পারে। কৃষি অফিস থেকে যেকোনো পরামর্শ নেওয়ার জন্য দামুড়হুদা কৃষি অফিস কৃষকদের জন্য সবসময় উন্মুক্ত।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

লাল শাকে স্বচ্ছল কৃষক

আপলোড টাইম : ০৮:১১:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২

হেলাল উদ্দীন, জয়রামপুর: লাল শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সবাই জানে। তাইতো কবি লিখেছিলেন, ডাল আর ভাত খেতে খুব ভালো লাগে, লাল শাক পাতে তুলে দাও তার আগে। এই লাল শাক চাষ করে নিজেদের ভাগ্য ফেরাচ্ছেন দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষক। অল্প খরচ এবং জমি থেকে দ্রুত উত্তোলন করা যায় এই লাল শাক। তাই জয়রামপুর গ্রামের মাঠের অধিকাংশ জমি যেন সেজেছে রক্তিম লাল শাকে।

লাল শাক চাষী মো. মমিন (২৬) বলেন, ‘আমি বিঘাখানিক লালশাক চাষ করেছি। আমার খরচ হচ্ছে ৮ হাজার টাকার মতো। বাজারে দামও ভালো, এক দফা লালশাক বিক্রি করেছি প্রায় ১৩ হাজার টাকার মতো। এখন দ্বিতীয় দফা লাল শাক চাষ করছি। এতে আরও ১০ হাজার টাকা লাভের আশা করছি।’ জয়রামপুর চায়ের দোকান মাঠের আরেক লাল শাক চাষী ছাব্বির (২৮) জানান, লাল শাক একটি খাটো আবাদ। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যায় এবং দাম যদি ভালো থাকে, ৪ থেকে ৫ টাকা আঁটি পাইকারি বিক্রি করা যায়। তাতে করে খরচের তুলনায় লাভ থাকে ভালো। লাল শাক ৪ দফা পর্যন্ত জমি থেকে সংগ্রহ করা যায়। এই লালশাক চাষে লোকসানের সম্ভাবনা খুবই কম।

জয়রামপুর আমতলা মাঠের চাষী মনিরুজ্জামান জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি অন্যান্য চাষের সাথে যৌথ লাল শাক চাষ করি, তাতে আমার উভয় ফসল ভালো হয়। এক সাথে চাষ করায় সার-পানি একই লাগে, কিন্তু অধিক লাভবান হয়। যার কারণে আমার পারিবারিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। এভাবে চাষ করে পরিবারের অধিকাংশ চাহিদা আমি মিটাতে পারছি।’

এদিকে লাল শাক চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শুধু লাল শাকই নয়, গ্রামে পড়ে থাকা অনাবাদি জমিতে পুষ্টিবাগান করার লক্ষ্যে সরকারের প্রকল্প অনুযায়ী আমি কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামের এই অনাবাদি জমি যেন গ্রামের মানুষ ফেলে না রাখে, সেই লক্ষ্যে কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন সবজির বীজ সরবরাহসহ কীভাবে অনাবাদি জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করবে, সে বিষয়ে কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। যেন গ্রামের মানুষ পুষ্টিসমৃদ্ধ শাক-সবজি চাষ আবাদ করে তারা নিজেরা নিজেদের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করে অর্থনৈতিকভাবে যেন স্বচ্ছল হতে পারে। কৃষি অফিস থেকে যেকোনো পরামর্শ নেওয়ার জন্য দামুড়হুদা কৃষি অফিস কৃষকদের জন্য সবসময় উন্মুক্ত।’