ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

লাখ লাখ টাকার বই অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট

মিঠুন মাহমুদ:
  • আপলোড টাইম : ১১:৪৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৪৫ বার পড়া হয়েছে

বই মানুষের মনের খোরাক যোগায়। বিশেষ করে যারা বই পড়তে ভালোবাসে, তাদের জন্য বই একটি অমূল্য সম্পদ। এক সময় জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি ছিল ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের কাছে একটি জ্ঞান অর্জনের অন্যতম কেন্দ্র। বিকেল হলেই প্রতিদিন এই লাইব্রেরির সামনে বই পড়া প্রেমিকদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন আসার পর থেকে পাবলিক লাইব্রেরির দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। সবাই বই পড়া বাদ দিয়ে ডিজিটাল জ্ঞান নিয়ে পড়ে আছে। কেউ মোবাইল ফোনে গেম খেলছে, আবার কেউ টিকটক, ইউটিউব নিয়ে ফেমাস হওয়ার চেষ্টা করছে। যার ফলে বর্তমান সময় ডিজিটাল হলেও শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

এখন আর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির দিকে মনের ভুলেও কেউ তাকায় না। অপর দিকে, সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে জীবননগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি। পাবলিক লাইব্রেরি দেখাশোনার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে একজন লোক নিয়োগ দেওয়া থাকলেও এটি অযন্ত আর অবহেলায় পড়ে আছে। লাইব্রেরিটিতে রয়েছে বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকদের লেখা, একুশের চেতনা ও মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক অসংখ্যক বইসহ বিভিন্ন ধরণের গ্রন্থ। লাখ লাখ টাকার বইগুলো লাইব্রেরির মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে, এ যেন দেখার কেউ নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে লাইব্রেরি ঘরটির খুবই জরাজীর্ণ অবস্থা। লাইব্রেরির চালার টিন ভেঙে পড়ে আছে নিচে। দরজা-জানালা নড়বড়ে অবস্থা। এছাড়া লাইব্রেরিটির সকল অবকাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে। লাইব্রেরিটির অবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে আগের মতো আর বই প্রেমীরা বই পড়তে আসেন না। এই লাইব্রেরিতে ১ হাজার ৩ শ বই আছে, যা জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে। লাইব্রেরিটির বেহাল দশার বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়নি। যে কারণে জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটি এখন সংস্কারের অভাবে বিলীন হওয়ার পথে।

বই প্রেমী কবির আল চপল বলেন, ‘আমাদের এই লাইব্রেরিটি সংস্কার না করা হলে যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। তাই আমরা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।’ বই প্রেমী ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটি এলাকার তরুণ যুবদের জন্য এক অন্যতম স্থান। বই প্রেমীরা বেঁচে থাকে বই পড়া নিয়ে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের বিশেষ আবেদন, যাতে দ্রুত পাঠাগারটি সংস্কার করার ব্যবস্থা করে।

এ ব্যাপারে জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির সভাপতি ও জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটি অন্য স্থানে নিয়ে নতুনভাবে করা হচ্ছে। লাইব্রেরিটির কাজ দ্রুত শেষ করে পুনরায় জীবননগর উপজেলার বই প্রেমী মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

লাখ লাখ টাকার বই অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট

আপলোড টাইম : ১১:৪৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১

বই মানুষের মনের খোরাক যোগায়। বিশেষ করে যারা বই পড়তে ভালোবাসে, তাদের জন্য বই একটি অমূল্য সম্পদ। এক সময় জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি ছিল ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের কাছে একটি জ্ঞান অর্জনের অন্যতম কেন্দ্র। বিকেল হলেই প্রতিদিন এই লাইব্রেরির সামনে বই পড়া প্রেমিকদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন আসার পর থেকে পাবলিক লাইব্রেরির দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। সবাই বই পড়া বাদ দিয়ে ডিজিটাল জ্ঞান নিয়ে পড়ে আছে। কেউ মোবাইল ফোনে গেম খেলছে, আবার কেউ টিকটক, ইউটিউব নিয়ে ফেমাস হওয়ার চেষ্টা করছে। যার ফলে বর্তমান সময় ডিজিটাল হলেও শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

এখন আর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির দিকে মনের ভুলেও কেউ তাকায় না। অপর দিকে, সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে জীবননগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি। পাবলিক লাইব্রেরি দেখাশোনার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে একজন লোক নিয়োগ দেওয়া থাকলেও এটি অযন্ত আর অবহেলায় পড়ে আছে। লাইব্রেরিটিতে রয়েছে বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকদের লেখা, একুশের চেতনা ও মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক অসংখ্যক বইসহ বিভিন্ন ধরণের গ্রন্থ। লাখ লাখ টাকার বইগুলো লাইব্রেরির মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে, এ যেন দেখার কেউ নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে লাইব্রেরি ঘরটির খুবই জরাজীর্ণ অবস্থা। লাইব্রেরির চালার টিন ভেঙে পড়ে আছে নিচে। দরজা-জানালা নড়বড়ে অবস্থা। এছাড়া লাইব্রেরিটির সকল অবকাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে। লাইব্রেরিটির অবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে আগের মতো আর বই প্রেমীরা বই পড়তে আসেন না। এই লাইব্রেরিতে ১ হাজার ৩ শ বই আছে, যা জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে। লাইব্রেরিটির বেহাল দশার বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়নি। যে কারণে জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটি এখন সংস্কারের অভাবে বিলীন হওয়ার পথে।

বই প্রেমী কবির আল চপল বলেন, ‘আমাদের এই লাইব্রেরিটি সংস্কার না করা হলে যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। তাই আমরা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।’ বই প্রেমী ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটি এলাকার তরুণ যুবদের জন্য এক অন্যতম স্থান। বই প্রেমীরা বেঁচে থাকে বই পড়া নিয়ে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের বিশেষ আবেদন, যাতে দ্রুত পাঠাগারটি সংস্কার করার ব্যবস্থা করে।

এ ব্যাপারে জীবননগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির সভাপতি ও জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটি অন্য স্থানে নিয়ে নতুনভাবে করা হচ্ছে। লাইব্রেরিটির কাজ দ্রুত শেষ করে পুনরায় জীবননগর উপজেলার বই প্রেমী মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।