ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

দর্শনায় সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি

মাদকের রমরমা ব্যবসা, এলাকায় আতঙ্ক!

দর্শনা অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৬:২৪:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১১ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর শহরে সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। দিনের বেলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে লুটের চেষ্টা, বোমা রেখে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং মাদকের বিস্তারের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত বুধবার দুপুরে দর্শনায় ব্যুরো বাংলা এনজিও অফিসে সশস্ত্র এক দুর্বৃত্ত এনজিওর হিসাবরক্ষককে জিম্মি করে লুটের চেষ্টা করে। একই দিন রাতে সেনাবাহিনীর অভিযানে দর্শনা পৌরসভার শান্তিপাড়া এলাকা থেকে বিএনপি নেতা শাহারুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তার বাড়ির পেছন থেকে মাটির নিচে পুঁতে রাখা ৯ এমএম পিস্তল এবং দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও আগের দিন মঙ্গলবার রাতে সেনাবাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ৭২৪ লিটার কেরুজ বাংলা মদ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে আশুলিয়ায় ১৮ হাজার বোতল মদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩।
জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে চলতি অক্টোবর পর্যন্ত দর্শনা থানায় মোট ৩২০টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ১৬৭টি মাদকের মামলা। গত ১ বছর ৩ মাসে মাদক সংক্রান্ত অপরাধে ৭৫৭ জনকে গ্রেপ্তারও করেছে দর্শনা থানা পুলিশ। বিভিন্ন সময়ে পুলিশ, বিজিবি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানে ফেনসিডিল, ইয়াবা, বিদেশি মদ, গাঁজা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
দর্শনার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা মাদকের আড্ডার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো পৌর শহরের টাওয়ারের পেছন এলাকা, পরাণপুর স্কুলমাঠ, রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় মাদক সেবীদের আনাগোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ অঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে মাদক সহজলভ্য হয়ে পড়ায় মাদকসেবীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
দর্শনা থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি, এই থানা এলাকা সম্পর্কে আমার ধারণাও কম। তবে থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে পরিকল্পনা শুরু করেছি। এই মুহূর্তে আমাদের জনবল কম এবং বদলি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পূজা পরবর্তী সময়ে আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারব আশা করছি।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের মাস্টারপাড়া এলাকায় ব্যুরো বাংলা অফিসে ছিনতাইচেষ্টা ঘটনার পর আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি। পাশাপাশি রাতে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের বিষয়েও আমরা কার্যকর ভূমিকা রেখেছি। যদি কারো কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকে, তাহলে আমাদের জানালে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। আমরা সবসময় তৎপর আছি। মাদকবিরোধী অভিযানে তথ্যের অভাবে অনেক সময় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না, তবে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেব।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনায় সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি

মাদকের রমরমা ব্যবসা, এলাকায় আতঙ্ক!

আপলোড টাইম : ০৬:২৪:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর শহরে সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। দিনের বেলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে লুটের চেষ্টা, বোমা রেখে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং মাদকের বিস্তারের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত বুধবার দুপুরে দর্শনায় ব্যুরো বাংলা এনজিও অফিসে সশস্ত্র এক দুর্বৃত্ত এনজিওর হিসাবরক্ষককে জিম্মি করে লুটের চেষ্টা করে। একই দিন রাতে সেনাবাহিনীর অভিযানে দর্শনা পৌরসভার শান্তিপাড়া এলাকা থেকে বিএনপি নেতা শাহারুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তার বাড়ির পেছন থেকে মাটির নিচে পুঁতে রাখা ৯ এমএম পিস্তল এবং দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও আগের দিন মঙ্গলবার রাতে সেনাবাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ৭২৪ লিটার কেরুজ বাংলা মদ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে আশুলিয়ায় ১৮ হাজার বোতল মদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩।
জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে চলতি অক্টোবর পর্যন্ত দর্শনা থানায় মোট ৩২০টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ১৬৭টি মাদকের মামলা। গত ১ বছর ৩ মাসে মাদক সংক্রান্ত অপরাধে ৭৫৭ জনকে গ্রেপ্তারও করেছে দর্শনা থানা পুলিশ। বিভিন্ন সময়ে পুলিশ, বিজিবি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানে ফেনসিডিল, ইয়াবা, বিদেশি মদ, গাঁজা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
দর্শনার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা মাদকের আড্ডার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো পৌর শহরের টাওয়ারের পেছন এলাকা, পরাণপুর স্কুলমাঠ, রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় মাদক সেবীদের আনাগোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ অঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে মাদক সহজলভ্য হয়ে পড়ায় মাদকসেবীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
দর্শনা থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি, এই থানা এলাকা সম্পর্কে আমার ধারণাও কম। তবে থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে পরিকল্পনা শুরু করেছি। এই মুহূর্তে আমাদের জনবল কম এবং বদলি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পূজা পরবর্তী সময়ে আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারব আশা করছি।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের মাস্টারপাড়া এলাকায় ব্যুরো বাংলা অফিসে ছিনতাইচেষ্টা ঘটনার পর আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি। পাশাপাশি রাতে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের বিষয়েও আমরা কার্যকর ভূমিকা রেখেছি। যদি কারো কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকে, তাহলে আমাদের জানালে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। আমরা সবসময় তৎপর আছি। মাদকবিরোধী অভিযানে তথ্যের অভাবে অনেক সময় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না, তবে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেব।’