ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় প্রশিক্ষণ চলাকালীন এক ঘণ্টার বিরতির ফাঁকে নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় শিক্ষক আটক

বিটিভির সাংবাদিক রাজন রাশেদকে গণপিটুনি, ৯৯৯ ফোন দিয়ে রক্ষা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১৮:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৬২ বার পড়া হয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় কামিল মাদ্রাসার কৃষিশিক্ষা শিক্ষক, বিটিভি এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এবং দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামে। মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-মামুন রতনের হস্তক্ষেপে তিনি সেখান থেকে মুক্তি পান বলে জানা গেছে। এ ঘটনার আগে নতুন শিক্ষা কারিককুলামের জন্য চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর চলমান প্রশিক্ষণে তিনি প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। দুপুরের এক ঘণ্টার বিরতির মধ্যে ওই শিক্ষক কীভাবে আমিরপুর গ্রামে অপকর্ম করতে আসে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আমিরপুর গ্রামবাসী জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে ওই গ্রামের মরহুম আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর (কামিল মাদ্রাসার সাবেক পিয়ন) বাড়িতে ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ আসা-যাওয়া করে। ওই বাড়িতে কাজী তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বসবাস করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা বলেন, ৮ম ও ৯ম শ্রেণির নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য এই প্রশিক্ষণ ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রশিক্ষণের মধ্যে বেলা একটা থেকে বেলা দুটো পর্যন্ত বিরতি শেষে আবার সেটা বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে। এর মধ্যে একজন শিক্ষক প্রশিক্ষণ চলমান অবস্থায় কী করে অন্য স্থানে অপকর্ম করে, সেটা ভাবতেও অবাক লাগে। তিনি বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তবে এ ঘটনার ব্যাপারে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ করা হবে। এটি একটি গর্হিত অপরাধ।
মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, রাজন রাশেদ বেশ কিছুদিন ধরে ওই বাড়িতে আপত্তিকর কাজ করার জন্য আসতেন। এদিন দুপুরের পর লোকজন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে ঘরের মধ্যে দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। সেখানে লোকজন রাজনকে গণপিটুনি দেয়। এমতবস্থায় তিনি নিজেকে বাঁচাতে ৯৯৯ ফোন দিলে বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তার আগে ইউপি চেয়ারম্যান রতন তাকে ছেড়ে দেন।
মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-মামুন রতন জানান, পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহিন ও তারপর ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মমিন তাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, আমিরপুর গ্রামের ওই বাড়িতে অবৈধ কাজ করার সময় স্থানীয় জনসাধারণ দুজন নারী-পুরুষকে আটক করে রেখেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় অভিযুক্ত রাজন ঘরের ভেতর থেকে বের হয়ে বাড়ির উঠানে চেয়ারে বসে আছেন। বাড়ির চারপাশে লোক সমাগম বেড়েই যাচ্ছিল। পরবতী পরিস্থিতি বিবেচনা করে আটক রাজনের হাতে তার মোটরসাইকেলের চাবি ধরিয়ে দিয়ে আমি তাকে চলে যেতে এবং চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসির সঙ্গে দেখা করার জন্য বলি। তিনি তখনই সেখান থেকে দ্রুত চলে যান। তবে স্থানীয় জনসাধারণ বলছিল, তাদের দুজনকে ঘরের ভেতর আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়। এ বিষয়টি রাজনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনো জবাব না দিলেও অভিযোগে দুষ্ট নারীটি বলেন তার সঙ্গে কিছু হয়নি।
এ ঘটনার বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদ্রাসার অভিযুক্ত শিক্ষক সাংবাদিক ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ বলেন, ‘আমি নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রশিক্ষণের ফাঁকে আমিরপুর গ্রামে আমাদের মাদ্রাসার সাবেক পিয়ন মরহুম আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর বাড়িতে পেনশন সংক্রান্ত একটি বিষয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ বন্ধ ঘরের দরজায় আমার একজন ছাত্র টোকা দেয়। আমি দরজা খুলে দিলে সে ‘সরি’ বলে চলে যায়। এরপর দেখি প্রচুর লোকজন জড়ো হচ্ছে। তারপর আমি সেখান থেকে চলে আসি। এর বেশি আমি বলতে পারব না। তবে ধারণা করছি, আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর দুই স্ত্রী। বড় স্ত্রীর একটি ইনস্যুরেন্স করা ছিল। সেই ইনস্যুরেন্সের টাকা ওঠানো নিয়ে বিরোধের কারণে আমাকে জড়িয়ে এমনটি ঘটতে পারে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় প্রশিক্ষণ চলাকালীন এক ঘণ্টার বিরতির ফাঁকে নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় শিক্ষক আটক

বিটিভির সাংবাদিক রাজন রাশেদকে গণপিটুনি, ৯৯৯ ফোন দিয়ে রক্ষা

আপলোড টাইম : ১১:১৮:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩


নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় কামিল মাদ্রাসার কৃষিশিক্ষা শিক্ষক, বিটিভি এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এবং দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামে। মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-মামুন রতনের হস্তক্ষেপে তিনি সেখান থেকে মুক্তি পান বলে জানা গেছে। এ ঘটনার আগে নতুন শিক্ষা কারিককুলামের জন্য চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর চলমান প্রশিক্ষণে তিনি প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। দুপুরের এক ঘণ্টার বিরতির মধ্যে ওই শিক্ষক কীভাবে আমিরপুর গ্রামে অপকর্ম করতে আসে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আমিরপুর গ্রামবাসী জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে ওই গ্রামের মরহুম আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর (কামিল মাদ্রাসার সাবেক পিয়ন) বাড়িতে ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ আসা-যাওয়া করে। ওই বাড়িতে কাজী তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বসবাস করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা বলেন, ৮ম ও ৯ম শ্রেণির নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য এই প্রশিক্ষণ ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রশিক্ষণের মধ্যে বেলা একটা থেকে বেলা দুটো পর্যন্ত বিরতি শেষে আবার সেটা বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে। এর মধ্যে একজন শিক্ষক প্রশিক্ষণ চলমান অবস্থায় কী করে অন্য স্থানে অপকর্ম করে, সেটা ভাবতেও অবাক লাগে। তিনি বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তবে এ ঘটনার ব্যাপারে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ করা হবে। এটি একটি গর্হিত অপরাধ।
মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, রাজন রাশেদ বেশ কিছুদিন ধরে ওই বাড়িতে আপত্তিকর কাজ করার জন্য আসতেন। এদিন দুপুরের পর লোকজন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে ঘরের মধ্যে দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। সেখানে লোকজন রাজনকে গণপিটুনি দেয়। এমতবস্থায় তিনি নিজেকে বাঁচাতে ৯৯৯ ফোন দিলে বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তার আগে ইউপি চেয়ারম্যান রতন তাকে ছেড়ে দেন।
মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-মামুন রতন জানান, পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহিন ও তারপর ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মমিন তাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, আমিরপুর গ্রামের ওই বাড়িতে অবৈধ কাজ করার সময় স্থানীয় জনসাধারণ দুজন নারী-পুরুষকে আটক করে রেখেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় অভিযুক্ত রাজন ঘরের ভেতর থেকে বের হয়ে বাড়ির উঠানে চেয়ারে বসে আছেন। বাড়ির চারপাশে লোক সমাগম বেড়েই যাচ্ছিল। পরবতী পরিস্থিতি বিবেচনা করে আটক রাজনের হাতে তার মোটরসাইকেলের চাবি ধরিয়ে দিয়ে আমি তাকে চলে যেতে এবং চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসির সঙ্গে দেখা করার জন্য বলি। তিনি তখনই সেখান থেকে দ্রুত চলে যান। তবে স্থানীয় জনসাধারণ বলছিল, তাদের দুজনকে ঘরের ভেতর আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়। এ বিষয়টি রাজনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনো জবাব না দিলেও অভিযোগে দুষ্ট নারীটি বলেন তার সঙ্গে কিছু হয়নি।
এ ঘটনার বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদ্রাসার অভিযুক্ত শিক্ষক সাংবাদিক ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ বলেন, ‘আমি নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রশিক্ষণের ফাঁকে আমিরপুর গ্রামে আমাদের মাদ্রাসার সাবেক পিয়ন মরহুম আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর বাড়িতে পেনশন সংক্রান্ত একটি বিষয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ বন্ধ ঘরের দরজায় আমার একজন ছাত্র টোকা দেয়। আমি দরজা খুলে দিলে সে ‘সরি’ বলে চলে যায়। এরপর দেখি প্রচুর লোকজন জড়ো হচ্ছে। তারপর আমি সেখান থেকে চলে আসি। এর বেশি আমি বলতে পারব না। তবে ধারণা করছি, আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর দুই স্ত্রী। বড় স্ত্রীর একটি ইনস্যুরেন্স করা ছিল। সেই ইনস্যুরেন্সের টাকা ওঠানো নিয়ে বিরোধের কারণে আমাকে জড়িয়ে এমনটি ঘটতে পারে।’