ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশির লাশ এখনো ফেরত দেয়নি ভারত

নিহত দুই পরিবারের সদস্যদের কান্না যেন থামছেই না

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:১৩:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৩৭ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা অফিস:
দর্শনা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ এখনো ফেরত দেয়নি ভারত। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে লাশ দুটি শনাক্ত করে ফেরত চেয়ে বিএসএফ বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল সোমবার ছয়ঘরিয়া গ্রামে গিয়ে নিহত সাজেজুল ইসলাম (৩০) ও খাজা মঈনউদ্দিনের পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, নিহতদের ভোটার আইডি কার্ড ও ছয় কপি ছবি বিজিবির কাছে দেওয়া হয়েছে। বিজিবি লাশ দুটির ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড বিএসএফএর নিকট প্রেরণ করেছে।

নিহত সাজেজুল ইসলামের ভাই মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত শনিবার সন্ধ্যায় রাতের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। পরদিন সকাল ৯টার দিকে লোক মুখে শুনতে পায় সীমান্তে ৮২ প্রধান পিলারের নিকট তার ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে। আমরা সেখানে গিয়ে দূর থেকে দেখি ভারতীয় বিএসএফ কুকুর সাথে করে ঘটনাস্থল থেকে লাশ নিয়ে যাচ্ছে।’ লাশ ফেরত দেওয়ার কথা জানতে চাইলে মফিজুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ময়নাতদন্ত হয়ে গেছে। দেখা যাক আগামীকাল মঙ্গলবার ফেরত দেয় কি না।’

নিহত সাজেজুল ইসলামের স্ত্রীর তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। এদিকে খাজা মঈনউদ্দিনের মা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাবা শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। পরদিন সকালে শুনতে পায় আমার ছেলেকে বিএসএফ গুলি করে মেরে ফেলেছে। আমার সোনার এক ছেলে সায়েম আলী (১২) ও এক মেয়ে জান্নাতুল (৭)। আমার ছেলের ভোটার আইডি কার্ড ও ছবি নিয়ে গেছে।’
এ বিষয় বাড়াদী ক্যাম্পে গিয়ে লাশ ফেরতের বিষয় জানতে চাইলে বিজিবি সদস্য আল আমিন জানান, ‘আমরা বলতে পারব না। আমাদের উচ্চ পর্যায়ের সাথে বিএসএফের যোগাযোগ হচ্ছে। লাশ কবে ফেরত দেবে ওনারা বলতে পারে।’ লাশ ফেরতের বিষয় পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এ এম জাকারিয়া আলম বলেন, উচ্চ পর্যায় যোগাযোগ করে হয়ত লাশ ফেরত দেবে। তবে কতদিনের মধ্যে লাশ ফেরত দেবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত আনুমানিক রাত ১০টার দিকে দর্শনা বাড়াদী সীমান্তের ৮২ নম্বর প্রধান পিলার নিকটবর্তী বরাবর ৭-৮ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পাওয়া গেছে বলে সীমান্তবর্তী লোকজন জানান। এতে দুজন বাংলাদেশি নিহত হয়। এরা হলেন- ছয়ঘরিয়া গ্রামের শরিউতুল্লা ওরফে ভুলুর ছেলে খাজা মঈনউদ্দিন (৪০) ও একই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সাজেজুল ইসলাম (৩০)। তাদের লাশ গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেরত দেয়নি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশির লাশ এখনো ফেরত দেয়নি ভারত

নিহত দুই পরিবারের সদস্যদের কান্না যেন থামছেই না

আপলোড টাইম : ১২:১৩:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

দর্শনা অফিস:
দর্শনা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ এখনো ফেরত দেয়নি ভারত। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে লাশ দুটি শনাক্ত করে ফেরত চেয়ে বিএসএফ বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল সোমবার ছয়ঘরিয়া গ্রামে গিয়ে নিহত সাজেজুল ইসলাম (৩০) ও খাজা মঈনউদ্দিনের পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, নিহতদের ভোটার আইডি কার্ড ও ছয় কপি ছবি বিজিবির কাছে দেওয়া হয়েছে। বিজিবি লাশ দুটির ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড বিএসএফএর নিকট প্রেরণ করেছে।

নিহত সাজেজুল ইসলামের ভাই মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত শনিবার সন্ধ্যায় রাতের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। পরদিন সকাল ৯টার দিকে লোক মুখে শুনতে পায় সীমান্তে ৮২ প্রধান পিলারের নিকট তার ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে। আমরা সেখানে গিয়ে দূর থেকে দেখি ভারতীয় বিএসএফ কুকুর সাথে করে ঘটনাস্থল থেকে লাশ নিয়ে যাচ্ছে।’ লাশ ফেরত দেওয়ার কথা জানতে চাইলে মফিজুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ময়নাতদন্ত হয়ে গেছে। দেখা যাক আগামীকাল মঙ্গলবার ফেরত দেয় কি না।’

নিহত সাজেজুল ইসলামের স্ত্রীর তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। এদিকে খাজা মঈনউদ্দিনের মা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাবা শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। পরদিন সকালে শুনতে পায় আমার ছেলেকে বিএসএফ গুলি করে মেরে ফেলেছে। আমার সোনার এক ছেলে সায়েম আলী (১২) ও এক মেয়ে জান্নাতুল (৭)। আমার ছেলের ভোটার আইডি কার্ড ও ছবি নিয়ে গেছে।’
এ বিষয় বাড়াদী ক্যাম্পে গিয়ে লাশ ফেরতের বিষয় জানতে চাইলে বিজিবি সদস্য আল আমিন জানান, ‘আমরা বলতে পারব না। আমাদের উচ্চ পর্যায়ের সাথে বিএসএফের যোগাযোগ হচ্ছে। লাশ কবে ফেরত দেবে ওনারা বলতে পারে।’ লাশ ফেরতের বিষয় পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এ এম জাকারিয়া আলম বলেন, উচ্চ পর্যায় যোগাযোগ করে হয়ত লাশ ফেরত দেবে। তবে কতদিনের মধ্যে লাশ ফেরত দেবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত আনুমানিক রাত ১০টার দিকে দর্শনা বাড়াদী সীমান্তের ৮২ নম্বর প্রধান পিলার নিকটবর্তী বরাবর ৭-৮ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পাওয়া গেছে বলে সীমান্তবর্তী লোকজন জানান। এতে দুজন বাংলাদেশি নিহত হয়। এরা হলেন- ছয়ঘরিয়া গ্রামের শরিউতুল্লা ওরফে ভুলুর ছেলে খাজা মঈনউদ্দিন (৪০) ও একই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সাজেজুল ইসলাম (৩০)। তাদের লাশ গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেরত দেয়নি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ।