ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

পৌষের শুরুতেই তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত

ডিসেম্বরের শেষ দিকে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা : চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:০৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৫৩ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পর কমছে তাপমাত্রা। বাড়ছে শীত। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। আর সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ, আর সকাল ৯টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গায় আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আর কমবে না। হয়ত কিছুটা বাড়তে পারে। তবে ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র আকারের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় চুয়াডাঙ্গায় জনজীবন কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে। মানুষ কিছুটা দেরিতে উঠছে বিছানা থেকে। শীতের পোশাক কিনতে দোকান ও নিক্সন পট্রিতে (পুরনো পোশাকের দোকান) ভিড় বাড়ছে। জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের কুলসুম বলেন, কয়েকদিনে শীত বেড়েছে। শীতের জন্য অতিরিক্ত পোশাক পরেছি।’ একই উপজেলার আবু সাঈদ বলেন, ‘শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এ জন্য গত বুধবার দুটি শীতের পোশাক কিনেছি।’
এদিকে, শীতের কারণে বেড়েছে ঠান্ডাজতিত রোগ। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যার হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন ধরে চার শতাধিক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর গত বৃহস্পতিবার ৪৩২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এদিকে বহির্বিভাগে আরও ৮ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর বেশিরভাগই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। শীতে শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার থেকে ১৭ হাজার ৬৫০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলা প্রশাসন তাদের বরাদ্দের কম্বল বিতরণের জন্য নিয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৬৯৫টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৬ হাজার ৫৬৫টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ৩ হাজার ৬৯৫টি ও জীবননগর উপজেলায় ৩ হাজার ৬৯৫টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে বৃষ্টিতে ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছিল। টানা কুয়াশায় ফল-ফসলের কিছু ক্ষতি হয়। এসব ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে শিশির ভেঙে দিতে হবে। পরে জিপসাম ছিটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া তিনি শীতকালীন সবজি রক্ষায় কৃষকদের ছত্রাকনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পৌষের শুরুতেই তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত

ডিসেম্বরের শেষ দিকে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা : চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস

আপলোড টাইম : ০১:০৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পর কমছে তাপমাত্রা। বাড়ছে শীত। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। আর সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ, আর সকাল ৯টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গায় আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আর কমবে না। হয়ত কিছুটা বাড়তে পারে। তবে ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র আকারের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় চুয়াডাঙ্গায় জনজীবন কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে। মানুষ কিছুটা দেরিতে উঠছে বিছানা থেকে। শীতের পোশাক কিনতে দোকান ও নিক্সন পট্রিতে (পুরনো পোশাকের দোকান) ভিড় বাড়ছে। জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের কুলসুম বলেন, কয়েকদিনে শীত বেড়েছে। শীতের জন্য অতিরিক্ত পোশাক পরেছি।’ একই উপজেলার আবু সাঈদ বলেন, ‘শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এ জন্য গত বুধবার দুটি শীতের পোশাক কিনেছি।’
এদিকে, শীতের কারণে বেড়েছে ঠান্ডাজতিত রোগ। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যার হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন ধরে চার শতাধিক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর গত বৃহস্পতিবার ৪৩২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এদিকে বহির্বিভাগে আরও ৮ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর বেশিরভাগই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। শীতে শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার থেকে ১৭ হাজার ৬৫০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলা প্রশাসন তাদের বরাদ্দের কম্বল বিতরণের জন্য নিয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৬৯৫টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৬ হাজার ৫৬৫টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ৩ হাজার ৬৯৫টি ও জীবননগর উপজেলায় ৩ হাজার ৬৯৫টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে বৃষ্টিতে ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছিল। টানা কুয়াশায় ফল-ফসলের কিছু ক্ষতি হয়। এসব ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে শিশির ভেঙে দিতে হবে। পরে জিপসাম ছিটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া তিনি শীতকালীন সবজি রক্ষায় কৃষকদের ছত্রাকনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেন।