ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে অবরোধ-বিক্ষোভ

আজ ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশ, শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২০

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৪:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
  • / ৮২ বার পড়া হয়েছে


কোটাবিরোধী এবারের আন্দোলন শুরুর পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে সড়ক-মহাসড়ক-রেলপথ অবরোধ ও বিভিন্ন স্পটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সে চিত্র পুরোপুরি পাল্টে গেছে। ‘বাংলা ব্লকেড’-এর নামে আন্দোলনকারীরা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে- এ অভিযোগ তুলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবার অ্যাকশনে নেমেছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসময় পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষার্থীসহ অন্তত আটজন আহত হন। চট্টগ্রামের টাইগারপাস মহাসড়ক অবরোধের সময় পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চবি অধিভুক্ত কলেজের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্তিশালী ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীর শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন। এসময় বেশিরভাগ স্পটেই পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের উপেক্ষা করে বেপরোয়াভাবে এগিয়ে গেলে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। দুপুরে ঢাবিতে ছাত্রলীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রুখে দেওয়ার হুঙ্কার দিলেও বিকেলের পর তাদের সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি।

শাহবাগ মোড়সহ রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে আন্দোলনকারীদের অবস্থান এবং দেশের বিভিন্নস্থানে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকাল সাড়ে ৩টায় তাদের শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরুর কথা ছিল। কিন্তু তার বেশ আগেই এপিসি কার ও জলকামান নিয়ে দাঙ্গা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক ফোর্স গোটা এলাকায় শক্ত ব্যারিকেড গড়ে তোলে। আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করারও ঘোষণা দেয় পুলিশ। এ পরিস্থিতিতে হুট করে পুলিশের মুখোমুখি না হয়ে আন্দোলনকারীরা নিজেদের সংঘটিত করে। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। পরে বিকাল ৫টায় মিছিল নিয়ে কয়েক হাজার আন্দোলনকারীর একটি বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগের দিকে রওনা দেয়। তারা সেখানে পৌঁছে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড় দখল করে নেয়। তারা শাহবাগ মোড়ে থাকা পুলিশের এপিসি কার ও জলকামানের ওপরে উঠে পড়ে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ গাড়ি দুটি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে সরিয়ে নেয়। শাহবাগে শিক্ষার্থীরা সমবেত হওয়ার পর সেখানে অবস্থিত মেট্রোরেল স্টেশনের চারটি ফটকেই সাময়িক সময়ের জন্য তালা মেরে রাখে কর্তৃপক্ষ।

আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে একবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় পর্যন্ত গেলেও পরে আবার সেখান থেকে শাহবাগ ফিরে আসেন। রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তাদের বুঝিয়ে ফিরিয়ে এনেছি। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে ফিরে যাক।’ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এর আগে বলেছিলেন, বৃহস্পতিবারের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি কেবল শাহবাগ মোড়েই সীমাবদ্ধ থাকবে। কেননা আন্দোলনের মধ্যে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের শঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া কিংবা পুলিশ ও ছাত্রলীগের সতর্ক অবস্থান সত্ত্বেও আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি অন্যদিনের মতো পালিত হবে। আমরা সত্যের পক্ষে আছি, আমরা অনিরাপদ বোধ করছি না।’

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে ঢাকার বিভিন্ন শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমবেত হন। আন্দোলনের নামে শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করলে রুখে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। একইসঙ্গে সময়োপযোগী সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কোটা ব্যবস্থার একটি যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান তারা। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন লিখিত এক বক্তব্যে বলেন, ‘কোটা ব্যবস্থায় একটি যৌক্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান ও সংস্কার আনায়ন করা এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে কোনো অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি তৈরি করে স্পট ডিসিশন গ্রহণ করা নয়। বরং একটি সমন্বিত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামোর প্রেক্ষিতে একটি যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী সমাধান উদ্যোগ প্রয়োজন। কিন্তু তেমন কোনো সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান না জানিয়ে, এমনকি আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই কেন এই অনিঃশেষ আন্দোলন?’
এর আগে সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অতিরিক্ত কমিশনার কে এইচ মাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ শুধু তাদের (শিক্ষার্থীদের) জন্য নয়, নগরবাসীর কাছেও আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। হাইকোর্টের আদেশের ওপর সুপ্রিম কোর্ট স্থিতাবস্থা দেওয়ার পর কোটা আন্দোলনের আর কোনো যৌক্তিকতা নেই। কাজেই কোটা আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ না করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘তারা গত ১০ দিন ধরে রাস্তায় ছিল। আমরা তাদের সমস্যাগুলো বিবেচনা করেছি। কিন্তু তারা যদি এখন আমাদের আহ্বান না মানেন, তাহলে সেটা হবে অপরাধ।’ জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো কর্মসূচি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

সায়েন্সল্যাবে ‘ব্লকেড’ করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা:
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা পূর্বনির্ধারিত সায়েন্সল্যাব মোড়ে ‘ব্লকেড’ করতে পারেনি। পরে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়েও পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন। পুলিশের কঠোর বাধার মুখে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির চতুর্থ দিনে সায়েন্সল্যাবে অবস্থান করতে পারেননি কোটাবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সায়েন্সল্যাব থেকে বের হয়ে তারা নীলক্ষেত বা ঢাকা কলেজের সামনেও দাঁড়াতে পারেননি। অবশেষে সায়েন্সল্যাবের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে বিচ্ছিন্নভাবে শাহবাগের দিকে চলে যান শিক্ষার্থীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে পাবলিক লাইব্রেরির দিকে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়েছে। আমরা খুবই হতাশ। আমরা বলতে চাই, পুলিশ দিয়ে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। সংবিধান নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশ মিটিং মিছিল করার অধিকার দিয়েছে। সেই অধিকার আপনারা ক্ষুণ্ন করতে পারেন না। নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেওয়ায় আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তালা ভেঙে জবির শিক্ষার্থীরা শাহবাগে:
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক ভেঙে শাহবাগে যোগ দেন আন্দোলনকারীরা। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন থেকে মিছিল বের করেন কিছু আন্দোলনকারী। এ সময় আন্দোলনকারীরা যেন ক্যাম্পাসের বাইরে বের হতে না পারে সে জন্য প্রধান ফটকে তালা দেওয়া হয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ফটক ভেঙে বেরিয়ে পড়ে। পরে শাঁখারীবাজার মোড়, সিএমএম কোর্টের সামনে ও তাঁতীবাজার মোড়ে পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। আন্দোলনকারীরা বিকাল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সেখানে অবস্থান করতে দেয়নি। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের বাগবিতন্ডায় না জড়িয়ে ভুয়া ভুয়া সেস্নাগান দিয়ে শাহবাগের দিকে রওনা দেন।

কুমিল্লায় সংঘর্ষ:
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বিকাল সোয়া ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার জন্য ক্যাম্পাস থেকে বের হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পুলিশের সতর্ক অবস্থান সত্ত্বেও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পৌঁনে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। মিছিলটি প্রধান ফটকে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রক্টরিয়াল বডি ও ফটকের বাইরে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে আগে থেকেই তালাবদ্ধ ছিল ফটক। প্রায় ১০ মিনিটের মুখোমুখি অবস্থান শেষে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়কের উভয় পাশ বন্ধ করে দেন। এছাড়া পুলিশের নিয়ে আসা একটি জলকামান গাড়িকে কয়েকটি ট্রাক দিয়ে আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা।

চবি শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ:
বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রেলপথ ও মহাসড়ক অবরোধের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের বটতলী রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে টাইগারপাস মহাসড়ক অবরোধের সময় পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন তারা। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাটিচার্জ করে এবং শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ করে দেন। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে সিভিল সার্ভিস বিসিএসসহ সব সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কার দাবি করে চট্টগ্রামের লালখান বাজার হয়ে সামনে অগ্রসর হয়ে টাইগারপাস মোড়ে অবস্থান নিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে একজন নারী শিক্ষার্থী রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে অবরোধ-বিক্ষোভ

আজ ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশ, শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২০

আপলোড টাইম : ১০:৪৪:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪


কোটাবিরোধী এবারের আন্দোলন শুরুর পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে সড়ক-মহাসড়ক-রেলপথ অবরোধ ও বিভিন্ন স্পটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সে চিত্র পুরোপুরি পাল্টে গেছে। ‘বাংলা ব্লকেড’-এর নামে আন্দোলনকারীরা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে- এ অভিযোগ তুলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবার অ্যাকশনে নেমেছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসময় পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষার্থীসহ অন্তত আটজন আহত হন। চট্টগ্রামের টাইগারপাস মহাসড়ক অবরোধের সময় পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চবি অধিভুক্ত কলেজের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্তিশালী ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীর শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন। এসময় বেশিরভাগ স্পটেই পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের উপেক্ষা করে বেপরোয়াভাবে এগিয়ে গেলে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। দুপুরে ঢাবিতে ছাত্রলীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রুখে দেওয়ার হুঙ্কার দিলেও বিকেলের পর তাদের সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি।

শাহবাগ মোড়সহ রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে আন্দোলনকারীদের অবস্থান এবং দেশের বিভিন্নস্থানে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকাল সাড়ে ৩টায় তাদের শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরুর কথা ছিল। কিন্তু তার বেশ আগেই এপিসি কার ও জলকামান নিয়ে দাঙ্গা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক ফোর্স গোটা এলাকায় শক্ত ব্যারিকেড গড়ে তোলে। আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করারও ঘোষণা দেয় পুলিশ। এ পরিস্থিতিতে হুট করে পুলিশের মুখোমুখি না হয়ে আন্দোলনকারীরা নিজেদের সংঘটিত করে। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। পরে বিকাল ৫টায় মিছিল নিয়ে কয়েক হাজার আন্দোলনকারীর একটি বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগের দিকে রওনা দেয়। তারা সেখানে পৌঁছে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড় দখল করে নেয়। তারা শাহবাগ মোড়ে থাকা পুলিশের এপিসি কার ও জলকামানের ওপরে উঠে পড়ে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ গাড়ি দুটি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে সরিয়ে নেয়। শাহবাগে শিক্ষার্থীরা সমবেত হওয়ার পর সেখানে অবস্থিত মেট্রোরেল স্টেশনের চারটি ফটকেই সাময়িক সময়ের জন্য তালা মেরে রাখে কর্তৃপক্ষ।

আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে একবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় পর্যন্ত গেলেও পরে আবার সেখান থেকে শাহবাগ ফিরে আসেন। রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তাদের বুঝিয়ে ফিরিয়ে এনেছি। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে ফিরে যাক।’ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এর আগে বলেছিলেন, বৃহস্পতিবারের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি কেবল শাহবাগ মোড়েই সীমাবদ্ধ থাকবে। কেননা আন্দোলনের মধ্যে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের শঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া কিংবা পুলিশ ও ছাত্রলীগের সতর্ক অবস্থান সত্ত্বেও আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি অন্যদিনের মতো পালিত হবে। আমরা সত্যের পক্ষে আছি, আমরা অনিরাপদ বোধ করছি না।’

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে ঢাকার বিভিন্ন শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমবেত হন। আন্দোলনের নামে শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করলে রুখে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। একইসঙ্গে সময়োপযোগী সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কোটা ব্যবস্থার একটি যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান তারা। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন লিখিত এক বক্তব্যে বলেন, ‘কোটা ব্যবস্থায় একটি যৌক্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান ও সংস্কার আনায়ন করা এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে কোনো অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি তৈরি করে স্পট ডিসিশন গ্রহণ করা নয়। বরং একটি সমন্বিত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামোর প্রেক্ষিতে একটি যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী সমাধান উদ্যোগ প্রয়োজন। কিন্তু তেমন কোনো সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান না জানিয়ে, এমনকি আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই কেন এই অনিঃশেষ আন্দোলন?’
এর আগে সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অতিরিক্ত কমিশনার কে এইচ মাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ শুধু তাদের (শিক্ষার্থীদের) জন্য নয়, নগরবাসীর কাছেও আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। হাইকোর্টের আদেশের ওপর সুপ্রিম কোর্ট স্থিতাবস্থা দেওয়ার পর কোটা আন্দোলনের আর কোনো যৌক্তিকতা নেই। কাজেই কোটা আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ না করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘তারা গত ১০ দিন ধরে রাস্তায় ছিল। আমরা তাদের সমস্যাগুলো বিবেচনা করেছি। কিন্তু তারা যদি এখন আমাদের আহ্বান না মানেন, তাহলে সেটা হবে অপরাধ।’ জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো কর্মসূচি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

সায়েন্সল্যাবে ‘ব্লকেড’ করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা:
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা পূর্বনির্ধারিত সায়েন্সল্যাব মোড়ে ‘ব্লকেড’ করতে পারেনি। পরে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়েও পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন। পুলিশের কঠোর বাধার মুখে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির চতুর্থ দিনে সায়েন্সল্যাবে অবস্থান করতে পারেননি কোটাবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সায়েন্সল্যাব থেকে বের হয়ে তারা নীলক্ষেত বা ঢাকা কলেজের সামনেও দাঁড়াতে পারেননি। অবশেষে সায়েন্সল্যাবের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে বিচ্ছিন্নভাবে শাহবাগের দিকে চলে যান শিক্ষার্থীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে পাবলিক লাইব্রেরির দিকে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়েছে। আমরা খুবই হতাশ। আমরা বলতে চাই, পুলিশ দিয়ে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। সংবিধান নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশ মিটিং মিছিল করার অধিকার দিয়েছে। সেই অধিকার আপনারা ক্ষুণ্ন করতে পারেন না। নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেওয়ায় আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তালা ভেঙে জবির শিক্ষার্থীরা শাহবাগে:
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক ভেঙে শাহবাগে যোগ দেন আন্দোলনকারীরা। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন থেকে মিছিল বের করেন কিছু আন্দোলনকারী। এ সময় আন্দোলনকারীরা যেন ক্যাম্পাসের বাইরে বের হতে না পারে সে জন্য প্রধান ফটকে তালা দেওয়া হয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ফটক ভেঙে বেরিয়ে পড়ে। পরে শাঁখারীবাজার মোড়, সিএমএম কোর্টের সামনে ও তাঁতীবাজার মোড়ে পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। আন্দোলনকারীরা বিকাল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সেখানে অবস্থান করতে দেয়নি। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের বাগবিতন্ডায় না জড়িয়ে ভুয়া ভুয়া সেস্নাগান দিয়ে শাহবাগের দিকে রওনা দেন।

কুমিল্লায় সংঘর্ষ:
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বিকাল সোয়া ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার জন্য ক্যাম্পাস থেকে বের হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পুলিশের সতর্ক অবস্থান সত্ত্বেও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পৌঁনে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। মিছিলটি প্রধান ফটকে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রক্টরিয়াল বডি ও ফটকের বাইরে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে আগে থেকেই তালাবদ্ধ ছিল ফটক। প্রায় ১০ মিনিটের মুখোমুখি অবস্থান শেষে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়কের উভয় পাশ বন্ধ করে দেন। এছাড়া পুলিশের নিয়ে আসা একটি জলকামান গাড়িকে কয়েকটি ট্রাক দিয়ে আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা।

চবি শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ:
বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রেলপথ ও মহাসড়ক অবরোধের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের বটতলী রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে টাইগারপাস মহাসড়ক অবরোধের সময় পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন তারা। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাটিচার্জ করে এবং শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ করে দেন। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে সিভিল সার্ভিস বিসিএসসহ সব সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কার দাবি করে চট্টগ্রামের লালখান বাজার হয়ে সামনে অগ্রসর হয়ে টাইগারপাস মোড়ে অবস্থান নিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে একজন নারী শিক্ষার্থী রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।