ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

পাসে রেকর্ড এগিয়ে মেয়েরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪০:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ২৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা মহামারির মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে শিক্ষার্থীরা। বিগত বছরের তুলনায় এবারে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এসেছে নতুন রেকর্ড। পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ প্রাপ্তির দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বরাবরের মতো এগিয়ে রয়েছে। এবার মেয়েদের পাসের হার ৯৬.৪৯ শতাংশ এবং ছেলেদের ৯৪.১৪ শতাংশ। সেরা ফল জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দৌঁড় প্রতিযোগিতায়ও মেয়েরাই এগিয়ে রয়েছে। এ দুটি ক্ষেত্রে পূর্বেও ছেলেদের অনায়াসেই পেছনে ফেলেছেন তারা। সাধারণ, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৯৫.২৬ শতাংশ। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি বোর্ডে পাসের হার  ৯৩.৫৮ শতাংশ। আর কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৯২.৮৫ শতাংশ। এ ছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৯৫.৪৯ শতাংশ। এবারের পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ছয় হাজার ৭১৮ জন। ২০১৭ সাল থেকে পাশের হার এবং জিপিএ ফাইভ প্রাপ্তিতে এবারই সর্বোচ্চ।

গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল হস্তান্তরের পর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের এ তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ, রাজশাহী ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ও চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

এবার দুই হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। এদের মধ্যে দুই লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ জন বিজ্ঞান, ছয় লাখ ৫৬ হাজার ১৩২ জন মানবিক এবং দুই লাখ ২৭ হাজার ৫৫ জন বাণিজ্য বিভাগের। এ ছাড়া এক লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন মাদ্রাসা ও এক লাখ ৪৮ হাজার ৫০৩ জন কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষার্থী।

চুয়াডাঙ্গায় পাসের হার ৯৭.৬৮ শতাংশ:

এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গায় পাসের হার ৯৭.৬৮ শতাংশ। জেলার ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ৭ হাজার ৩৯৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ হাজার ২২৬ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে। যশোর বোর্ডের মধ্যে পাশের হারের দিক থেকে এবার চুয়াডাঙ্গার অবস্থান সপ্তম। জেলার ১১টি কেন্দ্রে এসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসকৃত ৭ হাজার ২২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৫৪১ জন ছাত্র এবং ৩ হাজার ৬৮৫ জন ছাত্রী।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান বলেন, এবারে তিন বিষয়ে পরীক্ষা নিলেও শিক্ষার্থীদের ফলাফল বেশ ভালো। এ বছর কলেজ থেকে ৫৬৬ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৫৩৪ জন ছাত্রী পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৪ জন।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক সফিকুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ফলাফল শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই মোবাইলে নিচ্ছে। এবছর যশোর বোর্ডে পাসের হার বেশ ভালো। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ১০০৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৮৪ জন পাস করেছে। এছাড়াও এবার বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক থেকে মোট ৫১৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ-৫ এর দিকে চুয়াডাঙ্গার ২৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ এগিয়ে আছে।

এদিকে, এবার করোনাভাইরাসের বিধি-নিষেধের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তবে পাসের হার বেশি হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ভার্চুয়ালি অভিনন্দন জানাচ্ছেন পরীক্ষার্থীদের শুভাকাক্সক্ষীরা।

দেশসেরা যশোর শিক্ষাবোর্ড:

২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হারে দেশের সেরা হয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড। এক লাখ ৩১ হাজার ৫০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। গতকাল প্রেস ক্লাব যশোর মিলনায়তনে ফলাফল প্রকাশ করেন শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র। যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৬৪ হাজার ১০৬ জন এবং ছাত্রী ৬১ হাজার ৬৩৫ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে তিন জন।

শতভাগ পাস এক হাজার ৯৩৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, পাঁচটিতে সবাই ফেল :

এ বছর পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। যাতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। এক হাজার ৯৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে। অপরদিকে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করতে পারেনি। ২০২০ সালে করোনার কারণে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হয়নি। বিশেষ ব্যবস্থায় ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই ফলে শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৬৩টি। কোন শূন্যপাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। সেই তুলনায় ২০২১ সালে শতভাগ পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে সাত হাজার ১২৯টি। এবারের শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সবগুলোই সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের। মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডে শূন্যপাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। শূন্যপাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বোর্ডে দুটি, দিনাজপুর বোর্ডে দুটি ও ময়মনসিংহ বোর্ডে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এবার মোট ৯ হাজার ১১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

ছেলেদের তুলনায় পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা :

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাসের দিক থেকে ছেলে শিক্ষার্থীদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দিক থেকেও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি ছিল এ পরীক্ষায়, যা ছাত্রদের তুলনায় ১১ হাজার ২১৪ জন বেশি। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে মোট পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩৩ জন ছাত্র পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হন পাঁচ লাখ ২০ হাজার ৭১৩ জন। অর্থাৎ ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৯২ দশমিক ২২ শতাংশ। অপরদিকে ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এবার মোট পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৭ জন ছাত্রী পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নেন। এদের মধ্যে পাস করেন পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৯ জন। অর্থাৎ ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে ছাত্রীদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৭২ শতাংশ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পাসে রেকর্ড এগিয়ে মেয়েরা

আপলোড টাইম : ০৯:৪০:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা মহামারির মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে শিক্ষার্থীরা। বিগত বছরের তুলনায় এবারে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এসেছে নতুন রেকর্ড। পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ প্রাপ্তির দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বরাবরের মতো এগিয়ে রয়েছে। এবার মেয়েদের পাসের হার ৯৬.৪৯ শতাংশ এবং ছেলেদের ৯৪.১৪ শতাংশ। সেরা ফল জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দৌঁড় প্রতিযোগিতায়ও মেয়েরাই এগিয়ে রয়েছে। এ দুটি ক্ষেত্রে পূর্বেও ছেলেদের অনায়াসেই পেছনে ফেলেছেন তারা। সাধারণ, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৯৫.২৬ শতাংশ। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি বোর্ডে পাসের হার  ৯৩.৫৮ শতাংশ। আর কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৯২.৮৫ শতাংশ। এ ছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৯৫.৪৯ শতাংশ। এবারের পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ছয় হাজার ৭১৮ জন। ২০১৭ সাল থেকে পাশের হার এবং জিপিএ ফাইভ প্রাপ্তিতে এবারই সর্বোচ্চ।

গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল হস্তান্তরের পর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের এ তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ, রাজশাহী ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ও চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

এবার দুই হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। এদের মধ্যে দুই লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ জন বিজ্ঞান, ছয় লাখ ৫৬ হাজার ১৩২ জন মানবিক এবং দুই লাখ ২৭ হাজার ৫৫ জন বাণিজ্য বিভাগের। এ ছাড়া এক লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন মাদ্রাসা ও এক লাখ ৪৮ হাজার ৫০৩ জন কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষার্থী।

চুয়াডাঙ্গায় পাসের হার ৯৭.৬৮ শতাংশ:

এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গায় পাসের হার ৯৭.৬৮ শতাংশ। জেলার ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ৭ হাজার ৩৯৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ হাজার ২২৬ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে। যশোর বোর্ডের মধ্যে পাশের হারের দিক থেকে এবার চুয়াডাঙ্গার অবস্থান সপ্তম। জেলার ১১টি কেন্দ্রে এসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসকৃত ৭ হাজার ২২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৫৪১ জন ছাত্র এবং ৩ হাজার ৬৮৫ জন ছাত্রী।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান বলেন, এবারে তিন বিষয়ে পরীক্ষা নিলেও শিক্ষার্থীদের ফলাফল বেশ ভালো। এ বছর কলেজ থেকে ৫৬৬ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৫৩৪ জন ছাত্রী পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৪ জন।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক সফিকুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ফলাফল শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই মোবাইলে নিচ্ছে। এবছর যশোর বোর্ডে পাসের হার বেশ ভালো। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ১০০৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৮৪ জন পাস করেছে। এছাড়াও এবার বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক থেকে মোট ৫১৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ-৫ এর দিকে চুয়াডাঙ্গার ২৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ এগিয়ে আছে।

এদিকে, এবার করোনাভাইরাসের বিধি-নিষেধের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তবে পাসের হার বেশি হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ভার্চুয়ালি অভিনন্দন জানাচ্ছেন পরীক্ষার্থীদের শুভাকাক্সক্ষীরা।

দেশসেরা যশোর শিক্ষাবোর্ড:

২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হারে দেশের সেরা হয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড। এক লাখ ৩১ হাজার ৫০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। গতকাল প্রেস ক্লাব যশোর মিলনায়তনে ফলাফল প্রকাশ করেন শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র। যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৬৪ হাজার ১০৬ জন এবং ছাত্রী ৬১ হাজার ৬৩৫ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে তিন জন।

শতভাগ পাস এক হাজার ৯৩৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, পাঁচটিতে সবাই ফেল :

এ বছর পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। যাতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। এক হাজার ৯৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে। অপরদিকে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করতে পারেনি। ২০২০ সালে করোনার কারণে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হয়নি। বিশেষ ব্যবস্থায় ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই ফলে শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৬৩টি। কোন শূন্যপাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। সেই তুলনায় ২০২১ সালে শতভাগ পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে সাত হাজার ১২৯টি। এবারের শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সবগুলোই সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের। মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডে শূন্যপাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। শূন্যপাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বোর্ডে দুটি, দিনাজপুর বোর্ডে দুটি ও ময়মনসিংহ বোর্ডে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এবার মোট ৯ হাজার ১১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

ছেলেদের তুলনায় পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা :

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাসের দিক থেকে ছেলে শিক্ষার্থীদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দিক থেকেও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি ছিল এ পরীক্ষায়, যা ছাত্রদের তুলনায় ১১ হাজার ২১৪ জন বেশি। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে মোট পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩৩ জন ছাত্র পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হন পাঁচ লাখ ২০ হাজার ৭১৩ জন। অর্থাৎ ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৯২ দশমিক ২২ শতাংশ। অপরদিকে ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এবার মোট পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৭ জন ছাত্রী পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নেন। এদের মধ্যে পাস করেন পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৯ জন। অর্থাৎ ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে ছাত্রীদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৭২ শতাংশ।