ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

দুই শিক্ষককে পেটালেন প্রধান শিক্ষক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, তিতুদহ: চুয়াডাঙ্গার খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আন্তঃস্কুল টুর্নামেন্ট নিয়ে প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক ও ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন, শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত ছাত্র, শিক্ষক ও স্থানীয়দের শান্ত করে তিতুদহ পুলিশ ক্যাম্প।

জানা গেছে, আন্তঃস্কুল ফুটবল ও কাবাডি টুর্নামেন্টে ভালো মানের খেলা উপহার দিয়েছে এবছর। ফুটবলে হারলেও ভলিতে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেছে খাড়াগোদা। তবে ক্রীড়া শিক্ষকের কাছে খেলার বাজেটের টাকার ভাগ চাওয়ার পর তা না পেয়ে ও খেলোয়াড় ছাত্রদের জন্য পরিধানের জার্সি চাওয়ার ক্ষোভে সোয়েব আক্তারকে স্কেল দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছেন প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম। স্কুলসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আগামীকাল (আজ) সোমবার চুয়াডাঙ্গার ঝিনুক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাবাডি থানা পর্যায়ের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য শিক্ষকের কক্ষে যান। এসময় প্রধান শিক্ষক এর আগেও খেলোয়াড়দের নিয়ে বিড়ম্বনা কথা বলে ক্রীড়া শিক্ষককে এসে খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের নিয়ে যাবার কথা বলেন।

অপর দিকে, প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম পুরোনো খরচপাতির কথা তুলে ধরে খেলায় অংশগ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে এ নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সোয়েব হোসেনকে স্কেল দিয়ে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক। পরে ঠেকাতে গিয়ে শামীম রেজা নামের আরেক শিক্ষক হালকা চোট পান। এ খবর জানার পর সকল শিক্ষক একত্রিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে গণপিটুনি দেয়। অপরদিকে প্রধান শিক্ষককে মূর্খ বলে নিজের দোষ স্বীকার করেন ক্রীড়া শিক্ষক। এ জন্য তাকে মারধর করে।

এবিষয়ে ক্রীড়া শিক্ষক সোয়েব আক্তার বলেন, খেলার বাজেটের টাকা একাংশ আত্মসাৎ করতে না পারা ও জার্সি কেনার কথা বলায় তিনি পুরাতন জার্সি দিয়ে খেলানোর কথায় নতুন জার্সি চাওয়ায় এমন আক্রমণ করেন প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম। তবে বিদ্যালয়ের সকলের সাথে প্রতিনিয়ত খারাপ আচরণ করায় যেন তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রত্যেকের কাছে প্রধান শিক্ষক পচা ডিমের উপক্রম হিসেবে গণ্য হয়েছে। এদিকে, ক্রীড়া শিক্ষক সোয়েব আক্তার ও শামীম হোসেনকে আক্রমণ করার প্রতিবাদে আজ থেকে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বর্জন করবেন বলে ঘোষণা দেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ। এছাড়াও আজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করবে বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি খালেকুজ্জামান মাস্টার বলেন, ‘আমি ঘটনার পরে স্কুলে গিয়ে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলেছি। আগামীকাল (আজ) খেলা আছে। খেলা শেষে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ আমরা বসে বিষয়টির সমাধান করার চেষ্টা করব।’

এদিকে প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলামের পক্ষপাতিত্ব করা ও অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে উল্টোপাল্টা কথা বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় কথিত সংবাদকর্মী মাছুরা খাতুন টুনিকে গণপিটুনি দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় মহল। এ বিষয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়াসহ মারধর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই সংবাদকর্মী। তবে স্থানীয়রা জানান, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এ ঘটনা ঘটায়। এ বিষয়ে টুনি দর্শনা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দুই শিক্ষককে পেটালেন প্রধান শিক্ষক

আপলোড টাইম : ০৯:১১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রতিবেদক, তিতুদহ: চুয়াডাঙ্গার খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আন্তঃস্কুল টুর্নামেন্ট নিয়ে প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক ও ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন, শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত ছাত্র, শিক্ষক ও স্থানীয়দের শান্ত করে তিতুদহ পুলিশ ক্যাম্প।

জানা গেছে, আন্তঃস্কুল ফুটবল ও কাবাডি টুর্নামেন্টে ভালো মানের খেলা উপহার দিয়েছে এবছর। ফুটবলে হারলেও ভলিতে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেছে খাড়াগোদা। তবে ক্রীড়া শিক্ষকের কাছে খেলার বাজেটের টাকার ভাগ চাওয়ার পর তা না পেয়ে ও খেলোয়াড় ছাত্রদের জন্য পরিধানের জার্সি চাওয়ার ক্ষোভে সোয়েব আক্তারকে স্কেল দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছেন প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম। স্কুলসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আগামীকাল (আজ) সোমবার চুয়াডাঙ্গার ঝিনুক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাবাডি থানা পর্যায়ের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য শিক্ষকের কক্ষে যান। এসময় প্রধান শিক্ষক এর আগেও খেলোয়াড়দের নিয়ে বিড়ম্বনা কথা বলে ক্রীড়া শিক্ষককে এসে খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের নিয়ে যাবার কথা বলেন।

অপর দিকে, প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম পুরোনো খরচপাতির কথা তুলে ধরে খেলায় অংশগ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে এ নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সোয়েব হোসেনকে স্কেল দিয়ে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক। পরে ঠেকাতে গিয়ে শামীম রেজা নামের আরেক শিক্ষক হালকা চোট পান। এ খবর জানার পর সকল শিক্ষক একত্রিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে গণপিটুনি দেয়। অপরদিকে প্রধান শিক্ষককে মূর্খ বলে নিজের দোষ স্বীকার করেন ক্রীড়া শিক্ষক। এ জন্য তাকে মারধর করে।

এবিষয়ে ক্রীড়া শিক্ষক সোয়েব আক্তার বলেন, খেলার বাজেটের টাকা একাংশ আত্মসাৎ করতে না পারা ও জার্সি কেনার কথা বলায় তিনি পুরাতন জার্সি দিয়ে খেলানোর কথায় নতুন জার্সি চাওয়ায় এমন আক্রমণ করেন প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলাম। তবে বিদ্যালয়ের সকলের সাথে প্রতিনিয়ত খারাপ আচরণ করায় যেন তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রত্যেকের কাছে প্রধান শিক্ষক পচা ডিমের উপক্রম হিসেবে গণ্য হয়েছে। এদিকে, ক্রীড়া শিক্ষক সোয়েব আক্তার ও শামীম হোসেনকে আক্রমণ করার প্রতিবাদে আজ থেকে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বর্জন করবেন বলে ঘোষণা দেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ। এছাড়াও আজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করবে বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি খালেকুজ্জামান মাস্টার বলেন, ‘আমি ঘটনার পরে স্কুলে গিয়ে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলেছি। আগামীকাল (আজ) খেলা আছে। খেলা শেষে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ আমরা বসে বিষয়টির সমাধান করার চেষ্টা করব।’

এদিকে প্রধান শিক্ষক নাহারুল ইসলামের পক্ষপাতিত্ব করা ও অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে উল্টোপাল্টা কথা বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় কথিত সংবাদকর্মী মাছুরা খাতুন টুনিকে গণপিটুনি দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় মহল। এ বিষয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়াসহ মারধর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই সংবাদকর্মী। তবে স্থানীয়রা জানান, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এ ঘটনা ঘটায়। এ বিষয়ে টুনি দর্শনা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।