ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

তুচ্ছ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার ছেলে তন্ময় চট্টগ্রামে খুন!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গা মাস্টার পাড়ার ছেলে এস এম মঈনউদ্দিন তন্ময় (৩০) চট্টগ্রামে খুন হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম নগরীতে একটি টাইলস তৈরি ও বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ওই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল সোমবার বেলা তিনটার দিকে নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজার চাঁনমারি সড়কের ‘হাইপেরিয়ন’ নামে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানায়।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরের মাস্টার পাড়ার কামাল উদ্দিন তারার ছেলে এস এম মঈনউদ্দিন তন্ময়। তিনি ‘তিলোত্তমা টাইলস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চট্টগ্রামের কার্যালয়ের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা ছিলেন। খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার নিহার রিচিলের (৫১) বাড়ি শেরপুর জেলার নলিতাবাড়ী উপজেলায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওই ব্যক্তি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত বাসায় বাবুর্চির কাজ করতেন।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, হাইপেরিয়ান ভবনের তৃতীয় তলায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ছয় কর্মকর্তার থাকার ব্যবস্থা করেছিল তিলোত্তমা টাইলস। নিহার রিচিল ওই প্রতিষ্ঠানের নিযুক্ত বাবুর্চি। তিনিও ওই বাসায় থাকতেন। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই বাসায় চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ভবনের লোকজন সেখানে জড়ো হন। সেখানে তন্ময়কে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। লোকজন বাসায় ঢুকে দেখেন, নিহার দাঁড়িয়ে আছে, তার হাতে একটি ছোরার বাট। তখন নিহার তাদের জানায় যে, তিনি তন্ময়কে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছেন। ছোরা কোথায় জানতে চাইলে নিহারের জবাব- ছোরা পেটের ভেতর রয়ে গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে রক্তমাখা ছোরার বাটটি উদ্ধার করেছে।

খুনের কারণ সম্পর্কে নিহারকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি সন্তোষ বলেন, ‘বছরখানেক আগে নিহারের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। সেই ঘটনা নিয়ে নিহারকে বিদ্রুপ করত তন্ময়। সম্প্রতি বান্দরবানের এক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীর সঙ্গে নিহারের সম্পর্ক হয়। সেটা নিয়েও তন্ময় তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা শুরু করে। নিহারের বয়স, বিয়ে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অশ্লীল কথা বলত তন্ময়। তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য নিহার খুনের পরিকল্পনা করে।’

পুলিশ জানায়, সোমবার দুপুরে তন্ময়সহ তিন কর্মকর্তা ভাত খাওয়ার জন্য বাসায় যান। দু’জন ভাত খেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী নিহার রান্নাঘর থেকে ছোরা এনে তার বুকের বামপাশে ও পেটে আঘাত করে। তন্ময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও নিহারের শক্তির কাছে হার মানে। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তন্ময়কে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত এস এম মঈনউদ্দিন তন্ময়ের চাচা অ্যাড. শরীফউদ্দিন হাসু জানান, লাশ আনার জন্য চট্টগ্রামে রওনা হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। যতদূর জানি এ ঘটনায় পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার তন্ময়ের মরদেহ চুযাডাঙ্গায় পৌছানোর পর দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান অ্যাড. শরীফউদ্দিন হাসু।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

তুচ্ছ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার ছেলে তন্ময় চট্টগ্রামে খুন!

আপলোড টাইম : ০৯:১৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গা মাস্টার পাড়ার ছেলে এস এম মঈনউদ্দিন তন্ময় (৩০) চট্টগ্রামে খুন হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম নগরীতে একটি টাইলস তৈরি ও বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ওই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল সোমবার বেলা তিনটার দিকে নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজার চাঁনমারি সড়কের ‘হাইপেরিয়ন’ নামে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানায়।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরের মাস্টার পাড়ার কামাল উদ্দিন তারার ছেলে এস এম মঈনউদ্দিন তন্ময়। তিনি ‘তিলোত্তমা টাইলস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চট্টগ্রামের কার্যালয়ের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা ছিলেন। খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার নিহার রিচিলের (৫১) বাড়ি শেরপুর জেলার নলিতাবাড়ী উপজেলায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওই ব্যক্তি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত বাসায় বাবুর্চির কাজ করতেন।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, হাইপেরিয়ান ভবনের তৃতীয় তলায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ছয় কর্মকর্তার থাকার ব্যবস্থা করেছিল তিলোত্তমা টাইলস। নিহার রিচিল ওই প্রতিষ্ঠানের নিযুক্ত বাবুর্চি। তিনিও ওই বাসায় থাকতেন। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই বাসায় চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ভবনের লোকজন সেখানে জড়ো হন। সেখানে তন্ময়কে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। লোকজন বাসায় ঢুকে দেখেন, নিহার দাঁড়িয়ে আছে, তার হাতে একটি ছোরার বাট। তখন নিহার তাদের জানায় যে, তিনি তন্ময়কে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছেন। ছোরা কোথায় জানতে চাইলে নিহারের জবাব- ছোরা পেটের ভেতর রয়ে গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে রক্তমাখা ছোরার বাটটি উদ্ধার করেছে।

খুনের কারণ সম্পর্কে নিহারকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি সন্তোষ বলেন, ‘বছরখানেক আগে নিহারের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। সেই ঘটনা নিয়ে নিহারকে বিদ্রুপ করত তন্ময়। সম্প্রতি বান্দরবানের এক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীর সঙ্গে নিহারের সম্পর্ক হয়। সেটা নিয়েও তন্ময় তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা শুরু করে। নিহারের বয়স, বিয়ে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অশ্লীল কথা বলত তন্ময়। তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য নিহার খুনের পরিকল্পনা করে।’

পুলিশ জানায়, সোমবার দুপুরে তন্ময়সহ তিন কর্মকর্তা ভাত খাওয়ার জন্য বাসায় যান। দু’জন ভাত খেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী নিহার রান্নাঘর থেকে ছোরা এনে তার বুকের বামপাশে ও পেটে আঘাত করে। তন্ময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও নিহারের শক্তির কাছে হার মানে। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তন্ময়কে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত এস এম মঈনউদ্দিন তন্ময়ের চাচা অ্যাড. শরীফউদ্দিন হাসু জানান, লাশ আনার জন্য চট্টগ্রামে রওনা হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। যতদূর জানি এ ঘটনায় পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার তন্ময়ের মরদেহ চুযাডাঙ্গায় পৌছানোর পর দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান অ্যাড. শরীফউদ্দিন হাসু।