ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

তিন দাবি পূরণে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১০:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
  • / ৭৯ বার পড়া হয়েছে

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ককে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাঁরা হলেন সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সারজিস ও হাসনাতকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জুনায়েদ আলম সরকার। তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিতে ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে তথ্য জানতে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে তুলে নিয়ে যান সাদাপোশাকে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একদল সদস্য। এ সময় আসিফের সঙ্গে থাকা আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারকেও তুলে নেওয়া হয়। পরে রাতে ডিবির পক্ষ থেকে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার কথা জানানো হয়। নাহিদ, আসিফ ও বাকের শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডিবির হেফাজতে ছিলেন।
এদিকে, কোটা সংস্কারের জন্য অতিদ্রুত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে স্বাধীন কমিশন করে এর সুপারিশ অনুযায়ী সংসদে আইন প্রণয়নসহ তিনটি দাবি পূরণে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাবিগুলো হলো- কমিশন গঠন ও অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা ও সুপারিশের ভিত্তিতে সংসদে কোটাবিষয়ক আইন প্রণয়ন, মামলা প্রত্যাহারসহ আটক করা শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুক্তি এবং সম্প্রতি কোটা আন্দোলনকে ঘিরে নিহতের সঙ্গে জড়িত ও নির্দেশদাতা সবাইকে ‘সরকারি দায়িত্ব’ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনা। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে সোমবার থেকে বাংলা ব্লকেডের চেয়েও বড় কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ এ ঘোষণা দেন। এ সময় আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও সহসমন্বয়ক রশিদুল ইসলাম রিফাত উপস্থিত ছিলেন। হান্নান বলেন, দকোটা সংস্কারে আজ রোববারের মধ্যে স্বাধীন কমিশন গঠন, সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, সহসমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ সব শিক্ষার্থীর মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং শিক্ষার্থী হত্যার সঙ্গে জড়িত মন্ত্রী পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সব দোষীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় সোমবার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কঠিন কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।’
তিনি স্থানীয় ইউনিটগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সোমবার থেকে সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জেলা, উপজেলা ও নগরকেন্দ্রিক ‘হেলথ ফোর্স’ গঠন করে আহত-নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি এবং আহত-নিহত ছাত্র-নাগরিক ও তাদের পরিবারকে মানসিক ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সেই সঙ্গে ‘লিগ্যাল ফোর্স’ গঠন করে সারাদেশে অসংখ্য মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার ডকুমেন্টেশন এবং যাদের আইনি সাহায্যের প্রয়োজন তাদের জন্য সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় ইউনিট কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করবে। এ ছাড়া রোববার (আজ) সারাদেশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি ও দেয়াললিখন কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিদেশে অবস্থানরত ভাইদের বলব, আপনারা হত্যার প্রমাণাদি সব রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছে দেবেন।’ হান্নান বলেন, আমরা সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছি। কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দিয়েছি। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আমরা কঠিন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে নামব। আমরা পালিয়ে থাকব না। সোমবার আমরা আবার রাজপথে নামব।
তিনি বিশ্বের সব মানবাধিকার সংস্থা এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোকে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, প্রবাসী ভাইদের আহ্বান জানাব, শিক্ষার্থীদের পক্ষে আওয়াজ তুলুন। বাংলাদেশে যেভাবে ক্র্যাকডাউন চলছে, তার প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আরও বলেন, পুলিশের ধরপাকড়সহ নানা কারণে সব সমন্বয়কদের সাথে তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না। যে কারণে সমন্বিতভাবে তারা কোন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারছেন না। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আন্দোলনের মূল দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে প্রচার করছে সরকার। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল কমিশন গঠন করে এই সংকটের সমাধান করা। কিন্তু সেটি করা হয়নি বলেই আমরা এই পরিপত্র প্রত্যাখ্যান করছি। অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারসহ সমন্বয়কদের গ্রেপ্তার ও মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
‘নিরাপত্তা দিতেই ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে’
কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ পাঁচ সমন্বয়কের নামে এখনো কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার বলেন, ‘ওই পাঁচ জন নিরাপত্তার নিয়ে সংশয়ে ছিল। যে কারণে ডিবি তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে হেফাজতে নিয়েছে।’ একই সাথে সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য নেয়া হবে বলেও জানান জুনায়েদ আলম সরকার। কিন্তু তারা কী ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ছিল? এই প্রশ্নে কোন উত্তর দেননি গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা।
নাহিদ ইসলামের পিতা বদরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্ত আমার ছেলের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারিনি। এই অবস্থায় কী করবো বুঝতে পারছি না।’ পরিবারের সদস্যরা বলছেন, মামলা ছাড়া কেন তাদের তুলে নেয়া হয়েছে। এতক্ষণ ধরে আটকে কেন রাখা হয়েছে সেটিও জানতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের পিতা বিল্লাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা শুনছি পুলিশের কাছে আছে। আমরা তো কোন যোগাযোগও করতে পারছি না তারা কেমন আছে, কিভাবে আছে। ছেলের নামে মামলা হইছে কী না তাও জানি না। এখন আমরা কি করবো?’ তবে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে তাদের নামে কোন মামলা হয় নি। আগেও তাদের নামে কোন মামলা নেই। গোয়েন্দা কর্মকর্তা জুনায়েদ আলম সরকার বলেন, ‘মামলা হয়নি, তবে তারা অনিরাপদ মনে করছিল তাই নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছি আমরা’। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

তিন দাবি পূরণে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

আপলোড টাইম : ০৯:১০:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ককে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাঁরা হলেন সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সারজিস ও হাসনাতকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জুনায়েদ আলম সরকার। তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিতে ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে তথ্য জানতে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে তুলে নিয়ে যান সাদাপোশাকে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একদল সদস্য। এ সময় আসিফের সঙ্গে থাকা আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারকেও তুলে নেওয়া হয়। পরে রাতে ডিবির পক্ষ থেকে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার কথা জানানো হয়। নাহিদ, আসিফ ও বাকের শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডিবির হেফাজতে ছিলেন।
এদিকে, কোটা সংস্কারের জন্য অতিদ্রুত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে স্বাধীন কমিশন করে এর সুপারিশ অনুযায়ী সংসদে আইন প্রণয়নসহ তিনটি দাবি পূরণে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাবিগুলো হলো- কমিশন গঠন ও অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা ও সুপারিশের ভিত্তিতে সংসদে কোটাবিষয়ক আইন প্রণয়ন, মামলা প্রত্যাহারসহ আটক করা শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুক্তি এবং সম্প্রতি কোটা আন্দোলনকে ঘিরে নিহতের সঙ্গে জড়িত ও নির্দেশদাতা সবাইকে ‘সরকারি দায়িত্ব’ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনা। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে সোমবার থেকে বাংলা ব্লকেডের চেয়েও বড় কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ এ ঘোষণা দেন। এ সময় আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও সহসমন্বয়ক রশিদুল ইসলাম রিফাত উপস্থিত ছিলেন। হান্নান বলেন, দকোটা সংস্কারে আজ রোববারের মধ্যে স্বাধীন কমিশন গঠন, সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, সহসমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ সব শিক্ষার্থীর মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং শিক্ষার্থী হত্যার সঙ্গে জড়িত মন্ত্রী পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সব দোষীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় সোমবার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কঠিন কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।’
তিনি স্থানীয় ইউনিটগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সোমবার থেকে সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জেলা, উপজেলা ও নগরকেন্দ্রিক ‘হেলথ ফোর্স’ গঠন করে আহত-নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি এবং আহত-নিহত ছাত্র-নাগরিক ও তাদের পরিবারকে মানসিক ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সেই সঙ্গে ‘লিগ্যাল ফোর্স’ গঠন করে সারাদেশে অসংখ্য মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার ডকুমেন্টেশন এবং যাদের আইনি সাহায্যের প্রয়োজন তাদের জন্য সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় ইউনিট কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করবে। এ ছাড়া রোববার (আজ) সারাদেশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি ও দেয়াললিখন কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিদেশে অবস্থানরত ভাইদের বলব, আপনারা হত্যার প্রমাণাদি সব রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছে দেবেন।’ হান্নান বলেন, আমরা সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছি। কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দিয়েছি। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আমরা কঠিন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে নামব। আমরা পালিয়ে থাকব না। সোমবার আমরা আবার রাজপথে নামব।
তিনি বিশ্বের সব মানবাধিকার সংস্থা এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোকে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, প্রবাসী ভাইদের আহ্বান জানাব, শিক্ষার্থীদের পক্ষে আওয়াজ তুলুন। বাংলাদেশে যেভাবে ক্র্যাকডাউন চলছে, তার প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আরও বলেন, পুলিশের ধরপাকড়সহ নানা কারণে সব সমন্বয়কদের সাথে তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না। যে কারণে সমন্বিতভাবে তারা কোন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারছেন না। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আন্দোলনের মূল দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে প্রচার করছে সরকার। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল কমিশন গঠন করে এই সংকটের সমাধান করা। কিন্তু সেটি করা হয়নি বলেই আমরা এই পরিপত্র প্রত্যাখ্যান করছি। অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারসহ সমন্বয়কদের গ্রেপ্তার ও মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
‘নিরাপত্তা দিতেই ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে’
কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ পাঁচ সমন্বয়কের নামে এখনো কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার বলেন, ‘ওই পাঁচ জন নিরাপত্তার নিয়ে সংশয়ে ছিল। যে কারণে ডিবি তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে হেফাজতে নিয়েছে।’ একই সাথে সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য নেয়া হবে বলেও জানান জুনায়েদ আলম সরকার। কিন্তু তারা কী ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ছিল? এই প্রশ্নে কোন উত্তর দেননি গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা।
নাহিদ ইসলামের পিতা বদরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্ত আমার ছেলের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারিনি। এই অবস্থায় কী করবো বুঝতে পারছি না।’ পরিবারের সদস্যরা বলছেন, মামলা ছাড়া কেন তাদের তুলে নেয়া হয়েছে। এতক্ষণ ধরে আটকে কেন রাখা হয়েছে সেটিও জানতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের পিতা বিল্লাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা শুনছি পুলিশের কাছে আছে। আমরা তো কোন যোগাযোগও করতে পারছি না তারা কেমন আছে, কিভাবে আছে। ছেলের নামে মামলা হইছে কী না তাও জানি না। এখন আমরা কি করবো?’ তবে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে তাদের নামে কোন মামলা হয় নি। আগেও তাদের নামে কোন মামলা নেই। গোয়েন্দা কর্মকর্তা জুনায়েদ আলম সরকার বলেন, ‘মামলা হয়নি, তবে তারা অনিরাপদ মনে করছিল তাই নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছি আমরা’। সূত্র: বিবিসি বাংলা।