ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

টুং টাং শব্দে ব্যস্ত কামারপাড়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই ২০২২
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

আকিমুল ইসলাম: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দা-ছুরি বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। কামার বাড়ি এখন টুং টাং শব্দে মুখরিত। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ও গড়াইটুপি ইউনিয়নের কামারদের দা, বঁটি, ছুরি বানাতে নামডাক রয়েছে। তাদের বানানো জিনিসের মান ভালো হওয়ায় সারা বছরের চেয়ে এই সময়ে ক্রেতাদের অর্ডার থাকে বেশি। দিন-রাত টুং টাং শব্দে মুখরিত এখন ইউনিয়নের সব হাট-বাজারগুলোতে।

গিরিশনগর বাজারের শ্রী শুশীল কর্মকার বলেন, দা, বঁটি ও চাপাতি প্রতি কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। চাকু প্রতিটি ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। অন্য এলাকা থেকে ও আমাদের এখানে অর্ডার দিতে আসে মানুষ। এদিকে আগে কামার বাড়ি ছিল, কিন্তু এখন বাজারে কামারপট্টি। কিছু কিছু বাজারে ও দু-চারটি দোকান যা আছে, সেখানেও এসময় ব্যস্ততা বেড়েছে ইতঃমধ্যে। তবে শহরের অধিকাংশ মানুষ হার্ডওয়্যার বা ক্রোকারিজের দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির দা, বঁটি, ছুরি কিনে তাদের চাহিদা মিটাচ্ছেন।
তিতুদহ ও গড়াইটুপির ১০টি বাজারসহ ২৭টি গ্রামে প্রায় অর্ধশতাধিক কামার শিল্পী দা, কাঁচি, বঁটি, কুড়াল তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে দিনে দিনে ক্রেতার সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। শত বছরে ধরে এই শিল্পীরা তাঁদের বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এ কাজের মধ্যে। এখন আর ভালো মুনাফা না থাকায় দিনে দিনে এই শিল্পকর্ম ছেড়ে অন্য কাজে জড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা।

গতকাল বুধবার ৬৩ আড়িয়া কর্মকারপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, কামারশিল্পীরা দা, কাঁচি, কুড়াল, ছ্যানা, চাপাতি, বঁটিসহ বিভিন্ন লোহার পণ্যসামগ্রী তৈরি করে পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় তাঁরা হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

স্থানীয় সব কামারশালাগুলো এখন লোহা ও হাতুড়ির টুংটাং শব্দে মুখর। গড়াইটুপির আনন্দ বাজারে ঢুকতেই চোখে পড়ে একটি কামারশালা। হাপড় দিয়ে কয়লা আগুনে উসকে দিয়ে খুব সুন্দরভাবে দা ও বঁটি বানানোর কাজ করছিলেন শিল্পীরা। ৬৩ আড়িয়া গ্রামের ৪৫বছর বয়সী ষষ্টি কর্মকার কাজ করতে করতে তিনি বলেন, আকার ও আকৃতিভেদে একটা চাপাতি তৈরি করতে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকি। দা, বঁটি, চাকু তৈরিতে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা নিই। তবে এখন খুবই কষ্টকর হয়ে পরেছে কয়লার অভাবে। তিনি আরও বলেন আগের দিনে ইট ভাটা থেকে কয়লা নিয়ে আসতাম কিন্তু এখন ভাটায় পাথর কয়লা দিয়ে ইট পোরায় তাই কয়লার অভাবে কাজ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। আগের মত আর লাভ নেই সব জিনিসপত্রের দাম বেশি কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের কাজের মূল্য তেমন বেশি না। বাপ-দাদার ব্যবসার সৃতি হিসেবে ধরে আছি।
এদিকে খাড়াগোদার কামারগণ বলেন বছরের প্রায় সময় ব্যবসা মন্দা গেলে দুই ঈদে কিছুটা পুষিয়ে যায়,তবে ঈদুল আজহাতে একটু বেশি আয় হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

টুং টাং শব্দে ব্যস্ত কামারপাড়া

আপলোড টাইম : ০৩:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই ২০২২

আকিমুল ইসলাম: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দা-ছুরি বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। কামার বাড়ি এখন টুং টাং শব্দে মুখরিত। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ও গড়াইটুপি ইউনিয়নের কামারদের দা, বঁটি, ছুরি বানাতে নামডাক রয়েছে। তাদের বানানো জিনিসের মান ভালো হওয়ায় সারা বছরের চেয়ে এই সময়ে ক্রেতাদের অর্ডার থাকে বেশি। দিন-রাত টুং টাং শব্দে মুখরিত এখন ইউনিয়নের সব হাট-বাজারগুলোতে।

গিরিশনগর বাজারের শ্রী শুশীল কর্মকার বলেন, দা, বঁটি ও চাপাতি প্রতি কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। চাকু প্রতিটি ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। অন্য এলাকা থেকে ও আমাদের এখানে অর্ডার দিতে আসে মানুষ। এদিকে আগে কামার বাড়ি ছিল, কিন্তু এখন বাজারে কামারপট্টি। কিছু কিছু বাজারে ও দু-চারটি দোকান যা আছে, সেখানেও এসময় ব্যস্ততা বেড়েছে ইতঃমধ্যে। তবে শহরের অধিকাংশ মানুষ হার্ডওয়্যার বা ক্রোকারিজের দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির দা, বঁটি, ছুরি কিনে তাদের চাহিদা মিটাচ্ছেন।
তিতুদহ ও গড়াইটুপির ১০টি বাজারসহ ২৭টি গ্রামে প্রায় অর্ধশতাধিক কামার শিল্পী দা, কাঁচি, বঁটি, কুড়াল তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে দিনে দিনে ক্রেতার সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। শত বছরে ধরে এই শিল্পীরা তাঁদের বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এ কাজের মধ্যে। এখন আর ভালো মুনাফা না থাকায় দিনে দিনে এই শিল্পকর্ম ছেড়ে অন্য কাজে জড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা।

গতকাল বুধবার ৬৩ আড়িয়া কর্মকারপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, কামারশিল্পীরা দা, কাঁচি, কুড়াল, ছ্যানা, চাপাতি, বঁটিসহ বিভিন্ন লোহার পণ্যসামগ্রী তৈরি করে পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় তাঁরা হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

স্থানীয় সব কামারশালাগুলো এখন লোহা ও হাতুড়ির টুংটাং শব্দে মুখর। গড়াইটুপির আনন্দ বাজারে ঢুকতেই চোখে পড়ে একটি কামারশালা। হাপড় দিয়ে কয়লা আগুনে উসকে দিয়ে খুব সুন্দরভাবে দা ও বঁটি বানানোর কাজ করছিলেন শিল্পীরা। ৬৩ আড়িয়া গ্রামের ৪৫বছর বয়সী ষষ্টি কর্মকার কাজ করতে করতে তিনি বলেন, আকার ও আকৃতিভেদে একটা চাপাতি তৈরি করতে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকি। দা, বঁটি, চাকু তৈরিতে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা নিই। তবে এখন খুবই কষ্টকর হয়ে পরেছে কয়লার অভাবে। তিনি আরও বলেন আগের দিনে ইট ভাটা থেকে কয়লা নিয়ে আসতাম কিন্তু এখন ভাটায় পাথর কয়লা দিয়ে ইট পোরায় তাই কয়লার অভাবে কাজ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। আগের মত আর লাভ নেই সব জিনিসপত্রের দাম বেশি কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের কাজের মূল্য তেমন বেশি না। বাপ-দাদার ব্যবসার সৃতি হিসেবে ধরে আছি।
এদিকে খাড়াগোদার কামারগণ বলেন বছরের প্রায় সময় ব্যবসা মন্দা গেলে দুই ঈদে কিছুটা পুষিয়ে যায়,তবে ঈদুল আজহাতে একটু বেশি আয় হয়।