ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় নেই আধুনিক স্লটার, যেখানে-সেখানে করা হচ্ছে পশু জবাই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুন ২০২২
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

তাঁর মেয়াদকালেই আধুনিক স্লটার হাউস নির্মাণ করা হবে বললেন পৌর মেয়র খোকন

সমীকরণ প্রতিবেদন: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় নেই নিজস্ব পশু জবাইখানা। ফলে স্থানীয় মাংস বিক্রেতারা বাধ্য হয়ে যেখানে-সেখানে পশু জবাই করছেন। এতে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করায় নিরাপদ মাংস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাই চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় আধুনিক স্লটার হাউস বা পশু জবাইখানা থাকা জরুরি বলে মনে করেন সচেতন মহল।

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে মাংসপট্টিতে সরেজমিনে দেখা গেছে, যেখানে গরু জবাই করা হয়, তা অনেকটাই গোয়ালঘরের মতো। পশুর গোবর ও কয়েক দিনের জমাট বাধা রক্তের কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মাংস শেডেই রাস্তার ওপর ছাগল-ভেড়া জবাই করা হয়। কেদারগঞ্জ নতুন বাজার ও রেলবাজারেও একই চিত্র।

স্থানীয় মাংস বিক্রেতারা বলছেন, পৌরসভার নিজস্ব পশু জবাইখানা না থাকায় তাঁরা বাধ্য হয়েই যেখানে-সেখানে পশু জবাই করছেন। এতে পৌর শহরে বিক্রি করা মাংস নিয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। তাঁরা আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বড় বাজার মাথাভাঙ্গা নদীর ধার মাংসপট্টি, কেদারগঞ্জ নতুন বাজার ও রেলবাজারে বৃহস্পতিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন মাংস বিক্রি করা হয়। এছাড়া শুক্রবার ছুটির দিন ও উৎসবের দিনগুলোয় পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে পশু জবাই করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ সুলতান আরা নিজেও স্বীকার করেছেন আধুনিক সুবিধাসহ একটি পশু জবাইখানা থাকা খুবই জরুরি। দীর্ঘদিন ধরেই তা নেই। এমনকি সদ্য ঘোষিত পৌরসভার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ৫৭ কোটি ৯৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯০৭ টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও এ খাতে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।

মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক মুন্সী বলেন, নদীর ধারে মাংসপট্টি ও কেদারগঞ্জ নতুন বাজারে জবাই করা পশুর রক্তসহ বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর পানিসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মানিক আকবর বলেন, চুয়াডাঙ্গার সাবেক পৌর মেয়র অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস ঘোড়ামারা এলাকায় স্লটার হাউস তৈরি করেছিলেন। কিন্তু পরে যাঁরা পরিষদের দায়িত্বে আসেন, তাঁরা সেটি বন্ধ করে দেন। নতুন করে উদ্যোগও নেননি। তিনি আরও বলেন, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে পশু জবাইয়ের কারণে ক্রেতারা মাংসের সঙ্গে রোগজীবাণু বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের অজান্তেই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই অবিলম্বে আধুনিক স্লটার হাউস তৈরির জন্য পৌর পরিষদের কাছে তিনি দাবি জানান।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মার্টিন হীরক চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এতে শুধু পরিবেশেরই ক্ষতি হচ্ছে, তা নয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করায় মাংসে সহজে নানা রকম জীবাণু প্রবেশ করছে, যা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। মার্টিন হীরক দাবি করেন, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে আধুনিক স্লটার হাউস বা পশু জবাইখানা তৈরি করতে হবে।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাঁর মেয়াদকালেই চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক স্লটার হাউস নির্মাণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় নেই আধুনিক স্লটার, যেখানে-সেখানে করা হচ্ছে পশু জবাই

আপলোড টাইম : ০৯:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুন ২০২২

তাঁর মেয়াদকালেই আধুনিক স্লটার হাউস নির্মাণ করা হবে বললেন পৌর মেয়র খোকন

সমীকরণ প্রতিবেদন: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় নেই নিজস্ব পশু জবাইখানা। ফলে স্থানীয় মাংস বিক্রেতারা বাধ্য হয়ে যেখানে-সেখানে পশু জবাই করছেন। এতে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করায় নিরাপদ মাংস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাই চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় আধুনিক স্লটার হাউস বা পশু জবাইখানা থাকা জরুরি বলে মনে করেন সচেতন মহল।

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে মাংসপট্টিতে সরেজমিনে দেখা গেছে, যেখানে গরু জবাই করা হয়, তা অনেকটাই গোয়ালঘরের মতো। পশুর গোবর ও কয়েক দিনের জমাট বাধা রক্তের কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মাংস শেডেই রাস্তার ওপর ছাগল-ভেড়া জবাই করা হয়। কেদারগঞ্জ নতুন বাজার ও রেলবাজারেও একই চিত্র।

স্থানীয় মাংস বিক্রেতারা বলছেন, পৌরসভার নিজস্ব পশু জবাইখানা না থাকায় তাঁরা বাধ্য হয়েই যেখানে-সেখানে পশু জবাই করছেন। এতে পৌর শহরে বিক্রি করা মাংস নিয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। তাঁরা আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বড় বাজার মাথাভাঙ্গা নদীর ধার মাংসপট্টি, কেদারগঞ্জ নতুন বাজার ও রেলবাজারে বৃহস্পতিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন মাংস বিক্রি করা হয়। এছাড়া শুক্রবার ছুটির দিন ও উৎসবের দিনগুলোয় পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে পশু জবাই করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ সুলতান আরা নিজেও স্বীকার করেছেন আধুনিক সুবিধাসহ একটি পশু জবাইখানা থাকা খুবই জরুরি। দীর্ঘদিন ধরেই তা নেই। এমনকি সদ্য ঘোষিত পৌরসভার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ৫৭ কোটি ৯৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯০৭ টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও এ খাতে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।

মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক মুন্সী বলেন, নদীর ধারে মাংসপট্টি ও কেদারগঞ্জ নতুন বাজারে জবাই করা পশুর রক্তসহ বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর পানিসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মানিক আকবর বলেন, চুয়াডাঙ্গার সাবেক পৌর মেয়র অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস ঘোড়ামারা এলাকায় স্লটার হাউস তৈরি করেছিলেন। কিন্তু পরে যাঁরা পরিষদের দায়িত্বে আসেন, তাঁরা সেটি বন্ধ করে দেন। নতুন করে উদ্যোগও নেননি। তিনি আরও বলেন, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে পশু জবাইয়ের কারণে ক্রেতারা মাংসের সঙ্গে রোগজীবাণু বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের অজান্তেই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই অবিলম্বে আধুনিক স্লটার হাউস তৈরির জন্য পৌর পরিষদের কাছে তিনি দাবি জানান।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মার্টিন হীরক চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এতে শুধু পরিবেশেরই ক্ষতি হচ্ছে, তা নয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করায় মাংসে সহজে নানা রকম জীবাণু প্রবেশ করছে, যা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। মার্টিন হীরক দাবি করেন, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে আধুনিক স্লটার হাউস বা পশু জবাইখানা তৈরি করতে হবে।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাঁর মেয়াদকালেই চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক স্লটার হাউস নির্মাণ করা হবে।