ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় ফোস্কা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নারী ‘মাঙ্কিপক্স’ আক্রান্ত নয় : স্বাস্থ্য বিভাগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জুন ২০২২
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় হাতের তালুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন নুরজাহান খাতুন (৬০) নামের এক নারী। গত বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে হাপসাতালের বর্হিবিভাগের চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যান। এসময় রোগীর হাতের তালুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা, জ্বর, মাথা ব্যথা, গা ব্যথা থাকায় চিকিৎসক সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের উপসর্গ সন্দেহ করেন। পরে ওই রোগীকে বাড়িতে পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দেন ও বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান।

এদিকে, এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘চুয়াডাঙ্গায় মাঙ্কিপক্স উপসর্গের এক নারী শনাক্ত’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও গতকাল শুক্রবার সময়ের সমীকরণের ছাপা পত্রিকায় একই সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ বিভাগের নজরে এলে গতকাল শুক্রবার সকালে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে সদর উপজেলার ইউএইচএফপিও ডা. আউলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম ওই রোগীকে সদর হাসপাতালের সম্প্রসারিত নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় আলাদা একটি কক্ষে অবজারভেশনে রাখেন। পরবর্তীতে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান জরুরি ভিত্তিতে রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়নের নেতৃত্বে মেডিকেল টিমে ছিলেন হাসপতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন ও মেডিকেল অফিসার ডা. সোহরাব হোসেন।

উক্ত মেডিকেল টিমের সদস্য ও সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন বলেন, ‘ওই রোগীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর ফোস্কা ও বিভিন্ন উপসর্গ ক্ষতিয়ে দেখা হয়েছে। মেডিকেল টিমের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ধারণা করছি রোগীর শরীরে ফোস্কাগুলি চিকেনপক্স বা মাঙ্কিপক্স নয়। এ ধরণের ফোস্কা সাধারণত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে হয়ে থাকে। রোগী এক ধরণের চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার নুরজাহান খাতুন (৬০) নামের এক রোগীকে সারা শরীরে চর্মরোগ নিয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসলে তাঁকে মাঙ্কিপক্স সন্দেহে অনলাইনে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে এলে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে সদর উপজেলার ইউএইচএফপিও ডা. আউলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে গতকাল সকালে একটি টিম রোগীকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাঁকে সদর হাসপাতালের সম্প্রসারিত নতুন ভবনে রাখা হয়। সকালেই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান জরুরি ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন। মেডিকেল টিম রোগীকে পরীক্ষা করে এই মর্মে উপনীত হন যে, রোগীর শরীরে কোনো মাঙ্কিপক্স বা চিকেনপক্সের লক্ষণ নেই। এটি সাধারণ চর্ম রোগ, পরবর্তীতে রোগীকে চিকিৎসার জন্য চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার্ড করা হয়। এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।

চুয়াডাঙ্গা জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান জানান, তিনি একটি মিটিংয়ের জন্য জেলার বাইরে আছেন। ওই রোগীর বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিস্তারিত বলতে পারবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় ফোস্কা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নারী ‘মাঙ্কিপক্স’ আক্রান্ত নয় : স্বাস্থ্য বিভাগ

আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জুন ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় হাতের তালুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন নুরজাহান খাতুন (৬০) নামের এক নারী। গত বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে হাপসাতালের বর্হিবিভাগের চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যান। এসময় রোগীর হাতের তালুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা, জ্বর, মাথা ব্যথা, গা ব্যথা থাকায় চিকিৎসক সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের উপসর্গ সন্দেহ করেন। পরে ওই রোগীকে বাড়িতে পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দেন ও বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান।

এদিকে, এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘চুয়াডাঙ্গায় মাঙ্কিপক্স উপসর্গের এক নারী শনাক্ত’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও গতকাল শুক্রবার সময়ের সমীকরণের ছাপা পত্রিকায় একই সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ বিভাগের নজরে এলে গতকাল শুক্রবার সকালে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে সদর উপজেলার ইউএইচএফপিও ডা. আউলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম ওই রোগীকে সদর হাসপাতালের সম্প্রসারিত নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় আলাদা একটি কক্ষে অবজারভেশনে রাখেন। পরবর্তীতে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান জরুরি ভিত্তিতে রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়নের নেতৃত্বে মেডিকেল টিমে ছিলেন হাসপতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন ও মেডিকেল অফিসার ডা. সোহরাব হোসেন।

উক্ত মেডিকেল টিমের সদস্য ও সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন বলেন, ‘ওই রোগীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর ফোস্কা ও বিভিন্ন উপসর্গ ক্ষতিয়ে দেখা হয়েছে। মেডিকেল টিমের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ধারণা করছি রোগীর শরীরে ফোস্কাগুলি চিকেনপক্স বা মাঙ্কিপক্স নয়। এ ধরণের ফোস্কা সাধারণত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে হয়ে থাকে। রোগী এক ধরণের চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার নুরজাহান খাতুন (৬০) নামের এক রোগীকে সারা শরীরে চর্মরোগ নিয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসলে তাঁকে মাঙ্কিপক্স সন্দেহে অনলাইনে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে এলে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে সদর উপজেলার ইউএইচএফপিও ডা. আউলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে গতকাল সকালে একটি টিম রোগীকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাঁকে সদর হাসপাতালের সম্প্রসারিত নতুন ভবনে রাখা হয়। সকালেই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান জরুরি ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন। মেডিকেল টিম রোগীকে পরীক্ষা করে এই মর্মে উপনীত হন যে, রোগীর শরীরে কোনো মাঙ্কিপক্স বা চিকেনপক্সের লক্ষণ নেই। এটি সাধারণ চর্ম রোগ, পরবর্তীতে রোগীকে চিকিৎসার জন্য চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার্ড করা হয়। এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।

চুয়াডাঙ্গা জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান জানান, তিনি একটি মিটিংয়ের জন্য জেলার বাইরে আছেন। ওই রোগীর বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিস্তারিত বলতে পারবেন।