চুয়াডাঙ্গাসহ সারদেশে ঈদের ছুটিতে সড়কে ঝরলো অর্ধশতাধিক প্রাণ
- আপলোড টাইম : ০২:৪২:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২
- / ১৮ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ প্রতিবেদন: চুয়াডাঙ্গাহ সারাদেশে ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। তাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিকার হয়েছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার। গত শনিবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চারটি পৃথক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ মোটরসাইকেল আরোহী। আর চট্টগ্রামের পটিয়ায় বাসচাপায় দম্পতিসহ অটোরিকশার ৬ যাত্রী নিহত হয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গায় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় বৃদ্ধসহ দুজন নিহত হয়েছে। রোববার (১০ জুলাই) বেলা ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত দুই ঘন্টার ব্যবধানে সদর ও দামুড়হুদা উপজেলায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দূর্ঘটনা কবলিত সংশ্লিষ্ট দুই থানা কর্তৃপক্ষ। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের জাফরপুর গ্রামের মৃত খোকা আলীর ছেলে ফরজ আলী (৭০) ও দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের সড়াবাড়িয়া গ্রামের পূর্বপাড়ার আব্দুল গনির ছেলে এনামুল হক।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন , ঈদের দিন বেলা ১১ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার জাফরপুরস্থ বিজিবি ক্যাম্পের সামনে থেকে স্থানীয়রা ফরজ আলী (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আধাঘন্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দ্রুতগতির কোন মোটরসাইকেল বা যানবহন বৃদ্ধকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, ঈদের দিন দুপুর ১ টার দিকে বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে এনামুল সহ দুজন ঘুরতে বের হয়। এসময় সড়াবাড়িয়া-নতুন গ্রামের মাঠের মধ্যে পৌছালে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খেজুর গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চালক এনামুলকে মৃত ঘোষনা করেন।
চুয়াডাঙ্গায় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. উৎপলা বিশ্বাস বলেন, বৃদ্ধ ফরজ আলীর মাথায় প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। হাসপাতালের আসার আধাঘন্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এছাড়া এনামুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে পরিক্ষা-নিরিক্ষার পর মৃত ঘোষনা করা হয়েছে। মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দুই থানাকে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের ৯ জেলায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১৭ জন। তাঁদের মধ্যে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে গত সোমবার ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে আব্দুল্লাহ আল আমিন, বানিয়াজুড়ি এলাকায় জুবায়ের (১৪) ও হাজি মিয়া (২৬), তরা কালিগঙ্গা সেতুর ওপর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গতকাল রাতে জুয়েল মিয়া (২৫) ও আশিকুর রহমান (২৫), রাজবাড়ীর বাগমারা এলাকায় সোমবার বিকেলে কাজী মোস্তজা আজম জিলান এবং রোববার পাংশা এলাকায় আবু মুসা নামে এক কলেজছাত্র, রোববার যশোরের নওয়াপাড়ায় সোবহান মোল্যা (২১), সোমবার সিলেটের গোলাপগঞ্জে লামিশা আক্তার (১০) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে গতকাল লরির ধাক্কায় আরোহী রিফাত (১৮),জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে রাশেদুল (১৫) নামে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘরে গত রোববার মাইক্রোবাসচাপায় রাজীব মিয়া (২৮), সোমবার পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন হাওলাদার (৬০), রোববার রংপুর নগরীর পাকার মাথা এলাকায় মাহমুদুল ইসলাম (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রামের পটিয়ায় বাসচাপায় একই অটোরিকশার ৬ যাত্রী নিহত হয়েছেন। গত সোমবার রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পটিয়ার জলুর দীঘিরপাড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- বিশ্বজিৎ সেন (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী রুম্পা সেন (৪২), অটোরিকশা চালক ইসমাইল (৫০), যাত্রী রেজাউল করিম রফিক (৫০), শুভ ধর (২৭) ও সাব্বির হোসেন (১৮)। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পিকআপভ্যান ও অটোরিকশা সংঘর্ষে যাত্রী মো. সোহেল (২২), আমজাদ হোসেন (২৮) ও অটোরিকশা চালক মোয়াজ্জেম হোসেন হৃদয় (২১), গাজীপুরের কাপাসিয়ার চেওরাইট এলাকায় গত শনিবার বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় থাকা সেলিম মিয়া (৫০) ও তাঁর মেয়ে সাদিয়া আক্তার (৮) এবং আরেক যাত্রী রুবেল মিয়ার স্ত্রী নুরজাহান (২৮), বরিশালের গৌরনদীর টরকী বাসস্ট্যান্ডে মঙ্গলবার বাস ও তেলের ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষে ট্যাঙ্কারচালক মো. মোক্তার মোল্লা (৫০), টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে অটোরিকশা ও ট্রাক সংঘর্ষে অটোরিকশা যাত্রী ইউনুস আলী (৫৪), আরেক দুর্ঘটনায় অটোরিকশা চালক আব্দুস সামাদ (৪০) এবং সোমবার বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কায় যাত্রীবাহী পিকআপ চালক সৌরভ (১২), দিনাজপুর সদর উপজেলায় দ্রুতগামী ট্রাকের চাকায় নুর আলম (২৫) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক, ঢাকার ধামরাইয়ে বাসচাপায় আওলাদ হোসেন (৫০) নামে এক ব্যবসায়ী প্রাণ হারিয়েছেন।