ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার ছাদেমাননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের নিকট থেকে মাসিক বেতন আদায়ের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, সরোজগঞ্জ: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছাদেমাননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের নিকট থেকে মাসিক বেতন আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহর বিরুদ্ধে। উপবৃত্তি পাওয়া অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া বাবদ বিদ্যারয়ের ফিস সরকার থেকে প্রদান করা হয়। তবে কোন কারনে, সেই সকল অসহায় উপবৃত্তি প্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রীদের কাছে থেকে মাসিক বেতন আদায় করা হচ্ছে প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকগণ।

বিদ্যালয়ের ৭ শ্রেণির ছাত্রী পিয়া খাতুনসহ উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন- আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীর উপবৃত্তি রয়েছে। উপবৃত্তি পাওয়া সত্বেও আমাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৮০টাকা করে বেতন আদায় করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ। আমরা এবিষয়ে আবু সালেহ স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা বলেছি, ‘স্যার আমরাতো উপবৃত্তি পায় তাহলে আমরা কেন বেতন দেব, পাশ্ববর্তী সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে যারা উপবৃত্তি পায় তাদেরকে মাসিক বেতন দিতে হয় না। তাহলে উপবৃত্তি পাওয়া সত্বেও আমাদের কাছ থেকে কেন বেতন নেওয়া হচ্ছে? তিনি জবাবে বলেন আরে পাগল তোদের এসব কথা কে বলেছে? যে তোদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয়, তোদের কাছ থেকে তো বিদ্যালয়ের পরিকল্পনার জন্য টাকা নেওয়া হয়, বেতন নেওয়া কাকে বলে, যার কাছ থেকে ১হাজার, ২হাজার করে টাকা নেওয়া হয় তাকে বেতন নেওয়া বলে।’

৭ শ্রেণির ছাত্রী লাবনি খাতুন বলেন, ‘আমার উপবৃত্তি রয়েছে। আমার পিতা একজন মানুষিক রোগী, ঠিক মতো উপার্জন করতে পারে না, কিন্তু আমাকেও প্রতি মাসে ৮০ টাকা করে বেতন দিতে হয়। শুধু আমার একার থেকে না, বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি থাকা অনেক ছাত্রীর কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয়। ৮ শ্রেণির ছাত্রী শিরিন সুলতানা, নাগিস খাতুন, সিমা খাতুন, সিমি খাতুন, রাখি খাতুনসহ বিদ্যালয়ের শত, শত মেধাবী ছাত্রীদের উপবৃত্তি রয়েছে, এর পরেও তাদেরকে মাসিক বেতন দিতে হয়। প্রশাসন বিষয়টি নজরে নিলে অনেক অসহায় শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ হতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি যাচায় করে দেখার অনুরোধ করছি।’

উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের বিষয়ে বদরগঞ্জ আলিয়ারপুর আজিজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন জানান, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা যারা উপবৃত্তি পেয়ে থাকে তাদের কাছ থেকে কোন মাসিক বেতন নেওয়া হয় না, তবে এখনতো উপবৃত্তি ছাত্র ছাত্রীদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আসে অনেক সময় আমরা জানতে পারি না, সে ক্ষেত্রে ওই সকল ছাত্র ছাত্রীরা আমাদের কাছে জানালে তাদের বেতন নেওয়া হয় না।’

উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের থেকে বেতন নেওয়ার বিসয়ে সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকবর আলী বলেন, যে সকল শিক্ষার্থী উপবৃত্তি টাকা পাই সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে মাসিক বেতন মওকুফ করা নির্দেশ আছে, সেই ক্ষেত্রে আমাদের বিদ্যালয়ে যে সকল ছাত্র ছাত্রী উপবৃত্তি পাই তাদের নিকট থেকে কোন মাসিক বেতন নেওয়া হয় না।’

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাদেমাননেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ বলেন, ‘কোন ছাত্র ছাত্রী উপবৃত্তি পাই বা না পাই এর ভেতরে না তাদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ম্যানেজমেন্টের ফি বাবদে নেওয়া হয়। সরকার ১৫টাকা করে উপবৃত্তির টাকা দেয়। সরকার বলেছে তোমরা উপবৃত্তি নিলে নেও না নিলে না নাও। সরকার যে টাকা দেয় তাদিয়ে ঘাস মারা বিষ কেনাও যায় না। তাই উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের থেকেও মাসিক বেতন নেওয়া হয়।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গার ছাদেমাননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের নিকট থেকে মাসিক বেতন আদায়ের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ১০:০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২

প্রতিবেদক, সরোজগঞ্জ: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছাদেমাননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের নিকট থেকে মাসিক বেতন আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহর বিরুদ্ধে। উপবৃত্তি পাওয়া অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া বাবদ বিদ্যারয়ের ফিস সরকার থেকে প্রদান করা হয়। তবে কোন কারনে, সেই সকল অসহায় উপবৃত্তি প্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রীদের কাছে থেকে মাসিক বেতন আদায় করা হচ্ছে প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকগণ।

বিদ্যালয়ের ৭ শ্রেণির ছাত্রী পিয়া খাতুনসহ উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন- আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীর উপবৃত্তি রয়েছে। উপবৃত্তি পাওয়া সত্বেও আমাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৮০টাকা করে বেতন আদায় করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ। আমরা এবিষয়ে আবু সালেহ স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা বলেছি, ‘স্যার আমরাতো উপবৃত্তি পায় তাহলে আমরা কেন বেতন দেব, পাশ্ববর্তী সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে যারা উপবৃত্তি পায় তাদেরকে মাসিক বেতন দিতে হয় না। তাহলে উপবৃত্তি পাওয়া সত্বেও আমাদের কাছ থেকে কেন বেতন নেওয়া হচ্ছে? তিনি জবাবে বলেন আরে পাগল তোদের এসব কথা কে বলেছে? যে তোদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয়, তোদের কাছ থেকে তো বিদ্যালয়ের পরিকল্পনার জন্য টাকা নেওয়া হয়, বেতন নেওয়া কাকে বলে, যার কাছ থেকে ১হাজার, ২হাজার করে টাকা নেওয়া হয় তাকে বেতন নেওয়া বলে।’

৭ শ্রেণির ছাত্রী লাবনি খাতুন বলেন, ‘আমার উপবৃত্তি রয়েছে। আমার পিতা একজন মানুষিক রোগী, ঠিক মতো উপার্জন করতে পারে না, কিন্তু আমাকেও প্রতি মাসে ৮০ টাকা করে বেতন দিতে হয়। শুধু আমার একার থেকে না, বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি থাকা অনেক ছাত্রীর কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয়। ৮ শ্রেণির ছাত্রী শিরিন সুলতানা, নাগিস খাতুন, সিমা খাতুন, সিমি খাতুন, রাখি খাতুনসহ বিদ্যালয়ের শত, শত মেধাবী ছাত্রীদের উপবৃত্তি রয়েছে, এর পরেও তাদেরকে মাসিক বেতন দিতে হয়। প্রশাসন বিষয়টি নজরে নিলে অনেক অসহায় শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ হতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি যাচায় করে দেখার অনুরোধ করছি।’

উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের বিষয়ে বদরগঞ্জ আলিয়ারপুর আজিজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন জানান, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা যারা উপবৃত্তি পেয়ে থাকে তাদের কাছ থেকে কোন মাসিক বেতন নেওয়া হয় না, তবে এখনতো উপবৃত্তি ছাত্র ছাত্রীদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আসে অনেক সময় আমরা জানতে পারি না, সে ক্ষেত্রে ওই সকল ছাত্র ছাত্রীরা আমাদের কাছে জানালে তাদের বেতন নেওয়া হয় না।’

উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের থেকে বেতন নেওয়ার বিসয়ে সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকবর আলী বলেন, যে সকল শিক্ষার্থী উপবৃত্তি টাকা পাই সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে মাসিক বেতন মওকুফ করা নির্দেশ আছে, সেই ক্ষেত্রে আমাদের বিদ্যালয়ে যে সকল ছাত্র ছাত্রী উপবৃত্তি পাই তাদের নিকট থেকে কোন মাসিক বেতন নেওয়া হয় না।’

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাদেমাননেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ বলেন, ‘কোন ছাত্র ছাত্রী উপবৃত্তি পাই বা না পাই এর ভেতরে না তাদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ম্যানেজমেন্টের ফি বাবদে নেওয়া হয়। সরকার ১৫টাকা করে উপবৃত্তির টাকা দেয়। সরকার বলেছে তোমরা উপবৃত্তি নিলে নেও না নিলে না নাও। সরকার যে টাকা দেয় তাদিয়ে ঘাস মারা বিষ কেনাও যায় না। তাই উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের থেকেও মাসিক বেতন নেওয়া হয়।’