ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

ঘুমন্ত পিতাকে কুপিয়ে জখম করল ছেলে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় নিজ ছেলের এলোপাতাড়ি কোপে গুরুতর জখম হয়েছেন পিতা আব্দুর রশিদ (৪৫)। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দশমী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় আব্দুর রশিদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভর্তি করে। নিজ ছেলের এলোপাতাড়ি কোপে জখম আব্দুর রশিদ দশমী গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আব্দুর রশিদের সঙ্গে তাঁর বড় ছেলে ইয়াসিন আলীর  (১৮) বাগবিতণ্ডা লেগেই থাকতো। গত মঙ্গলবার রাতেও তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে ঘুমন্ত আব্দুর রশিদকে কুপিয়ে জখম করে তাঁরই ছেলে ইয়াসিন। এসময় আব্দুর রশিদ চিৎকার করলে প্রতিবেশীদের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখেন।

জখম আব্দুর রশিদের বড় ভাই বসির আহমেদ বলেন, আব্দুর রশিদ বিভিন্ন সময় মেয়েকে জ্বালানি কাঠসহ বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করে দিতেন। কিন্তু ইয়াসিন তা পছন্দ করত না। এছাড়াও সাংসারিক খরচ নিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকত। গতকাল ভোরে হঠাৎ আব্দুর রশিদের চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পায়। এসময় দ্রুত তাঁর বাড়িতে গেলে ঘরের মধ্যে তাঁকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দেখতে পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি রাখেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আহসানুল হক বলেন, সকাল ছয়টার দিকে পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আব্দুর রশিদকে জরুরি বিভাগে নেয়। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের দুটি গুরুতর জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ক্ষতস্থানে ৩০টিরও বেশি সেলাই দেওয়া হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি বিভাগে ভর্তি রাখা হয়েছে।

সিন্দুরিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলাম জানান, আব্দুর রশিদের ছেলে ইয়াসিন মানসিক প্রতিবন্ধী। বোনকে জ্বালানি কাঠ দেওয়া নিয়ে তাঁর বাবার গণ্ডগোল করত সে। এই জের ধরে ভোরে ঘুমিয়ে থাকা পিতাকে দেশীয় অস্ত্র দা দিয়ে মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশীদের থেকে জানতে পেরেছি ইয়াসিন মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। তার পিতা আব্দুর রশিদ প্রচুর অর্থ ব্যয়ে ছেলের চিকিৎসা করালেও সে সুস্থ হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ইয়াসিন মানসিকভাবে অসুস্থ বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ হয়নি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঘুমন্ত পিতাকে কুপিয়ে জখম করল ছেলে

আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় নিজ ছেলের এলোপাতাড়ি কোপে গুরুতর জখম হয়েছেন পিতা আব্দুর রশিদ (৪৫)। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দশমী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় আব্দুর রশিদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভর্তি করে। নিজ ছেলের এলোপাতাড়ি কোপে জখম আব্দুর রশিদ দশমী গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আব্দুর রশিদের সঙ্গে তাঁর বড় ছেলে ইয়াসিন আলীর  (১৮) বাগবিতণ্ডা লেগেই থাকতো। গত মঙ্গলবার রাতেও তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে ঘুমন্ত আব্দুর রশিদকে কুপিয়ে জখম করে তাঁরই ছেলে ইয়াসিন। এসময় আব্দুর রশিদ চিৎকার করলে প্রতিবেশীদের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখেন।

জখম আব্দুর রশিদের বড় ভাই বসির আহমেদ বলেন, আব্দুর রশিদ বিভিন্ন সময় মেয়েকে জ্বালানি কাঠসহ বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করে দিতেন। কিন্তু ইয়াসিন তা পছন্দ করত না। এছাড়াও সাংসারিক খরচ নিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকত। গতকাল ভোরে হঠাৎ আব্দুর রশিদের চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পায়। এসময় দ্রুত তাঁর বাড়িতে গেলে ঘরের মধ্যে তাঁকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দেখতে পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি রাখেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আহসানুল হক বলেন, সকাল ছয়টার দিকে পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আব্দুর রশিদকে জরুরি বিভাগে নেয়। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের দুটি গুরুতর জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ক্ষতস্থানে ৩০টিরও বেশি সেলাই দেওয়া হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি বিভাগে ভর্তি রাখা হয়েছে।

সিন্দুরিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলাম জানান, আব্দুর রশিদের ছেলে ইয়াসিন মানসিক প্রতিবন্ধী। বোনকে জ্বালানি কাঠ দেওয়া নিয়ে তাঁর বাবার গণ্ডগোল করত সে। এই জের ধরে ভোরে ঘুমিয়ে থাকা পিতাকে দেশীয় অস্ত্র দা দিয়ে মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশীদের থেকে জানতে পেরেছি ইয়াসিন মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। তার পিতা আব্দুর রশিদ প্রচুর অর্থ ব্যয়ে ছেলের চিকিৎসা করালেও সে সুস্থ হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ইয়াসিন মানসিকভাবে অসুস্থ বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ হয়নি।