ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

গড়াইটুপির চেয়ারম্যান রাজুর বিরুদ্ধে পাকশিয়া বিল নিলামে নেওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি

প্রতিবেদক, তিতুদহ:
  • আপলোড টাইম : ১০:০৩:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার গহেরপুর পাকশিয়া বিল নিলামে সর্বোচ্চ হাক দেওয়ায় আশাদুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজুর বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, গত ৩০ই চৈত্র বাংলা পর্যন্ত ছিল পূর্বের নিলামে নেওয়া গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির অধীনে। সময় শেষ হওয়ার আগেই গত তিন মাস পূর্বে গহেরপুর পাকশিয়া বিলের নতুন নিলামের জন্য মন্ত্রণালয়ে রাজু চেয়ারম্যানসহ তিনজন বিলটি মাছ চাষের জন্য হাক দেন। এতে সর্বোচ্চ ২৩ লাখ টাকায় হাক দেন গহেরপুর গ্রামের মৃত রমজান ম-লের ছেলে আশাদুল হক। এর জন্যই চেয়ারম্যান তার ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন মেম্বারসহ স্থানীয় সন্ত্রাসী সাঙ্গুপাঙ্গু দিয়ে তাঁর বাড়িতে রাত ১২টার দিকে ধারালো অস্ত্র রামদা, হাতুড়ি, রড নিয়ে হামলা করার উদ্দেশ্য যায় বলে অভিযোগ করেন আশাদুল হক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত আনুমানিক রাত ১২টার দিকে ১০-১২টা মোটরসাইকেলযোগে আশাদুলের বাড়িতে আসে ১৫ জনের অধিক সংখ্যক লোকজন। তারপর শুরু হয় উচ্চস্বরে বাগবিত-া। একপর্যায়ে সবাই ছুটে গেলে দেখতে পায় রাজু চেয়ারম্যানের কয়েকজন সাঙ্গু-পাঙ্গুসহ ইউনিয়নের কয়েকজন মেম্বার এসব কর্মকা- চালাচ্ছেন।

এ বিষয়ে গ্রামবাসী বলেন, ‘আমরা এখন নিরাপত্তাহীনায় আছি, মনে হচ্ছে আজ রাতেও তারা হয়তো আমাদের সমিতির সকল লোকজনের ওপর হামলা করবে। সেদিন ঘটনার সময় আশাদুল বাড়িতে ছিল না বলে বড় ধরণের ঘটনা ঘটেনি। সাঙ্গ-পাঙ্গরা চলে যাওয়ার পর রাজু চেয়ারম্যান পরে নিজে এসে হুমকি দিয়েছে বলে জানান আশাদুল।’

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু বলেন, ‘আমি এরকম কর্মকা- করিনি। তবে গত শনিবার বিলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনাতে আমি কিছু মাছ অবমুক্ত করি এবং ওই রাতে সংবাদ পায় বিলে কারা যেন মাছ ধরছে। এ খবর পাওয়ার সাথে সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সরোজমিনে পাঠায় এবং তারা মাছ ধরার জাল এবং হাড়ি মাছসহ উদ্ধার করে।’ এছাড়াও বলেন, ‘আমি বা আমার কোনো লোকজন এরকম কর্মকা- করেনি।’

এ বিষয়ে গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রহিৎ চন্দ্র মাঝি বলেন, বিলের ধারে জাল শুকাতে দেওয়া ছিল। তবে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে অযথা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে।

এ বিষয়ে আশাদুল বলেন, ‘আমাদের সমিতির ২৯ জন লাইসেন্সধারী জেলে গরীব পরিবারের লোকজন ওই ঘটনার পর এখন চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে ঘুমাতেও পারছি না। তবে আমরা আইনের আওতায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে তিতুদহ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই মেজবাহ বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর আমরা সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং জাল ও হাড়ি জেলেদের ফেরত দিয়ে দিই।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া বলেন, বিলটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ওই বিলের মালিক সরকার। ওখানে মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে সেটা আমি জানি। ওটা কেউ দখল নিতে পারবে না। তবে সরকারি নিলামে নিয়ম-কানুনের মধ্যদিয়ে যে পাবে, সেই এটির অস্থায়ী স্বত্ত্বাধিকারী হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

গড়াইটুপির চেয়ারম্যান রাজুর বিরুদ্ধে পাকশিয়া বিল নিলামে নেওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি

আপলোড টাইম : ১০:০৩:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

চুয়াডাঙ্গার গহেরপুর পাকশিয়া বিল নিলামে সর্বোচ্চ হাক দেওয়ায় আশাদুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজুর বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, গত ৩০ই চৈত্র বাংলা পর্যন্ত ছিল পূর্বের নিলামে নেওয়া গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির অধীনে। সময় শেষ হওয়ার আগেই গত তিন মাস পূর্বে গহেরপুর পাকশিয়া বিলের নতুন নিলামের জন্য মন্ত্রণালয়ে রাজু চেয়ারম্যানসহ তিনজন বিলটি মাছ চাষের জন্য হাক দেন। এতে সর্বোচ্চ ২৩ লাখ টাকায় হাক দেন গহেরপুর গ্রামের মৃত রমজান ম-লের ছেলে আশাদুল হক। এর জন্যই চেয়ারম্যান তার ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন মেম্বারসহ স্থানীয় সন্ত্রাসী সাঙ্গুপাঙ্গু দিয়ে তাঁর বাড়িতে রাত ১২টার দিকে ধারালো অস্ত্র রামদা, হাতুড়ি, রড নিয়ে হামলা করার উদ্দেশ্য যায় বলে অভিযোগ করেন আশাদুল হক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত আনুমানিক রাত ১২টার দিকে ১০-১২টা মোটরসাইকেলযোগে আশাদুলের বাড়িতে আসে ১৫ জনের অধিক সংখ্যক লোকজন। তারপর শুরু হয় উচ্চস্বরে বাগবিত-া। একপর্যায়ে সবাই ছুটে গেলে দেখতে পায় রাজু চেয়ারম্যানের কয়েকজন সাঙ্গু-পাঙ্গুসহ ইউনিয়নের কয়েকজন মেম্বার এসব কর্মকা- চালাচ্ছেন।

এ বিষয়ে গ্রামবাসী বলেন, ‘আমরা এখন নিরাপত্তাহীনায় আছি, মনে হচ্ছে আজ রাতেও তারা হয়তো আমাদের সমিতির সকল লোকজনের ওপর হামলা করবে। সেদিন ঘটনার সময় আশাদুল বাড়িতে ছিল না বলে বড় ধরণের ঘটনা ঘটেনি। সাঙ্গ-পাঙ্গরা চলে যাওয়ার পর রাজু চেয়ারম্যান পরে নিজে এসে হুমকি দিয়েছে বলে জানান আশাদুল।’

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু বলেন, ‘আমি এরকম কর্মকা- করিনি। তবে গত শনিবার বিলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনাতে আমি কিছু মাছ অবমুক্ত করি এবং ওই রাতে সংবাদ পায় বিলে কারা যেন মাছ ধরছে। এ খবর পাওয়ার সাথে সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সরোজমিনে পাঠায় এবং তারা মাছ ধরার জাল এবং হাড়ি মাছসহ উদ্ধার করে।’ এছাড়াও বলেন, ‘আমি বা আমার কোনো লোকজন এরকম কর্মকা- করেনি।’

এ বিষয়ে গহেরপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রহিৎ চন্দ্র মাঝি বলেন, বিলের ধারে জাল শুকাতে দেওয়া ছিল। তবে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে অযথা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে।

এ বিষয়ে আশাদুল বলেন, ‘আমাদের সমিতির ২৯ জন লাইসেন্সধারী জেলে গরীব পরিবারের লোকজন ওই ঘটনার পর এখন চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে ঘুমাতেও পারছি না। তবে আমরা আইনের আওতায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে তিতুদহ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই মেজবাহ বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর আমরা সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং জাল ও হাড়ি জেলেদের ফেরত দিয়ে দিই।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া বলেন, বিলটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ওই বিলের মালিক সরকার। ওখানে মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে সেটা আমি জানি। ওটা কেউ দখল নিতে পারবে না। তবে সরকারি নিলামে নিয়ম-কানুনের মধ্যদিয়ে যে পাবে, সেই এটির অস্থায়ী স্বত্ত্বাধিকারী হবে।’