ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় সাবেক এমপি ও অনিক জোয়ার্দ্দারের ছত্রছায়ায় আকাশের ত্রাসের রাজত্ব

কিশোর গ্যাং থেকে যেভাবে হয়ে উঠল দুর্ধর্ষ খুনী সন্ত্রাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২১:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা শহরের এক দুর্ধর্ষ খুনী সন্ত্রাসীর নাম ইমদাদুল হক আকাশ। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও তার ভাস্তে সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকের ক্যাডার নামে খ্যাত এই আকাশ কিশোর বয়স থেকেই ছিলো বেপরোয়া। বলা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহরে কিশোর গ্যাংয়ের সংগঠক দুজন দুর্ধর্ষ অপরাধীর মধ্যে আকাশ অন্যতম। স্কুলছাত্র থাকাকালীন সময় থেকেই ছিলো তার স্বভাবজাত। ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই দুই নেতার সাপোর্টে তিনি এবং তার কিশোর গ্যাং চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ীদের ত্রাস ছিল। তার চাঁদাবাজীর মাত্রা চরম পর্যায়ের। আকাশের মনে মায়া-দয়া নেই বলেই সাধারণ লোকজন মনে করেন। এই আকাশের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা শহরে মাদকের এক বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি হয়। এই সিন্ডিকেট নামি-দামি মাদকের প্রভাবে তরুণ প্রজন্মে ধ্বংস করছিল।
ছেলুন জোয়ার্দ্দার আর অনিক জোয়ার্দ্দারের ছত্রছায়ায় আকাশ তৈরি করেছিল ত্রাসের রাজত্ব। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে গিয়ে হুমকি-ধমকি দেয়া তার নিয়মিত স্বভাবে পরিণত হয়েছিল। দম্ভে আর ক্ষমতার দাপটে সাধারণ মানুষ এই আকাশের নামে মামলা করতেও ভয় পেতো। দখলবাজি, চাঁদাবাজির জন্য একটি বিশাল কিশোর গ্যাং তৈরি করে আকাশ। এই কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে শহরের বিভিন্ন স্থানে চলত চাঁদাবাজি ও মাদকের ব্যবসা। বিশেষ করে হাসপাতাল সড়ক, নতুন বাজার, কোর্ট রোড, শান্তিপাড়া, দক্ষিণ হাসপাতাল পাড়াসহ শহরের প্রায় সকল ব্যবসায়ীর কাছ থেকেই আকাশ ও তার কিশোর গ্যাং নিয়মিত মাসিক ও সাপ্তাহিক চাঁদা আদায় করতো। মারামারি থেকে চাঁদাবাজি, আর চাঁদাবাজি থেকে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সে।
২০১৬ সালের ১১ জুলাই রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের মহিলা কলেজপাড়ায় নিজ বাড়ির সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গোলাম হোসেন নামে এক মুদি ব্যবসায়ীকে কোপানো হয়। ২৫ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনেও ছিলেন ইমদাদুল হক আকাশ। মূলত এখান থেকেই আকাশের ওপরে ওঠা আর এটিই আকাশের জড়িত থাকা প্রথম খুন। এই হত্যার পর হত্যা মামলাটি আকাশকে ঝামেলা নয়, বরং পরিচিতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি করতে সাহায্য করে। সেখান থেকেই আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী। শুরু হয় একের পর এক দখল, হত্যার হুমকি আর চাঁদাবাজি।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অনিক জোয়ার্দ্দারের নির্দেশে পাগলা কুত্তার মতো যাকে তাকে হুমকি-ধমকি, অপমান, মারধর করাই ছিল আকাশের দৈনন্দিন কাজের অংশ। অনিক জোয়ার্দ্দারের পরামর্শ ও আশীর্বাদে মানুষ খুনেও কখনো হাত কাপেনি তার। এটাকেই তিনি তার রাজনীতির অংশ মনে করতো। আর কুকুর পোষার মতো করেই ছেলুন জোয়ার্দ্দারও তাকে দিতো সাহস।
২০২১ সালের ৭ নভেম্বর তারিখে পূর্ব বিরোধের জেরে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার আল হেলাল ইসলামি একাডেমির পরীক্ষার্থী মাহাবুবুর রহমান ওরফে তপুকে (১৭) বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি এই ইমদাদুল হক আকাশ। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড করার পরও বুক ফুলিয়ে শহরে সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজি করেছে আকাশ। সে সময় হত্যার ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও নানা আন্দোলন হলেও এই আকাশ ছিল সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ছত্রছায়ায়। ছেলুন জোয়ার্দ্দারের বাড়ির প্রাচীরের মধ্যে একটি পুরোনো নীচু কক্ষে দাগি আসামিদের আশ্রয় দেয়া হতো। খুন, গুম, হামলা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীরা ওই রুমে থাকলে আওয়ামী লীগের আমলে পুলিশ কোনো অভিযান করেনি তাদের গ্রেপ্তারে।
ফলে হত্যা করেও সাবেক এমপির ছত্রছায়ায় স্বাচ্ছন্দেই ঘুরেছে এই আকাশ তথা আকাশের মতো কুখ্যাত সন্ত্রাসীরা। এর আগে একবার ২০১৯ সালের ২০ মে তারিখে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের শান্তিপাড়ার নির্মাণাধীন ৪তলা বাড়ি থেকে হত্যা, ডাকাতি ও মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ১৩ জনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। ওই সময় ইমদাদুল হক আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন আকাশের কাছে একটি রিভালবারও পাওয়া যায়।
আকাশের শত অপরাধ সত্ত্বেও প্রাণের ভয়ে মুখ খোলেননি ভুক্তভোগীরা। আকাশের এতোসব অপকর্মের পাশাপাশি একটি অপরাধ চরম প্রভাব ফেলছিল চুয়াডাঙ্গা শহরের মানুষের উপরে। সেটি কিশোর গ্যাং। কিশোরদের অমানুষ করে তোলার এই প্রকল্পই ছিল তার। কিশোরদের বিভিন্ন প্রকার মাদকে আসক্ত করা এবং অর্থের লোভ দেখিয়ে নানা অপকর্ম করানো শুরু করে আকাশ। এ নিয়ে বেশকিছু কিশোরের পরিবার বিড়ম্বনায় পড়ে। কয়েকজন অভিভাবক থানা পর্যন্ত এসে নিজের সন্তানের নামে অভিযোগও দিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ নিজের সন্তানকে পাঠায় রিহ্যাবে। তবুও কিশোর গ্যাং তৈরিতে আকাশকে থামানো যায়নি। তার গঠিত কিশোর গ্যাং দিয়েই চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো সে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দখলও ছিলো আকাশের নেতৃত্বাধীন এই কিশোর গ্যাংয়ের। হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষকে পর্যন্ত কোপানোর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে আকাশ ও তার সহযোগীরা। হাসপাতাল এলাকায় প্রায় সকল দোকান থেকে চাঁদাবাজি করতো আকাশ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম অত্যাচারে নেতৃত্ব দেয় আকাশ। সনো টাওয়ারের সামনে বিক্ষোভরত নারী শিক্ষার্থীদের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছিলো এই আকাশ। এছাড়াও তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাণ্ডব চালায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাড়িতে। সব মিলিয়ে এই কুখ্যাত অপরাধীর প্রত্যেকদিন কেটেছে মাদক আর মানুষকে অত্যাচারের মধ্যদিয়ে। তার অপরাধের তালিকা দীর্ঘ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় সাবেক এমপি ও অনিক জোয়ার্দ্দারের ছত্রছায়ায় আকাশের ত্রাসের রাজত্ব

কিশোর গ্যাং থেকে যেভাবে হয়ে উঠল দুর্ধর্ষ খুনী সন্ত্রাসী

আপলোড টাইম : ০৯:২১:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা শহরের এক দুর্ধর্ষ খুনী সন্ত্রাসীর নাম ইমদাদুল হক আকাশ। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও তার ভাস্তে সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকের ক্যাডার নামে খ্যাত এই আকাশ কিশোর বয়স থেকেই ছিলো বেপরোয়া। বলা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহরে কিশোর গ্যাংয়ের সংগঠক দুজন দুর্ধর্ষ অপরাধীর মধ্যে আকাশ অন্যতম। স্কুলছাত্র থাকাকালীন সময় থেকেই ছিলো তার স্বভাবজাত। ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই দুই নেতার সাপোর্টে তিনি এবং তার কিশোর গ্যাং চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ীদের ত্রাস ছিল। তার চাঁদাবাজীর মাত্রা চরম পর্যায়ের। আকাশের মনে মায়া-দয়া নেই বলেই সাধারণ লোকজন মনে করেন। এই আকাশের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা শহরে মাদকের এক বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি হয়। এই সিন্ডিকেট নামি-দামি মাদকের প্রভাবে তরুণ প্রজন্মে ধ্বংস করছিল।
ছেলুন জোয়ার্দ্দার আর অনিক জোয়ার্দ্দারের ছত্রছায়ায় আকাশ তৈরি করেছিল ত্রাসের রাজত্ব। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে গিয়ে হুমকি-ধমকি দেয়া তার নিয়মিত স্বভাবে পরিণত হয়েছিল। দম্ভে আর ক্ষমতার দাপটে সাধারণ মানুষ এই আকাশের নামে মামলা করতেও ভয় পেতো। দখলবাজি, চাঁদাবাজির জন্য একটি বিশাল কিশোর গ্যাং তৈরি করে আকাশ। এই কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে শহরের বিভিন্ন স্থানে চলত চাঁদাবাজি ও মাদকের ব্যবসা। বিশেষ করে হাসপাতাল সড়ক, নতুন বাজার, কোর্ট রোড, শান্তিপাড়া, দক্ষিণ হাসপাতাল পাড়াসহ শহরের প্রায় সকল ব্যবসায়ীর কাছ থেকেই আকাশ ও তার কিশোর গ্যাং নিয়মিত মাসিক ও সাপ্তাহিক চাঁদা আদায় করতো। মারামারি থেকে চাঁদাবাজি, আর চাঁদাবাজি থেকে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সে।
২০১৬ সালের ১১ জুলাই রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের মহিলা কলেজপাড়ায় নিজ বাড়ির সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গোলাম হোসেন নামে এক মুদি ব্যবসায়ীকে কোপানো হয়। ২৫ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনেও ছিলেন ইমদাদুল হক আকাশ। মূলত এখান থেকেই আকাশের ওপরে ওঠা আর এটিই আকাশের জড়িত থাকা প্রথম খুন। এই হত্যার পর হত্যা মামলাটি আকাশকে ঝামেলা নয়, বরং পরিচিতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি করতে সাহায্য করে। সেখান থেকেই আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী। শুরু হয় একের পর এক দখল, হত্যার হুমকি আর চাঁদাবাজি।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অনিক জোয়ার্দ্দারের নির্দেশে পাগলা কুত্তার মতো যাকে তাকে হুমকি-ধমকি, অপমান, মারধর করাই ছিল আকাশের দৈনন্দিন কাজের অংশ। অনিক জোয়ার্দ্দারের পরামর্শ ও আশীর্বাদে মানুষ খুনেও কখনো হাত কাপেনি তার। এটাকেই তিনি তার রাজনীতির অংশ মনে করতো। আর কুকুর পোষার মতো করেই ছেলুন জোয়ার্দ্দারও তাকে দিতো সাহস।
২০২১ সালের ৭ নভেম্বর তারিখে পূর্ব বিরোধের জেরে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার আল হেলাল ইসলামি একাডেমির পরীক্ষার্থী মাহাবুবুর রহমান ওরফে তপুকে (১৭) বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি এই ইমদাদুল হক আকাশ। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড করার পরও বুক ফুলিয়ে শহরে সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজি করেছে আকাশ। সে সময় হত্যার ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও নানা আন্দোলন হলেও এই আকাশ ছিল সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ছত্রছায়ায়। ছেলুন জোয়ার্দ্দারের বাড়ির প্রাচীরের মধ্যে একটি পুরোনো নীচু কক্ষে দাগি আসামিদের আশ্রয় দেয়া হতো। খুন, গুম, হামলা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীরা ওই রুমে থাকলে আওয়ামী লীগের আমলে পুলিশ কোনো অভিযান করেনি তাদের গ্রেপ্তারে।
ফলে হত্যা করেও সাবেক এমপির ছত্রছায়ায় স্বাচ্ছন্দেই ঘুরেছে এই আকাশ তথা আকাশের মতো কুখ্যাত সন্ত্রাসীরা। এর আগে একবার ২০১৯ সালের ২০ মে তারিখে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের শান্তিপাড়ার নির্মাণাধীন ৪তলা বাড়ি থেকে হত্যা, ডাকাতি ও মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ১৩ জনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। ওই সময় ইমদাদুল হক আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন আকাশের কাছে একটি রিভালবারও পাওয়া যায়।
আকাশের শত অপরাধ সত্ত্বেও প্রাণের ভয়ে মুখ খোলেননি ভুক্তভোগীরা। আকাশের এতোসব অপকর্মের পাশাপাশি একটি অপরাধ চরম প্রভাব ফেলছিল চুয়াডাঙ্গা শহরের মানুষের উপরে। সেটি কিশোর গ্যাং। কিশোরদের অমানুষ করে তোলার এই প্রকল্পই ছিল তার। কিশোরদের বিভিন্ন প্রকার মাদকে আসক্ত করা এবং অর্থের লোভ দেখিয়ে নানা অপকর্ম করানো শুরু করে আকাশ। এ নিয়ে বেশকিছু কিশোরের পরিবার বিড়ম্বনায় পড়ে। কয়েকজন অভিভাবক থানা পর্যন্ত এসে নিজের সন্তানের নামে অভিযোগও দিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ নিজের সন্তানকে পাঠায় রিহ্যাবে। তবুও কিশোর গ্যাং তৈরিতে আকাশকে থামানো যায়নি। তার গঠিত কিশোর গ্যাং দিয়েই চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো সে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দখলও ছিলো আকাশের নেতৃত্বাধীন এই কিশোর গ্যাংয়ের। হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষকে পর্যন্ত কোপানোর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে আকাশ ও তার সহযোগীরা। হাসপাতাল এলাকায় প্রায় সকল দোকান থেকে চাঁদাবাজি করতো আকাশ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম অত্যাচারে নেতৃত্ব দেয় আকাশ। সনো টাওয়ারের সামনে বিক্ষোভরত নারী শিক্ষার্থীদের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছিলো এই আকাশ। এছাড়াও তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাণ্ডব চালায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাড়িতে। সব মিলিয়ে এই কুখ্যাত অপরাধীর প্রত্যেকদিন কেটেছে মাদক আর মানুষকে অত্যাচারের মধ্যদিয়ে। তার অপরাধের তালিকা দীর্ঘ।