ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

কার্পাসডাঙ্গার নিরাময় ক্লিনিকের বিরুদ্ধে চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ

সিজারিয়ানের ১১ দিন পর মারা গেলেন প্রসূতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৪৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৩৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় নিরাময় ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের ১১ দিন পর মমতাজ খাতুন (৩২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরআগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল বিকেল ৪চার দিকে পরিবারের সদস্যরা মমতাজকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ তুলেছেন সিজারিয়ান অপারেশনের পর নিরাময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের কর্তব্য অবহেলায় মমতাজের মৃত্যু হয়েছে। নিহত মমতাজ খাতুন কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পান্তাপাড়া গ্রামের ইমান আলীর স্ত্রী।
মমতাজ খাতুনের বোন ফুলমনি বলেন, গত ২৫ নভেম্বর মমতাজের প্রসববেদনা শুরু হলে তাকে কার্পাসডাঙ্গার নিরাময় ক্লিনিকে নেওয়া হয়। এসময় নিরাময় ক্লিনিকের মালিক বিল্লাল হোসেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সিজার করতে হবে জানালে আমরা মমতাজজে সেখানে ভর্তি করি। ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুর ক্লিনিকে এসে বোনের সিজার করেন। মমতাজ একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে।
ফুলমনি অভিযোগ করে বলেন, সিজারের পর চারদিন পার হলেও মমতাজের পেটের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বের রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। বার বার বলার পরেও ক্লিনিকের কেউ তাতে গুরুত্ব না দিয়ে মমতাজকে ছুটি দিয়ে দেয়। সিজারের পর আমার বোনের শরীরে রক্ত শুন্যতা থাকলেও চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিক সেদিকে খেয়ালই করেননি। বাড়িতে নেওয়ার পরেও মমতাজের পেটের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বের হতে থাকে। এর তিন দিন পর মমতাজকে আবার ওই ক্লিনিকে নেওয়া হয়। এসময় পাশের অন্য একটি ক্লিনিকে নিয়ে বোনের শরীরে রক্ত দেন ক্লিনিকের মালিক বিল্লাল হোসেন। তারা আমার বোনকে কোন গুরুত্বই দেওয়নি। তাদের অবহেলার জন্যই আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে।
নিরাময় ক্লিনিকের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, সিজারিয়ানের চারদিন পর রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। এরও তিনদিন পর রোগীর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাকে আবার ক্লিনিকে নিয়ে আসে। সেসময় ক্লিনিকে কোন ডাক্তার না থাকায় পাশের এক ক্লিনিক থেকে ওই রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া হয়। এরপর সে আবার বাড়িতে চলে যায়।
এ বিষয়ে ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুর বলেন, আমি শুধু সিজারিয়ান অপারেশন করেছি। অপারেশনে কোন সমস্যা হয়নি। রোগীর অবস্থা ভালো ছিলো। পরে ওই রোগীর বিষয়ে আমার আর কিছুই জানা ছিল না। মঙ্গলবার শুনেছি ওই রোগীর শরীরে এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে।
মমতাজের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোর্শেদ আলম বলেন, জরুরি বিভাগে নেওয়ার সময় মমতাজের ক্ষতস্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী নেওয়ার প্রস্তুতিকালে রাত সাড়ে ৭টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কার্পাসডাঙ্গার নিরাময় ক্লিনিকের বিরুদ্ধে চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ

সিজারিয়ানের ১১ দিন পর মারা গেলেন প্রসূতি

আপলোড টাইম : ১১:৪৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় নিরাময় ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের ১১ দিন পর মমতাজ খাতুন (৩২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরআগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল বিকেল ৪চার দিকে পরিবারের সদস্যরা মমতাজকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ তুলেছেন সিজারিয়ান অপারেশনের পর নিরাময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের কর্তব্য অবহেলায় মমতাজের মৃত্যু হয়েছে। নিহত মমতাজ খাতুন কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পান্তাপাড়া গ্রামের ইমান আলীর স্ত্রী।
মমতাজ খাতুনের বোন ফুলমনি বলেন, গত ২৫ নভেম্বর মমতাজের প্রসববেদনা শুরু হলে তাকে কার্পাসডাঙ্গার নিরাময় ক্লিনিকে নেওয়া হয়। এসময় নিরাময় ক্লিনিকের মালিক বিল্লাল হোসেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সিজার করতে হবে জানালে আমরা মমতাজজে সেখানে ভর্তি করি। ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুর ক্লিনিকে এসে বোনের সিজার করেন। মমতাজ একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে।
ফুলমনি অভিযোগ করে বলেন, সিজারের পর চারদিন পার হলেও মমতাজের পেটের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বের রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। বার বার বলার পরেও ক্লিনিকের কেউ তাতে গুরুত্ব না দিয়ে মমতাজকে ছুটি দিয়ে দেয়। সিজারের পর আমার বোনের শরীরে রক্ত শুন্যতা থাকলেও চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিক সেদিকে খেয়ালই করেননি। বাড়িতে নেওয়ার পরেও মমতাজের পেটের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বের হতে থাকে। এর তিন দিন পর মমতাজকে আবার ওই ক্লিনিকে নেওয়া হয়। এসময় পাশের অন্য একটি ক্লিনিকে নিয়ে বোনের শরীরে রক্ত দেন ক্লিনিকের মালিক বিল্লাল হোসেন। তারা আমার বোনকে কোন গুরুত্বই দেওয়নি। তাদের অবহেলার জন্যই আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে।
নিরাময় ক্লিনিকের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, সিজারিয়ানের চারদিন পর রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। এরও তিনদিন পর রোগীর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাকে আবার ক্লিনিকে নিয়ে আসে। সেসময় ক্লিনিকে কোন ডাক্তার না থাকায় পাশের এক ক্লিনিক থেকে ওই রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া হয়। এরপর সে আবার বাড়িতে চলে যায়।
এ বিষয়ে ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুর বলেন, আমি শুধু সিজারিয়ান অপারেশন করেছি। অপারেশনে কোন সমস্যা হয়নি। রোগীর অবস্থা ভালো ছিলো। পরে ওই রোগীর বিষয়ে আমার আর কিছুই জানা ছিল না। মঙ্গলবার শুনেছি ওই রোগীর শরীরে এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে।
মমতাজের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোর্শেদ আলম বলেন, জরুরি বিভাগে নেওয়ার সময় মমতাজের ক্ষতস্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী নেওয়ার প্রস্তুতিকালে রাত সাড়ে ৭টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।