ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে’

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৮:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কথায় আছে ওস্তাদের মার শেষ রাতে। চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বহু অনুসারীর কাছে তিনি ওস্তাদ। কারো কাছে তিনি মেজো ভাই। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। রোববার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং এই দুই সাংগঠনিক ইউনিটের নেতৃত্বে কে বা কারা আসবেন, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গায় অনেক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। কেউ কেউ মিরাক্কেলের মতই ভাগ বসাবেন পদে, এমনই শোনা যাচ্ছিল। শেষমেষ এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্যদিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হয়ে এসছেন, তাঁরা সকলেই দীর্ঘদিনের আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। সদ্য নির্বাচিত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শংকরচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বপালন করছিলেন। এবং সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান মানিক আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবারের মতো কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। এছাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দীন হেলা দীর্ঘ ২২ বছর আওয়ামী লীগের সাথে আছেন। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বপালন করছিলেন। এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। মূল নেতৃত্বে আসা চারজনই দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির অনুসারী। চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে লড়াই সংগ্রামের কথা মাথায় রেখেই দলের একনিষ্ঠ কর্মীদেরই চুয়াডাঙ্গা সদর ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসলেন। নির্বাচিত এই চার নেতাই শুধু যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, তা নয়। তাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পরিক্ষিত।

অবশেষে সব গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় বা কাউন্সিল অধিবেশন শেষে যখন নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন উপস্থিত অনেকককেই বলতে শোনা যায়, ‘চুয়াডাঙ্গা জেলার রাজনীতিতে ছেলুন মিয়ার বাইরে কিছুই হয় না। কারণ ওস্তাদের মার শেষ রাতে।’

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও স্লোগান দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর অনুসারীদের সাথে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আহাম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিকের অনুসারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে মঞ্চে উঠে হাসানুজ্জামান মানিক তার বক্তব্য শেষ করার আগে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপরেও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই এদিন সন্ধ্যায় সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরে মঞ্চ ঘিরে আবারও উত্তেজনা দেখা যায়। এসময় জেলা ও গোয়েন্দা পুলিশ কলেজের গেট বন্ধ করে কঠোর অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জিপু চৌধুরীকে তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করতেও দেখা যায়। এ ঘটনার পর যখন সবাই ধারণা করছিলেন, সম্মেলন হয়তো পন্ড হয়ে যাবে। কিন্তু এতোকিছুর পরেও সম্মেলন সম্পন্ন হয়। আর এই সম্মেলনে ঘোষিত কমিটির গুরুত্বপূর্ণ চারটি পদে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির অনুসারীরা নির্বাচিত হোন। এরপরই সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে বলতে শোনা যায়- ‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে’

আপলোড টাইম : ০৮:৫৮:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: কথায় আছে ওস্তাদের মার শেষ রাতে। চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বহু অনুসারীর কাছে তিনি ওস্তাদ। কারো কাছে তিনি মেজো ভাই। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। রোববার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং এই দুই সাংগঠনিক ইউনিটের নেতৃত্বে কে বা কারা আসবেন, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গায় অনেক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। কেউ কেউ মিরাক্কেলের মতই ভাগ বসাবেন পদে, এমনই শোনা যাচ্ছিল। শেষমেষ এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্যদিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হয়ে এসছেন, তাঁরা সকলেই দীর্ঘদিনের আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। সদ্য নির্বাচিত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শংকরচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বপালন করছিলেন। এবং সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান মানিক আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবারের মতো কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। এছাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দীন হেলা দীর্ঘ ২২ বছর আওয়ামী লীগের সাথে আছেন। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বপালন করছিলেন। এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। মূল নেতৃত্বে আসা চারজনই দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির অনুসারী। চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে লড়াই সংগ্রামের কথা মাথায় রেখেই দলের একনিষ্ঠ কর্মীদেরই চুয়াডাঙ্গা সদর ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসলেন। নির্বাচিত এই চার নেতাই শুধু যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, তা নয়। তাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পরিক্ষিত।

অবশেষে সব গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় বা কাউন্সিল অধিবেশন শেষে যখন নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন উপস্থিত অনেকককেই বলতে শোনা যায়, ‘চুয়াডাঙ্গা জেলার রাজনীতিতে ছেলুন মিয়ার বাইরে কিছুই হয় না। কারণ ওস্তাদের মার শেষ রাতে।’

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও স্লোগান দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর অনুসারীদের সাথে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আহাম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিকের অনুসারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে মঞ্চে উঠে হাসানুজ্জামান মানিক তার বক্তব্য শেষ করার আগে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপরেও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই এদিন সন্ধ্যায় সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরে মঞ্চ ঘিরে আবারও উত্তেজনা দেখা যায়। এসময় জেলা ও গোয়েন্দা পুলিশ কলেজের গেট বন্ধ করে কঠোর অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জিপু চৌধুরীকে তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করতেও দেখা যায়। এ ঘটনার পর যখন সবাই ধারণা করছিলেন, সম্মেলন হয়তো পন্ড হয়ে যাবে। কিন্তু এতোকিছুর পরেও সম্মেলন সম্পন্ন হয়। আর এই সম্মেলনে ঘোষিত কমিটির গুরুত্বপূর্ণ চারটি পদে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির অনুসারীরা নির্বাচিত হোন। এরপরই সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে বলতে শোনা যায়- ‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে।’