ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

আসছে বোরোর মৌসুম; সারের চাহিদা মেটাতে হবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৪৬ বার পড়া হয়েছে

বোরো ধানের মৌসুম শুরু হচ্ছে চলতি মাসেই। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বোরোর আবাদ শুরু হয়। দেশে সবচেয়ে বেশি ধানের ফলন হয় এই মৌসুমে। এ সময় সারসহ চাষাবাদের প্রয়োজনীয় উপকরণের চাহিদাও থাকে বেশি। তা ছাড়া সাম্প্রতিক আকস্মিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১২টি জেলাসহ মোট ২৬টি জেলায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য বোরোর উৎপাদনে আরো বেশি জোর দেয়া দরকার বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা। এ অবস্থায় এবারের মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের। এ বছর দেশে সারের মোট চাহিদা প্রায় ৬৯ লাখ টন। এর বেশিটাই দরকার হবে বোরো মৌসুমে। বিপরীতে মজুদ আছে প্রায় ১৮ লাখ টন। মোট চাহিদার পাঁচ ভাগের চার ভাগই পূরণ হয় আমদানি করে। এবার বেসরকারি উদ্যোগে সাড়ে ৯ লাখ টন সার আমদানির কথা। কিন্তু ডলার সঙ্কটে আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে দেশে উৎপাদন ঘাটতি। পাঁচটি ইউরিয়া কারখানার মধ্যে চারটিতেই গ্যাসের অভাবে উৎপাদন বন্ধ। উৎপাদন ও আমদানি জটিলতায় সৃষ্ট সঙ্কটে ইউরিয়াসহ সারের সরবরাহ নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বোরো মৌসুমে সারের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হলে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমনও ধারণা করছেন অনেকে। কারণ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় আমনের যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া তো যাবেই না বরং নতুন করে ঘাটতি দেখা দেবে। স্বৈরাচারের দুর্নীতি ও নির্বিচার লুটপাটে অর্থনীতি এখন পঙ্গু। ডলারের যথেষ্ট মজুদ নেই। অন্তর্র্বতী সরকার সদ্যই দায়িত্ব নিয়েছে। অর্থনীতির নাজুক অবস্থা কাটিয়ে উঠতে তাদের সময় লাগবে। কিন্তু মৌসুমের চাহিদা সেজন্য অপূর্ণ রাখা যাবে না। যেকোনো উপায়ে সারের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এ অবস্থায় রেশনিং করে হলেও গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে সারকারখানাগুলোকে পুরোদমে উৎপাদনে নিয়ে আসা যায় কি না ভেবে দেখা যেতে পারে। বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির প্রক্রিয়া দ্রুততর করা যায় কি না দেখতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকলে তা দূর করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, আসন্ন মৌসুমে সারের সঙ্কট হবে না।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের বরাত দিয়ে একটি দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে, প্রতি বছরের মতো নিয়মিত প্রক্রিয়ায় সার ব্যবস্থাপনার কাজ চলছে। আমদানির কাজও চলমান।
অন্য দিকে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বোরো মৌসুম সামনে রেখে সরকার ৬৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৪০ হাজার টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে সার আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাই সারের সঙ্কট হবে না। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন সরকারকে বিব্রত করার নানামুখী তৎপরতা চলছে। প্রশাসনের ভেতরেও পতিত স্বৈরাচারের সহযোগীরা সক্রিয়। সার আমদানি বিঘ্নিত করা হচ্ছে এমন অভিযোগও গণমাধ্যমে এসেছে। দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের অবস্থা আগে থেকেই দুর্দশাগ্রস্ত। এ সময় খাদ্য নিরাপত্তায় কোনো রকম ব্যত্যয় হলে তার ধকল সামাল দেয়া কঠিন হতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আসছে বোরোর মৌসুম; সারের চাহিদা মেটাতে হবে

আপলোড টাইম : ০৩:০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

বোরো ধানের মৌসুম শুরু হচ্ছে চলতি মাসেই। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বোরোর আবাদ শুরু হয়। দেশে সবচেয়ে বেশি ধানের ফলন হয় এই মৌসুমে। এ সময় সারসহ চাষাবাদের প্রয়োজনীয় উপকরণের চাহিদাও থাকে বেশি। তা ছাড়া সাম্প্রতিক আকস্মিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১২টি জেলাসহ মোট ২৬টি জেলায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য বোরোর উৎপাদনে আরো বেশি জোর দেয়া দরকার বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা। এ অবস্থায় এবারের মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের। এ বছর দেশে সারের মোট চাহিদা প্রায় ৬৯ লাখ টন। এর বেশিটাই দরকার হবে বোরো মৌসুমে। বিপরীতে মজুদ আছে প্রায় ১৮ লাখ টন। মোট চাহিদার পাঁচ ভাগের চার ভাগই পূরণ হয় আমদানি করে। এবার বেসরকারি উদ্যোগে সাড়ে ৯ লাখ টন সার আমদানির কথা। কিন্তু ডলার সঙ্কটে আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে দেশে উৎপাদন ঘাটতি। পাঁচটি ইউরিয়া কারখানার মধ্যে চারটিতেই গ্যাসের অভাবে উৎপাদন বন্ধ। উৎপাদন ও আমদানি জটিলতায় সৃষ্ট সঙ্কটে ইউরিয়াসহ সারের সরবরাহ নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বোরো মৌসুমে সারের অভাবে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হলে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমনও ধারণা করছেন অনেকে। কারণ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় আমনের যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া তো যাবেই না বরং নতুন করে ঘাটতি দেখা দেবে। স্বৈরাচারের দুর্নীতি ও নির্বিচার লুটপাটে অর্থনীতি এখন পঙ্গু। ডলারের যথেষ্ট মজুদ নেই। অন্তর্র্বতী সরকার সদ্যই দায়িত্ব নিয়েছে। অর্থনীতির নাজুক অবস্থা কাটিয়ে উঠতে তাদের সময় লাগবে। কিন্তু মৌসুমের চাহিদা সেজন্য অপূর্ণ রাখা যাবে না। যেকোনো উপায়ে সারের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এ অবস্থায় রেশনিং করে হলেও গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে সারকারখানাগুলোকে পুরোদমে উৎপাদনে নিয়ে আসা যায় কি না ভেবে দেখা যেতে পারে। বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির প্রক্রিয়া দ্রুততর করা যায় কি না দেখতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকলে তা দূর করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, আসন্ন মৌসুমে সারের সঙ্কট হবে না।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের বরাত দিয়ে একটি দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে, প্রতি বছরের মতো নিয়মিত প্রক্রিয়ায় সার ব্যবস্থাপনার কাজ চলছে। আমদানির কাজও চলমান।
অন্য দিকে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বোরো মৌসুম সামনে রেখে সরকার ৬৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৪০ হাজার টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে সার আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাই সারের সঙ্কট হবে না। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন সরকারকে বিব্রত করার নানামুখী তৎপরতা চলছে। প্রশাসনের ভেতরেও পতিত স্বৈরাচারের সহযোগীরা সক্রিয়। সার আমদানি বিঘ্নিত করা হচ্ছে এমন অভিযোগও গণমাধ্যমে এসেছে। দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের অবস্থা আগে থেকেই দুর্দশাগ্রস্ত। এ সময় খাদ্য নিরাপত্তায় কোনো রকম ব্যত্যয় হলে তার ধকল সামাল দেয়া কঠিন হতে পারে।