ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

আখ ক্ষেতে মিলল অর্ধগলিত নগ্ন লাশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:০৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, তিতুদহ:
চুয়াডাঙ্গার তিতুদহে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির আখখেত থেকে ইয়াদ আলী (৫০) নামের এক ব্যক্তির অর্ধগলিত নগ্ন মরদেহ উদ্ধার করছে পুলিশ। গত ১৪ দিন যাবত নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে ঘাসকাটার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি আখখেতের মধ্যে গলিত নগ্ন লাশটিকে দেথতে পেয়ে তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশে খবর দেয়। ইয়াদ আলী সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। খবর পেয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফুল কবীর ও অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) নিখিল চন্দ্র অধিকারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গতকালই নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, তিতুদহ ইউনিয়নের ৬২ নম্বর আড়িয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী লতিফ গতকাল দুপুরে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ৩৫ একর নামক দাগের স্থানে আখখেতে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। ঘাস কাটার এক পর্যায়ে তিনি আখখেতের নিকটে গেলে দুর্গন্ধযুক্ত নগ্ন অবস্থায় অজ্ঞাত ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ দেখতে পান। এসময় তিনি লাশটির বিষয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের জানালে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তবে স্থানীয়দের মধ্যে কেউ অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে না পারলেও হাতের আঙুলের আঁচিল ও দাঁতের পুটিং দেখে লাশটি ইয়াদ আলীর বলে শনাক্ত করে পরিবারের সদস্যরা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ইয়াদ আলী দীর্ঘ ১১ বছর প্রবাসে ছিলেন। দেড় বছর পূর্বে তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে আসার পর তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করালেও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেননি তিনি। এরই মধ্যে গত ১৪ দিন পূর্বে ইয়াদ আলী বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে দর্শনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এবং বিভিন্ন অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করেন। এরই মধ্যে গতকাল বিকেলে আড়িয়ায় গ্রামের আখখেতে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের বিষয়ে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যায় পরিবারের সদস্যরা। এসময় অজ্ঞাত অর্ধগলিত নগ্ন লাশটির আঙুলের আঁচিল ও দাঁতের পুটিং দেখে মৃতদেহটি ইয়াদ আলীর বলে শনাক্ত করেন তাঁরা।

এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) নিখিল চন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পায় আখখেতের মধ্যে লাশটি পড়ে আছে। লাশের সারা শরীরে পোকা লেগে গিয়েছিল।

প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু ধারণা করা যাচ্ছে না। তবে লাশটি ১৪ দিন পূর্বে নিখোঁজ হওয়া ইয়াদ আলীর বলে শনাক্ত করেছে পরিবারের সদস্যরা। আমরা লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ হয়নি। তবে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আখ ক্ষেতে মিলল অর্ধগলিত নগ্ন লাশ

আপলোড টাইম : ০৪:০৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

প্রতিবেদক, তিতুদহ:
চুয়াডাঙ্গার তিতুদহে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির আখখেত থেকে ইয়াদ আলী (৫০) নামের এক ব্যক্তির অর্ধগলিত নগ্ন মরদেহ উদ্ধার করছে পুলিশ। গত ১৪ দিন যাবত নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে ঘাসকাটার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি আখখেতের মধ্যে গলিত নগ্ন লাশটিকে দেথতে পেয়ে তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশে খবর দেয়। ইয়াদ আলী সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। খবর পেয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফুল কবীর ও অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) নিখিল চন্দ্র অধিকারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গতকালই নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, তিতুদহ ইউনিয়নের ৬২ নম্বর আড়িয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী লতিফ গতকাল দুপুরে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ৩৫ একর নামক দাগের স্থানে আখখেতে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। ঘাস কাটার এক পর্যায়ে তিনি আখখেতের নিকটে গেলে দুর্গন্ধযুক্ত নগ্ন অবস্থায় অজ্ঞাত ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ দেখতে পান। এসময় তিনি লাশটির বিষয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের জানালে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তবে স্থানীয়দের মধ্যে কেউ অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে না পারলেও হাতের আঙুলের আঁচিল ও দাঁতের পুটিং দেখে লাশটি ইয়াদ আলীর বলে শনাক্ত করে পরিবারের সদস্যরা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ইয়াদ আলী দীর্ঘ ১১ বছর প্রবাসে ছিলেন। দেড় বছর পূর্বে তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে আসার পর তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করালেও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেননি তিনি। এরই মধ্যে গত ১৪ দিন পূর্বে ইয়াদ আলী বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে দর্শনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এবং বিভিন্ন অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করেন। এরই মধ্যে গতকাল বিকেলে আড়িয়ায় গ্রামের আখখেতে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের বিষয়ে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যায় পরিবারের সদস্যরা। এসময় অজ্ঞাত অর্ধগলিত নগ্ন লাশটির আঙুলের আঁচিল ও দাঁতের পুটিং দেখে মৃতদেহটি ইয়াদ আলীর বলে শনাক্ত করেন তাঁরা।

এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) নিখিল চন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পায় আখখেতের মধ্যে লাশটি পড়ে আছে। লাশের সারা শরীরে পোকা লেগে গিয়েছিল।

প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু ধারণা করা যাচ্ছে না। তবে লাশটি ১৪ দিন পূর্বে নিখোঁজ হওয়া ইয়াদ আলীর বলে শনাক্ত করেছে পরিবারের সদস্যরা। আমরা লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ হয়নি। তবে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’