মাদকের অবাধ বাণিজ্য; সরষের ভূত তাড়াতে হবে আগে
- আপলোড তারিখঃ ২৫-০৩-২০১৮ ইং
সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বনাশা ইয়াবা। ইয়াবাসেবীর সংখ্যা বাড়ছে। সহজপ্রাপ্য হওয়ায় কিশোর-তরুণরাও মাদকে আসক্ত হচ্ছে। মাদক বাণিজ্যের নেপথ্যে অনেক ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালীর হাত রয়েছে বলে জানা যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে যেমন কয়েক’শ ডিলার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তেমনি নেপথ্যে তাদের নিয়ন্ত্রণ করছে গডফাদাররা। মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের খুঁজে পায় না। আবার অনেক সময় খুঁজে পেলেও আইনের ফাঁক দিয়ে ঠিকই বেরিয়ে এসে আবার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ইয়াবা পাচার করে অনেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে। লোভ সামলাতে পারছেন না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। তাঁদের কেউ কেউ দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সরাসরি ইয়াবা সংগ্রহ করে পাচারে জড়াচ্ছেন। অনেকে আবার জব্দ করা ইয়াবার পুরো অংশ জব্দ না দেখিয়ে নিজেদের কাছে রেখে সেই মাদক বাইরে চালান করার কাজও করছেন। এক বাহিনীর হাতে অন্য বাহিনীর সদস্য ধরাপড়ার ঘটনাও ঘটেছে। যেহেতু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ইয়াবা বা মাদক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছেন, তাই ধরাপড়ার ঘটনা ঘটতেই পারে। যাদের হাত দিয়ে মাদক বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার কথা, তারাই মাদক বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দেবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মাদক বাণিজ্যের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও এমন অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এর আগে ১০ দফা নির্দেশনা পাঠানো হয় সারা দেশে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি সেই নির্দেশনা মেনে চলছে? অন্যান্য বাহিনী কি মাদকের বিস্তার রোধে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে? আগে অভিযোগ শোনা যেত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে থাকেন। এখন সহায়তা করাই শুধু নয়, সরাসরি মাদক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এসব অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা দরকার। দেশ থেকে মাদক দূর করতে হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে। জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিকল্পও তো নেই। এখন সময় এসেছে এসব বাহিনীতে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের যুবশক্তিকে ধ্বংস করে দেয় এমন কোনো তৎপরতা দেশের অভ্যন্তরে চলতে দেওয়া যাবে না। সরষের ভূত আগে তাড়াতে হবে।
কমেন্ট বক্স