বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

ব্যাংকিং খাতে সুশাসন অপরিহার্য

  • আপলোড তারিখঃ ১২-০৩-২০১৮ ইং
ব্যাংকিং খাতে সুশাসন অপরিহার্য
দেশের ব্যাংকিংখাতে অস্থিরতা চলছে এবং সময়ের সাথে খেলাপী ঋণও বাড়ছে। ২০১৭ সালের শেষে ব্যাংকগুলোতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া রাইট অফ কৃত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যালেন্সশিটে অর্ন্তভুক্ত নয়। ২০০৮ সালের শেষে খেলাপী ঋণ ছিল ২২,৪৮১ কোটি টাকা আর রাইট অফ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫,৬৬৭ কোটি টাকা। মোট খেলাপী ঋণ ছিল ৩৮,১৪৮ কোটি টাকা। সেই ঋণ বেড়ে ২০১৭ সালের শেষে এসে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো প্রতি বছর বিশাল অংকের খেলাপী ঋণকে রাইট অফ করে এবং তা ব্যালেন্সশিট থেকে বাদ দেয়। রাইট অফ করা এই ঋণ ব্যাল্যান্সশিটের অর্ন্তভুক্ত থাকে না বিধায়, তা খেলাপী ঋণ হিসেবে ব্যাংকগুলো প্রকাশ করে না। তাছাড়া ব্যাংকগুলো আরো বিশাল অংকের খেলাপী ঋণ বিভিন্ন মেয়াদে রিসিডিউল করেছে, যা খেলাপী ঋণ হলেও রিসিডিউল করার কারণে আর খেলাপী ঋণে গণ্য করা হয় না। ২০১৫ সালে বড় বড় শিল্প গ্রুপসমূহ ১৫০০০ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করেছে, যার বেশিরভাগই আবার খেলাপী হয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোতে বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ২৫ শতাংশই খেলাপী আর বেসরকারি ব্যাংক খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রায় ১০ শতাংশ। রিসিডিউল এবং পুনর্গঠন করা ঋণ হিসাবে আনলে এই খেলাপী ঋণের পরিমাণ আরো অনেক বেশি হবে। খেলাপী ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি মুখ থুবড়ে পড়েছে এবং অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধিও বাধাগ্রস্থ হয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। হল-মার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ কেলেংকারী, বেসিক ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক কেলেংকারী আর সেন্ট্রাল ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি এবং বিভিন্নœ প্রতিষ্ঠানকে নিয়ম লংঘন করে অতিরিক্ত ঋণ প্রদানের ঘটনাসহ ব্যাংকিং সেক্টরের বিভিন্ন অপকর্ম জনগণের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি কিছুটা আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি জনগণের আস্থা সৃষ্টি করতে হবে এবং তার জন্য ব্যাংকিং খাতে সুশাসন অপরিহার্য। এ অবস্থায় ব্যাংকিং সেক্টরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং জনগণের আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। আস্থাহীনতার কারণে জনগণ যদি ব্যাংকে টাকা জমা না রাখে, তাহলে কিন্তু ব্যাংকগুলো ডিপোজিট সমস্যায় পড়বে। ফলে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে না এবং আয় করতে পারবে না। ব্যাংকের বিনিয়োগ বা ঋণ প্রবাহ কমে গেলে দেশের অর্থনীতিই সমস্যায় পড়বে। সুতরাং দেশের কল্যাণেই ব্যাংকিং সেক্টরের উন্নতি ঘটাতেই হবে। ব্যাংকগুলোতে পেশাদারিত্বের বিকাশ ঘটাতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোতে সৎ এবং যোগ্য ব্যক্তিদেরকে নিয়োগ দিতে হবে। কর্মকর্তারা সৎ না হলে ঋণ বিতরণে অনিয়ম বন্ধ হবে না। আর অভিজ্ঞতা সবসময় যোগ্যতার বিকল্প হতে পারে না। অর্থনীতি এবং ব্যাংকিং বিষয়ে অভিজ্ঞ না হলে এবং অর্থনীতির গতি প্রকৃতি সম্পর্কে জ্ঞান ও দূরদর্শিতা না থাকলে তাদের পক্ষে অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ব্যাংকিং খাতকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া কখনো সম্ভব নয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপী ঋণ কমবে না। একই সাথে জনগণের আস্থাও বাড়বে না। অর্থনীতির চাকাও গতিশীল হবে না। তাই ব্যাংকিং সেক্টরও একই সাথে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন অপরিহার্য।


কমেন্ট বক্স
notebook

চুয়াডাঙ্গায় টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ প্রাণিকূল, হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ