হাশেম রেজার চাঁদাবাজী মামলা : মুসল্লিদের নিন্দা
- আপলোড তারিখঃ ০৬-০২-২০১৮ ইং
মসজিদের অনুদান চাওয়াকে কেন্দ্র করে সভাপতিসহ ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে
দর্শনা অফিস: দর্শনার ঘুঘুডাঙ্গা মসজিদের উন্নয়নে অনুদান চাওয়ায় মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা করেছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-সম্পাদক হাশেম রেজা। গত পরশু রোববার দুই লাখ টাকা দাবির অভিযোগ তুলে হাশেম রেজার পক্ষে মামলাটি করা হয়। এ ঘটনায় দর্শনা ঘুঘুডাঙ্গা মসজিদের মুসল্লিরা নিন্দা জানিয়েছেন।
দর্শনা সরকারী কলেজের উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমান জানান, গত ৫/৬ মাস আগে প্রফেসর আব্দুল মালেকের দাফন সম্পন্ন করে আমিসহ আমার ঘুঘুডাঙ্গার ৭/৮জন ফিরছিলাম। পথের মধ্যে হাশেম রেজা তার সাথে দেখা হয়। এসময় হাশেম রেজা আমাকে সালম করে এবং অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আলোচনার একপর্যায় হাশেম রেজা বলেন, সার আমার যদি কোন সহযোগিতা লাগে আমাকে বলবেন। এসময় আমি তাকে আমার পাড়ার একটি মসজিদ আছে অত্যন্ত অবহেলিত, তুমিতো অনেক সাহায্য করো, আমাদের মসজিদের কিছু সহযোগিতা দিও। তখন সে বলে- ঠিক আছে আপনি মসজিদের লোকজন পাঠিয়ে দিয়েন। এমনি কথা হয়। এরপর মসজিদের সভাপতি সেলিম উদ্দিন ও কমিটির লোকজন প্রায় প্রায় হাশেম রেজার কাছে যায় এবং ফিরে আসে। এরপর কি হয়েছে জানিনা।
এ বিষয়ে সেলিম উদ্দিন বলেন, দাফন শেষে আমি আজিজ স্যার, তক্কেল, ফিন্টুসহ ৭/৮জন ফিরছিলাম। এসময় হাশেম রেজা তার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। এসময় আজিজ স্যারকে দেখে হাশেম রেজা ডেকে সালাম করে বলে, সার আমার কোন সহযোগিতা লাগলে বলবেন। আমি সহযোগিতা করবো। তখন স্যার আমাদের ঘুঘুডাঙ্গা মসজিদের জন্য সযোগিতা করার জন্য বলেন। তখন হাশেম রেজা বলে, এবার ঢাকা থেকে আসলে মসজিদের লোক পাঠিয়েন আমি সহযোগিতা করবো। তারপর থেকে আমি কয়েকবার হাশেম রেজার বাড়িতে বিশেষ করে ছুটি ডাক্তার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিন্টুসহ ৩/৪জন তার বাড়ি কয়েক দফায় গেলেও ফিরে আসতে হয়। একবার বলে আপনাদের মোবাইল নং দিয়ে যান আমি অনুদান পাঠিয়ে দেব। আর একবার গেলে বলে আমিতো নগদ টাকা দিই না। রড সিমেন্ট দেব। তখন আমরা বলি তাই দিয়েন। এরপর গত ১/২/২০১৮ তারিখে ছুটি ডাক্তার ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনিকে নিয়ে সকাল ১০টার দিকে তার বাড়িতে দু-তলায় গিয়ে দেখা করি। তখন হাশেম রেজা বলে আমি রড আর সিমেন্ট দেব। তখন আমরা চলে আসি। গত ৪/২/২০১৮ তারিখ চায়ের দোকানে বসে বলেছিলাম হাশেম একটা ফালতু লোক আমাদের এভাবে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। দিলে দেবে না দিলে বলে দেবে ‘আমি মসজিদের অনুদান দিতে পারবো না’। এঘটনা হয়তো চায়ের দোকানে বসে থাকা হাশেম রেজার ড্রাইভার হাশেম রেজাকে বলে দেয়। এরপর হাশেম রেজা আমাকে মোবাইল ফোনে গালি-গালাজ করে। এসময় আমার সাথে কথা কাটাকাটি হয় এবং সে বলে আমার কাছে চাঁদা চেয়েছিস আমি তোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে কাষ্টডিতে নেব। বেলা ২টার সময় আমি আনন্দবাজার মোহাম্মদ আলীর পান দোকানের সামনে ছিলাম। আমি মোবাইলে যা বলেছি আনন্দবাজারের সবাই জানে। এরপর বিকাল ৪টার দিকে কার্পাসডাঙ্গার এসআই আসাদ বলে ‘আপনার নামে একটা চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে। আমি তাকে সরেজমিনে দেখে তদন্ত করে যা খুশি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলি। এরপর আমি জেলা সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, টগর ভাইসহ আমার সকল নেতাকর্মীকে ঘটনাটি জানায়। এছাড়া শনিবার বেলা ১টার দিকে কেরু ফরেন লিকারের এজেন্ট হয়ে খুলনায় যায় এবং রাত ৮টায় খুলনা থেকে ট্রাক ছেড়ে রাত ২টার সময় দর্শনায় আসি। তাহলে কখন তার বাড়িতে ৭/৮ জন চাঁদা চাইতে গেলাম বলেন।
এ বিষয়ে ফিন্টু বলেন, আমি সাধারণ সম্পাদক পদে নেই। ৫/৬ মাস আগে মসজিদের সভাপতি সেলিম উদ্দিনের সাথে গিয়েছিলাম। তখন হাশেম রেজা বলেন, আমি দেবনি। আমার ম্যানেজারের কাছে মোবাইল নম্বর দিয়ে যান। এরপর কি হয়েছে জানি না।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ তুলে মধু বাদী হয়ে মামলা করেছে। তদন্ত করে যেটা সত্য সেটাই রির্পোট দেব। মামলা নং-১০ তারিখ ৪/২/২০১৮।
এ বিষয় হাশেম রেজার কাছে ঘটনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে বিশাল গালিগালজ করেছে। আমার মা বাবা তুলে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ দিয়েছে। সে জোর করে আমার কাছে টাকা চাই। এ অধিকার তাকে কে দিয়েছে। চাঁদাবাজীর মামলা হয়েছে, সে জেল খাটবে। এভাবে মানুষের মারাত্মক খারাপ ব্যবহার করেছে, আমার ২২ বছরে আমি এতো খারাপ ভাষ শুনিনি। মসজিদের ইস্যু ঠিক আছে। তবে সে এভাবে আমার কাছে টাকা চেতে পারে না। আমি জর্দ্দার ট্রের্ডাস থেকে সিমেন্ট পাঠানোর কথা বলেছি। এ ঘটনার পর আর পাঠায়নি। আমি রাজনীতি করি। সব কিছু মনে থাকে না। তাছাড়া কেন্দ্রে মন্ত্রীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে নানা ব্যস্ততার মধ্যে রয়েছি। তিনি বলেন- আপনারা তো জানেন আমি চুয়াডাঙ্গা-২ আসন এলাকার বিভিন্ন মসজিদ মন্দিরে আমার সাধ্যমত সহযোগিতা করে আসছি। এরপরও এ ব্যবহার আমাকে মর্মাহত করেছে।
কমেন্ট বক্স