বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

কেরুজ শ্রমিক নেতা তৈয়ব আলীর খামখেয়ালি, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি

ওয়ার্কশপে হাজিরা নেই, কাজ নেই, আছে প্রভাব
  • আপলোড তারিখঃ ০৪-০৬-২০২৫ ইং
কেরুজ শ্রমিক নেতা তৈয়ব আলীর খামখেয়ালি, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি

দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ওয়ার্কশপে কর্মরত ফিটার ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে কর্মস্থলে ফাঁকি দিয়ে ইচ্ছেমতো চলাফেরার অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিক নেতা পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে তিনি দিনের পর দিন এমন আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কর্মস্থলের একাধিক শ্রমিক। অভিযোগের বিষয়ে গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেরুজ ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা যায়, তৈয়ব আলীসহ বেশ কয়েকজন কর্মস্থলে অনুপস্থিত। হাজিরা খাতাও ছিল ফাঁকা। গণমাধ্যমকর্মীরা খাতার ছবি তুলতে গেলে ফোরম্যান শওকত আলী ক্ষিপ্ত হয়ে খাতা কেড়ে নেন। তৈয়ব আলীর পক্ষ নিয়ে বলেন, ‘ফ্যাক্টরি ম্যানেজারের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছে।’


পরিস্থিতি স্পষ্ট করতে গণমাধ্যমকর্মীরা ফ্যাক্টরি ম্যানেজারের কাছে গেলে তিনি জানান, ‘বিষয়টি টাইম অফিস জানে।’ পরে টাইম অফিসে গেলে কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমাদের কাছে ছুটির দরখাস্ত থাকে না। ছুটির বিষয়ে এমডি বলতে পারবেন।’ তৈয়ব আলী ছুটি নিয়েছেন কি না জানতে চাওয়া হয় কেরুজ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে। এক ঘণ্টা পর দুপুর ১২টা ৪৪ মিনিটে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাংবাদিক আওয়াল হোসেনকে জানান, ‘আপনি আসেন, আমার কাছে দুটি দরখাস্ত আছে।’ প্রশ্ন উঠেছে, এই এক ঘণ্টার ব্যবধানে কি দরখাস্ত লেখা হয়েছে? তাহলে কি প্রভাব খাটিয়ে এসব কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছে? শ্রমিক নেতার মুখোশ পরে কেরুজে এমন অনেকেই বছরের পর বছর ধরে চাকরি করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক বলেন, ‘তৈয়ব আলী একজন নিম্ন মানের নেতা। যিনি ম্যানেজমেন্টের দালালি করেন, তিনি শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করবেন কীভাবে। এসব নেতা আমাদের অধিকার আদায়ে নয়, বরং বাধা হয়ে দাঁড়ান।’ যে নেতা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও দালালি করে, তিনি শ্রমিকের শত্রু ছাড়া কিছুই নন।’


কেরুজের রেকর্ড ঘেটে জানা যায়, তৈয়ব আলী অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট দিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি মৌসুমী শ্রমিক হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। অথচ তার এসএসসি ও প্রকৃত বয়স গোপন করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কেরুজ ওয়ার্কশপে ফিটার পদে কর্মরত। এ প্রসঙ্গে অপর একজন শ্রমিক বলেন, ‘যে নেতা নিজেই কাজ ফাঁকি দেয়, তার কাছ থেকে অন্য শ্রমিক কী শিখবে? এমন লোক কখনও সৎ হতে পারে না।’


ফোরম্যান শওকত আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি শ্রমিকদের কাজেই গেছেন।’ আবার বলেন, ‘ছুটি নিয়ে বাইরে গেছেন।’ তার বক্তব্যে বারবার অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। প্রশ্ন উঠেছে, শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করলেই কি তৈয়ব আলীর কাজ শেষ? ওয়ার্কশপে ফিটার পদে তার নিয়মিত উপস্থিতি ও কাজ নিয়ে শ্রমিক মহলে রয়েছে নানামুখী প্রশ্ন। তৈয়ব আলীর সন্ধানে সাংবাদিকরা গত দুই দিনে ছয়বার তার মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি। কর্মস্থলেও গেলেও তার দপ্তর ফাঁকা পাওয়া যায়।



কমেন্ট বক্স
notebook

বিপজ্জনক আগামী ২৪ ঘণ্টা