ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী-বিএসএফের গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশির পরিবারে আহাজারি কমেনি। দিনের পর দিন পরিবার দুটি লাশের জন্য অপেক্ষা করলেও ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ নিহত দুই যুবকের লাশ ফেরত দেয়নি। স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম জানান, গত ৮ এপ্রিল বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ওয়াসিম ভারতে প্রবেশ করে। ঘটনার দিন ভারতের হাবাসপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যদের তাকে ধরে হত্যা করে ইছামতি নদীতে লাশ ফেলে দেয়। ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় নদীতে লাশ ভেসে ওঠে। মরদেহটি ভারতের অংশে থাকায় বিএসএফ রাতে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় মরদেহটি।
ওয়াসিমের বড় ভাই মেহেদী হাসান বলেন, ছবিতে নিশ্চিত হওয়ার পর বিজিবিকে জানাই এবং বিজিবি ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ওয়াসিমের লাশ ৫৩ দিনেও পিরে পায়নি। ওয়াসিমের মা ফিরোজা খাতুন জাানন, পাসপোর্ট-ভিসা করে ভারতে গিয়ে মরদেহ আনতে বলেছে বিএসএফ। কিন্তু তারা তো গরিব মানুষ। এতো টাকা খরচ করে কীভাবে মরদেহ আনবো?
এদিকে গত ২৭ এপ্রিল রাতে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে ওবাইদুর রহমান। ঢাকায় গাড়ি চালানো ওবাইদুর ঘটনার দিন রাতে কয়েক বন্ধুর সঙ্গে অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারতের মধুপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে অন্যরা পালিয়ে বাঁচলেও ধরা পড়েন ওবাইদুর। বিএসএফের হাতে আটকের পর গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। ৩৭ দিন পার হলেও তার লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ।
ওবাইদুরের মা নাসিমা খাতুন বলেন, ছেলের লাশ ফিরে পেলে তাকে দাফন করে অন্তত মনকে বোঝাতে পারতাম যে সে আমার কাছেই আছে। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে, কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, বিএসএফ তাদের জানিয়েছে ওয়াসিমের মরদেহটি ভারতের পুলিশের কাছে আছে। তারা তার মরদেহটির ময়নাতদন্ত করেছে। ভারতীয় পুলিশের ভাষ্য, মরদেহ নিতে হলে বৈধভাবে ভারতীয় পুলিশের কাছে উপযুক্ত প্রমাণ ও শনাক্ত শেষে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এনওসি নিতে হবে। পরে তাদের ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে গিয়ে যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করতে হবে। এই বিষয়গুলো ওই দুই পরিবারকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওয়াসিমের মরদেহ আনতে তার পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার বসা হয়েছে। তারা কোনো লিখিত দিতে চান না। তবে ওবাইদুরের মরদেহ ফেরত পাওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় অনেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।