বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

জীবননগরে সরকারি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনে মানহীন নকল পাইপ ব্যবহার

জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে অনিয়ম!
  • আপলোড তারিখঃ ০৪-০৬-২০২৫ ইং
জীবননগরে সরকারি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনে মানহীন নকল পাইপ ব্যবহার

২০২৩-২৪ অর্থবছরে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় ৬৮টি ডিপ টিউবওয়েল বসানোর কাজ পায় আরশাফুল ইসলামের মালিকানাধীন আড়াই হাজার ইন্টারন্যাশনাল নামের এক ঠিকাদারি কোম্পানি। কাজ শুরু থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলা জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলামকে ম্যানেজ করে অনিয়মন করছিলেন আরশাফুল। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট তার কাজের সহযোগী হান্নান নামের একজন গা-ঢাকা দিলে বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিল কাজ। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর ফের চুয়াডাঙ্গা জেলা জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলামের সহযোগিতায় বাতেন নামের এক মিস্ত্রিকে দিয়ে ডিপ টিউবওয়েল বসাচ্ছেন আরশাফুল। তবে এবার করছেন আরও বেশি অনিয়ম।


গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, জীবননরগ উপজেলার বকুন্ডিয়া স্কুলের পাশের একটি বাড়িতে ডিপ টিউবওয়েল বসাচ্ছেন কয়েকজন শ্রমিক। সেখানে ন্যাশনাল পলিমারের লোগো সম্বলিত ৪ ও দেড় ইঞ্চি ক্লাস ডি লেখা পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সেগুলো দেখে সন্দেহ হলে ন্যাশনাল পলিমার কোম্পানির অফিসে জানানো হয়। ন্যাশনাল পলিমার কোম্পানির প্রতিনিধিরা সরেজমিনে তদন্তের পর জানান, পাইপগুলো তাদের কোম্পানির নয়। তাদের লোগো ব্যবহার করে এগুলো বানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের কোম্পানি থেকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারণ তাদের কোম্পানির লোগো ব্যবহার করে নকল পাইপ বানানো হয়েছে। এতে তাদের কোম্পানির সুনাম নষ্ট হচ্ছে।


এ বিষয়ে ন্যাশনাল পলিমার কোম্পানির প্রতিনিধি মো. শাহিন হোসাইন বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে যে পাইপগুলো রয়েছে, সবই নকল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন স্যারদের জানিয়েছি। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।’ এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে কাজ করা একজন শ্রমিক বলেন, ‘আমরা টাকার বিনিময়ে কাজ করি। আমরা প্রতিবাদ করলে কেউ আমাদের কাজে নেবে না। আমরা এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারব না।’ তবে পাইপগুলো ক্লাস ডি নয় বলে তারা স্বীকার করেন।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে জীবননগর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. খালেদুজ্জামান বলেন, ‘আমি এখানে এক মাস মতো আগে যোগদান করেছি। অভিযোগ আসার পর কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’ এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার আরশাফুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি দাবি করেন সবই ঠিক আছে। পাইপগুলো কোম্পানির কাছ থেকেই নেওয়া হয়েছে। তবে ন্যাশনাল পলিমার কোম্পানির প্রতিনিধিরা পাইপগুলো নকল জানানোর পর থেকে ফোন ধরছেন না আরশাফুল ইসলাম। তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও তিনি আর রিপ্লে দেননি।


এদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। দুপুরে ফোনে তিনি দাবি করেন, সবই ঠিক আছে। তার কাছে ল্যাব টেস্টের রির্পোট আছে। কাজে কোনো অনিয়মন হচ্ছে না। নরমাল পাইপ ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। সবকিছু তারা দেখে নিয়েছেন। তবে বিকেলে ন্যাশনাল পলিমার কোম্পানির প্রতিনিধিরা পাইপগুলো নকল জানানোর পর থেকে ফোন ধরছেন না নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিনুল। ন্যাশনাল পলিমার কোম্পানির বিষয়টি জানতে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও তিনি রিপ্লে দেননি।


এদিকে বিষয়টি নিয়ে গতকাল চুয়াডাঙ্গায় আমিনুল ইসলামের অফিসে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া তিনি কথা বলতে পারবেন না। তার সঙ্গে কথা বলতে হলে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আসতে হবে।



কমেন্ট বক্স
notebook

বিপজ্জনক আগামী ২৪ ঘণ্টা