বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটি উপকূলে আঘাত হানার পর চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এছাড়া ১৪টি জেলার ২ থেকে ৪ ফুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে দেশের অন্তত ৬টি জেলায় বন্যার সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গভীর নিম্নচাপের কারণে দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে চুয়াডাঙ্গার জনমানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে।
বৃহস্পতিবার জীবননগর উপজেলার শিয়ালমারি পশুর হাটে গরু কিনতে আসা ক্রেতারা বলেন, বৃষ্টির কারণে হাটে অনেক কাদা। মানুষের খুবই দুর্ভোগ হচ্ছে। ওমর ফারুক নামের আরেকজন বলেন, বৃষ্টির মধ্যে হাটের মধ্যে যাওয়ায় কষ্ট। কাদায় যে অবস্থা। সব শেষ।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম করে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হওয়ার কথা। অতিক্রম করার সময়ে নিম্নচাপটি অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। এমনতিতে রাজধানী ঢাকাতে সকাল থেকে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, গভীর নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীতে মোট ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ শুক্রবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হলেও থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটারে পর্যন্ত বাড়ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
১৪ জেলায় ২ থেকে ৪ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা :
বিশেষ এ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ২ থেকে ৪ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।